নির্বাচন কমিশনে কী হয়েছিল তা নিয়ে ভিন্ন দাবি রুমিন ফারহানা ও এনসিপির

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২৪ আগস্ট ২০২৫, ০৫:৫৬ পিএম

নির্বাচন কমিশনে হাতাহাতির ঘটনার পর সাংবাদিকদের সামনে বক্তব্য রাখেন বিএনপি নেত্রী রুমিন ফারহানা। ছবি: সংগৃহীত
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে সংসদীয় আসনের সীমানা পুনর্নির্ধারণের আবেদনের শুনানি শুরু করেছিল নির্বাচন কমিশন (ইসি)। তবে রোববার (২৪ আগস্টচ) প্রথম দিনেই নির্বাচন ভবনে ধাক্কাধাক্কি-হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে। সেখানে কী ঘটেছিল–এ নিয়ে আলাদা অভিযোগ ও ভিন্ন বর্ণনা দিয়েছেন বিএনপির নেত্রী রুমিন ফারহানা এবং এনসিপির নেতা আতাউল্লাহ।
নির্বাচন কমিশনে উপস্থিত সাংবাদিকদের সামনে এনসিপি নেতা আতাউল্লাহ দাবি করেন, সীমানা পরিবর্তনের কারণে ব্রাক্ষণবাড়িয়ার বিজয়নগরের মানুষ প্রতিদিনই আন্দোলন করছে। তবে বারবার তাকে হুমকি দেয়া হচ্ছে-এ নিয়ে যাতে ইসির শুনানিতে অংশ না নেন।
তিনি বলেন, রুমিন ফারহানা ও তারা গুন্ডাপান্ডারা বিভিন্ন সময় আমাকে ফোনে এবং বিভিন্ন লোক দিয়ে বলছে এখান থেকে সরে যেতে। এদিনও এখানে যখন আসি আমাকে পেছন থেকে টেনে বের করে দেয়ার চেষ্টা করছে। একপর্যায়ে প্রবেশ করি। আমি যখন শুনানিতে দাঁড়াই, রুমিন ফারহানা আমাকে প্রথমে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়। কথা বলতে দেয় নাই। তার যে গুন্ডাপান্ডা ছিল তারা আমাকে পায়ের নিচে ফেলে পিষ্ট করে, নির্মমভাবে মারধর করে।
এনসিপির নেতার অভিযোগের বিষয়ে সাংবাদিকরা জানতে চাইলে নির্বাচন কমিশনে উপস্থিত রুমিন ফারহানা বলেন, মুশকিলের বিষয় হচ্ছে আতাউল্লাহ পরিচিত মুখ নন। তিনি এনসিপি থেকে এসেছেন, না জামায়াত থেকে এসেছেন, আমি জানি না। তবে উনি প্রথম, পাঞ্জাবি পরা একজন আমাকে ধাক্কা দিয়েছেন। তারপর আমার লোকজন তো বসে থাকবে না। আমি তো একজন মহিলা। পরে যখন আমার লোকজনকে মারধর করেছে, আমার লোকজনও জবাব দিয়েছে। সিম্পল।
রুমিন ফারহানা এই ঘটনার জন্য উল্টো নিজের দলের নেতাকর্মীদেরই দায়ী করেন। তিনি বলেন, যেটা ১৫ বছরে হয় নাই সেটা আজকে হয়েছে। অলমোস্ট আমার গায়ে ধাক্কা দিয়ে আমাকে ফেলে দেয়ার চেষ্টা হয়েছে। যেই বিএনপির নেতা-কর্মীদের জন্য গত ১৫ বছর লড়াই করলাম তারা আমাকে এখন ধাক্কা দেয়। তো ঠিক আছে ধাক্কার বদলে তো ধাক্কা আসবে, তাই না? সেটাই হয়েছে।
নির্বাচনের আগে একটা সীমানা নিয়ে যদি এরকম আচরণ ‘নিজ দলের মধ্যে’ হয়; তাহলে নির্বাচনে কী হবে-এমন সংশয় প্রকাশ করেন রুমিন ফারহানা। জাতীয় নাগরিক পার্টির দক্ষিনাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ অভিযোগ করেন, বিএনপির পৃষ্ঠপোষকতায় গুন্ডাপান্ডারা কীভাবে জাতীয় নির্বাচনের সময় ভোটকেন্দ্র দখল করবে তার টেস্ট ম্যাচ আজকে হয়েছে। পুলিশ ও নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি।
নির্বাচন কমিশনে দাঁড়িয়ে সাংবাদিকদের সামনে হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, বাংলাদেশ যেটির সাক্ষী হয়েছে সেটি মূলত আগামী নির্বাচন কেমন হতে পারে এবং নির্বাচনে কমিশন কী ভূমিকা পালন করবে সেটির আজকে প্রমাণ হয়ে গেছে। আপনারা দেখেছেন কীভাবে বিএনপির একজন নেত্রী বলছেন- 'আমরা চাইলে আজকে এখানে গুন্ডা নিয়ে আসতে পারতাম'। অর্থাৎ গুন্ডার পৃষ্ঠপোষকতা ওনারা দিয়ে আসছেন।
তিনি আরও বলেন, আমরা দেখেছি নির্বাচন কমিশনের বাইরে লাঠিসোঁটা নিয়ে মহড়া দিচ্ছে। প্রধান নির্বাচন কমিশনের অফিসের যদি এই অবস্থা হয়, সারা বাংলাদেশে এই বিএনপির যারা রয়েছে এই গুন্ডাদের যারা পৃষ্ঠপোষকতা দিচ্ছে তারা কিভাবে ভোট কেন্দ্র দখল করবে সেটির আজকে টেস্ট ম্যাচ হয়ে গেছে।