×

জাতীয়

এফ সেভেন-বিজিআই যুদ্ধবিমানের নিরাপত্তা নিয়ে বিশ্বজুড়ে প্রশ্ন

Icon

কাগজ ডেস্ক

প্রকাশ: ২২ জুলাই ২০২৫, ১০:১২ এএম

এফ সেভেন-বিজিআই যুদ্ধবিমানের নিরাপত্তা নিয়ে বিশ্বজুড়ে প্রশ্ন

বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর এফ সেভেন–বিজিআই যুদ্ধবিমান। ছবি : সংগৃহীত

ঢাকার উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর এফ সেভেন–বিজিআই যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় পুরো দেশে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। একই সঙ্গে নতুন করে প্রশ্ন উঠেছে বহুল ব্যবহৃত এই যুদ্ধবিমানের কার্যকারিতা ও নিরাপত্তা নিয়ে—যা শুধু বাংলাদেশ নয়, বিশ্বজুড়েই আলোচিত বিষয়।

চীনা প্রযুক্তিতে নির্মিত হলেও মূলত ১৯৫০ এর দশকের সোভিয়েত মিগ–২১ এর ডিজাইনকে ভিত্তি করে তৈরি এফ সেভেন সিরিজ। বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর বহরে এফ সেভেন–বিজিআই প্রথম যুক্ত হয় ২০১৩ সালে। এরপর ২০২২ সালে দ্বিতীয় দফায় আরো কয়েকটি বিজিআই সংস্করণ সংগ্রহ করা হয়।

অ্যাভিয়েশন বিশেষজ্ঞদের মতে, এফ সেভেন–বিজিআই সংস্করণটিকে ‘উন্নত’ বলা হলেও এটি মূলত পুরোনো ফ্রেমের ওপর আধুনিক প্রযুক্তির জোড়াতালি মাত্র। নতুন অ্যাভিওনিক্স, ডিজিটাল ককপিট আর ডে–নাইট কমব্যাট সক্ষমতা থাকলেও পুরোনো কাঠামো ও সিস্টেমের সীমাবদ্ধতা দূর করা সম্ভব হয়নি বলেই মনে করেন তারা।

উত্তরায় ভয়াবহ দুর্ঘটনার পর দেশ–বিদেশের গণমাধ্যম ও পর্যবেক্ষকরা প্রশ্ন তুলেছেন—এরকম দুর্ঘটনা কি এই প্রথম? তথ্য বলছে, এফ সেভেন সিরিজের যুদ্ধবিমান বহু দেশেই একের পর এক দুর্ঘটনার শিকার হয়েছে।

আরো পড়ুন : বিমান বিধ্বস্তে নিহত ২৭ জনের মধ্যে ২৫ জনই শিশু

বাংলাদেশেই একের পর এক দুর্ঘটনা

২০০৮ সালে টাঙ্গাইলে একটি এফ সেভেন–এমবি ভেঙে পড়ে, পাইলট নিহত হন।

২০১৫ সালে বঙ্গোপসাগরে নিখোঁজ হয় একটি এফ সেভেন।

২০১৮ সালে একটি এফ সেভেন–বিজি বিধ্বস্ত হয়ে প্রাণ হারান এক স্কোয়াড্রন লিডার।

সর্বশেষ সোমবারের (২১ জুলাই) ভয়াবহ দুর্ঘটনায় প্রাণ গেছে স্কুলের বহু শিশু ও কয়েকজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের।

দেশের বাইরে একই পরিণতি

পাকিস্তান: ২০১৫ সালে এফটি–সেভেন পিজি প্রশিক্ষণ বিমানে দুর্ঘটনায় মারা যান পাকিস্তানের প্রথম নারী ফাইটার পাইলট মারিয়াম মুখতিয়ার। ২০২০ সালে আরো একটি এফ সেভেন বিধ্বস্ত হয়ে প্রাণ হারান দুজন পাইলট ও পাঁচজন গ্রামবাসী।

চীন: এফ সেভেন এর মূল সংস্করণ জে–সেভেন নামে পরিচিত। ২০১০, ২০১১ ও ২০১২ সালে চীনে একের পর এক জে–সেভেন বিধ্বস্ত হয়। একটি বিমানের ধ্বংসাবশেষ আবাসিক ভবনের উপর পড়ে বহু সাধারণ মানুষ হতাহত হন। ২০২২ সালে হুবেই প্রদেশে আরেকটি জে–সেভেন বিধ্বস্ত হয়ে বেসামরিক প্রাণহানি ঘটে।

মিয়ানমার: ২০১৮ সালে একদিনেই দুইটি এফ সেভেন–এম দুর্ঘটনায় পড়ে; প্রাণ হারান দুই পাইলট ও একজন বেসামরিক নাগরিক।

ইরান: ২০২২ সালে বিধ্বস্ত হয় একটি এফ সেভেন; দুই পাইলট মারা যান।

জিম্বাবুয়ে: ২০২৫ সালে জে–সেভেন আইআইএন বিধ্বস্ত হয়ে প্রাণ হারান দেশটির পাইলট।

বিশ্লেষকরা বলছেন, এফ সেভেন সিরিজের প্ল্যাটফর্মটি এমন এক যুগের নকশা যেখানে কেবল গতিকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছিল, মাল্টিরোল সক্ষমতা বা দীর্ঘমেয়াদি নিরাপদ অপারেশনাল পারফরম্যান্স নয়। ফলে আধুনিক যুদ্ধক্ষেত্রের চাহিদা মেটাতে গিয়ে বারবার সীমাবদ্ধতা ও দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে এই বিমান।

তারা আরো বলছেন, যুদ্ধবিমান আধুনিকীকরণে শুধু অ্যাভিওনিক্স বা অস্ত্র ব্যবস্থা নয়, পুরো প্ল্যাটফর্মের নকশা ও কাঠামোর উন্নয়ন জরুরি। পুরোনো কাঠামোর ওপর নতুন প্রযুক্তি বসিয়ে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব নয়।

উত্তরার মর্মান্তিক দুর্ঘটনা সেই প্রশ্নগুলোকে আরো স্পষ্টভাবে সামনে এনেছে—এফ সেভেন–বিজিআই আদৌ নিরাপদ কি না, আর এটি বাংলাদেশসহ অন্যান্য দেশের আকাশ প্রতিরক্ষায় কতটা কার্যকর।


সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সচিবালয় এলাকায় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, লাঠিচার্জ, সাউন্ড গ্রেনেড ও টিয়ারশেল

সচিবালয় এলাকায় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, লাঠিচার্জ, সাউন্ড গ্রেনেড ও টিয়ারশেল

শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের মুখে শিক্ষা সচিব প্রত্যাহার: তথ্য উপদেষ্টা

শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের মুখে শিক্ষা সচিব প্রত্যাহার: তথ্য উপদেষ্টা

উত্তরায় বিমান দুর্ঘটনায় নিহতের সংখ্যা নিয়ে যা বললেন প্রত্যক্ষদর্শীরা

উত্তরায় বিমান দুর্ঘটনায় নিহতের সংখ্যা নিয়ে যা বললেন প্রত্যক্ষদর্শীরা

বিমান দুর্ঘটনায় দগ্ধদের চিকিৎসায় যে পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে

বিমান দুর্ঘটনায় দগ্ধদের চিকিৎসায় যে পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে

সব খবর

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App