মাইলস্টোন ট্রাজেডি: বোনের পর চলে গেল ভাই নাফিও

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ২৩ জুলাই ২০২৫, ০৮:১০ এএম

বাবা-মায়ের সঙ্গে নাজিয়া ও নাফি। তারা দুজন এখন শুধু স্মৃতি। ছবি : সংগৃহীত
রাজধানীর উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমান বাহিনীর যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় একই পরিবারের আরেকটি জীবন নিভে গেল। বোন নাজিয়ার মৃত্যুর পর এবার মৃত্যুবরণ করেছে তার ছোট ভাই নাফি (৯)। সে মাইলস্টোন স্কুলের প্রথম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল।
মঙ্গলবার (২২ জুলাই) দিবাগত রাত সোয়া ১২টার দিকে ঢাকা মেডিকেলের জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করে নাফি।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ইনস্টিটিউটের আবাসিক সার্জন ডা. শাওন বিন রহমান। তিনি জানান, উত্তরা বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় দগ্ধ নাফির শরীরের ৯৫ শতাংশ ফ্লেইম বার্ন হয়েছিল। এতটা দগ্ধ দেহ বাঁচানো আর সম্ভব হয়নি। এর আগে সোমবার রাত তিনটার দিকে তার বোন নাজিয়াও মারা গেছে।
আরো পড়ুন : আহতদের চিকিৎসায় ভারতের সহায়তা প্রস্তাব বাংলাদেশ কী গ্রহণ করবে?
নাজিয়া তৃতীয় শ্রেণিতে আর নাফি প্রথম শ্রেণিতে পড়ত। দুই ভাইবোন থাকত উত্তরার কামারপাড়া এলাকায় বাবা-মায়ের সঙ্গে। এক দিনের ব্যবধানে সন্তান হারিয়ে শোকে পাথর পুরো পরিবার।
জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটে এই দুর্ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১১ জনের মৃত্যু হলো। আর পুরো ঘটনায় মৃতের সংখ্যা আরো বেড়েছে। আহতদের বাঁচাতে বার্ন ইনস্টিটিউটে দিনরাত কাজ করছেন চিকিৎসকরা। তবে অনেকেই এখনও আশঙ্কাজনক অবস্থায় আছেন বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
এর আগে সোমবার দিবাগত রাতে মারা যায় মাইলস্টোনের শিক্ষিকা মাসুকা, আইসিইউতে মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই শেষে চলে যায় ৯ বছরের শিশু বাপ্পি, যার শরীরের ৩৫ শতাংশ দগ্ধ ছিল।
একই রাতে মৃত্যু হয় আরো চার শিক্ষার্থীর। এই চারজনের মধ্যে এরিকসন শরীরের ১০০ শতাংশ, আরিয়ানের শরীরের ৮৫ শতাংশ, নাজিয়ার শরীরের ৯০ শতাংশ এবং সায়ান ইউসুফ এর শরীরের ৯৫ শতাংশ দগ্ধ হয়েছিল।
এর আগে প্রাণ হারিয়েছে অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী তানভীর আহমেদ, সপ্তম শ্রেণির আফনান ফাইয়াজ, প্রাইমারি সেকশনের হেড কো-অর্ডিনেটর মাহেরীন চৌধুরী এবং ষষ্ঠ শ্রেণির আব্দুল্লাহ সামিন।
মাইলস্টোন ট্রাজেডিতে শিশুদের পরপর মৃত্যুতে উত্তরার কামারপাড়া, দিয়াবাড়ি এলাকা ও আশেপাশে শোকের ছায়া আরো গভীর হয়েছে।
এ ঘটনায় হাইকোর্ট বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন ও ক্ষতিপূরণের রুল জারি করেছেন। নিহত ও আহত শিক্ষার্থী পরিবারগুলোর জন্য দ্রুত সহায়তা ও দোষীদের বিচারের দাবি করছে সবাই।