জিয়াউল আহসানকে কসাই কারাদজিচের সঙ্গে তুলনা তাজুল ইসলামের

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ২০ নভেম্বর ২০২৪, ০৭:১৫ পিএম

জিয়াউল আহসান-তাজুল ইসলাম
ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টারের (এনটিএমসি) সাবেক মহাপরিচালক জিয়াউল আহসানকে বসনিয়া-হার্জেগোভিনার ‘কসাই’ রাদোভান কারাদজিচের সঙ্গে তুলনা করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। বুধবার (২০ নভেম্বর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের শুনানিতে এই তুলনা করেন চিফ প্রসিকিউটর।
পরে সাংবাদিকদের মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম বলেন, জিয়াউল আহসান বিভিন্ন সময় র্যাবের বিভিন্ন পদে ছিলেন, সর্বশেষ তিনি এনটিএমসির মহাপরিচালক ছিলেন। তিনি বাংলাদেশে গুম, গুমের জন্য ধরে নিয়ে গিয়ে পৈশাচিক নির্যাতন, হত্যার পর লাশ ডিসপোজাল করা, এসব কালচারের জনক ছিলেন। আওয়ামী লীগ সরকারের সময় যারা বিরোধী দলে থেকে বিভিন্ন সময় কথা বলার চেষ্টা করেছেন তাদের তিনি একের পর এক পরিকল্পিতভাবে অপহরণ করেছেন, গুম করেছেন, বছরের পর বছর আটকে রেখেছেন। তাদের মধ্যে বহু মানুষ আজও ফিরে আসেননি।
তাজুল ইসলাম বলেন, জিয়াউল আহসানের নেতৃত্বে বিএনপি নেতা ইলিয়াসকে গুম করে হত্যা করা হয় বলে আমরা জানতে পেরেছি। এ ছাড়া নাম না জানা অনেক মানুষকে অপহরণের পর নির্যাতন করা হয়েছে। তার পৈশাচিকতা। ৯০-এর দশকে বসনিয়া-হার্জেগোভিনায় সার্ব বাহিনী যে গণহত্যা চালিয়েছিল, যে ধরনের অত্যাচার করেছিল, তার সঙ্গে আমরা তুলনা করেছি। বলকানের কসাইয়ের মতো বাংলাদেশের কসাই হিসেবে এই জিয়াউল আহসান হত্যাকাণ্ড থেকে শুরু করে, গুম নির্যাতনের সব ঘটনার সঙ্গে জড়িত ছিলেন।
রাদোভান কারাদজিচ সাবেক বসনীয় সার্ব নেতা। বলকান অঞ্চলের হাজার হাজার নিরপরাধ মুসলিমকে গণহত্যার নির্দেশদাতা হিসেবে ‘বসনিয়ার কসাই’ নামে পরিচিত তিনি। বসনিয়ার স্রেব্রেনিৎসা শহরে আট হাজার মুসলিম পুরুষ এবং বালককে হত্যার ঘটনার জন্য তাকে দায়ী করা হয়। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ শুনানিতে দ্য হেগের আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনালের বিচারক বলেন, কারাদজিচের তত্ত্বাবধানেই কার্যত এই শহরের মুসলিমদের ধ্বংস করার একক নীতি বাস্তবায়ন করা হচ্ছিল।
এদিকে জুলাই-আগস্টের গণহত্যার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় সাবেক পুলিশ প্রধান ও ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টারের (এনটিএমসি) সাবেক মহাপরিচালকসহ আট কর্মকর্তার বিরুদ্ধে এক মাসের মধ্যে তদন্ত শেষ করতে নির্দেশ দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল। একইসঙ্গে তাদের ট্রাইব্যুনালের মামলায় কারাগারে রাখতে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
এই মামলার পরবর্তী শুনানির জন্য আগামী ১৯ ডিসেম্বর দিন ধার্য করা হয়েছে। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল এই আদেশ দেন। আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। এর আগে জুলাই-আগস্টের গণহত্যার ঘটনায় আট কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।