×

জাতীয়

প্রশ্ন উঠেছে, সেখানে কী ভূমিকা রাখবেন তারা

জাতিসংঘ অধিবেশন: রাজনৈতিক নেতারা কেন প্রধান উপদেষ্টার সফরসঙ্গী?

Icon

সেবিকা দেবনাথ

প্রকাশ: ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৫:০১ পিএম

জাতিসংঘ অধিবেশন: রাজনৈতিক নেতারা কেন প্রধান উপদেষ্টার সফরসঙ্গী?

ছবি: সংগৃহীত

জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগ দিতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ঢাকা ছাড়বেন রবিবার (২১ সেপ্টেম্বর)। প্রায় দুই সপ্তাহের যুক্তরাষ্ট্র সফরে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গী হচ্ছেন তিনটি রাজনৈতিক দলের চারজন নেতা। এদিকে প্রায় ৪৫ বছর পর কোনো রাষ্ট্রপ্রধানের সঙ্গে জাতিসংঘ সফরে যাচ্ছেন ক্ষমতার বাইরে থাকা রাজনীতিকরা, যা ঘিরে তৈরি হয়েছে কৌত‚হল। প্রশ্ন উঠেছে, সেখানে কী ভ‚মিকা রাখবেন তারা, আর কেনইবা নির্দিষ্ট তিনটি দলের প্রতিনিধিকেই নিয়ে যাওয়া হচ্ছে? 

গত বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন জানিয়েছিলেন, প্রধান উপদেষ্টার সফরসঙ্গী হচ্ছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা হুমায়ুন কবির, জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের এবং জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্যসচিব আখতার হোসেন। ২২ সেপ্টেম্বর তারা নিউইয়র্কে পৌঁছাবেন। 

শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর) এক অনুষ্ঠানে এ বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, জাতিসংঘের অধিবেশন তিন মাস ধরে চলে, হয়তোবা সরকার ভেবে দেখবে, পরে আবার নতুন কাউকে পাঠাতে হয় কি না।

রাজনৈতিক দলের নেতারা বলছেন, গণঅভ্যুত্থানের পর দেশ গঠনে রাজনৈতিক শক্তি ঐক্যবদ্ধ রয়েছে আন্তর্জাতিক মহলে এমন বার্তা দিতে চায় সরকার। আর এ কারণেই এই সফরে যুক্ত হচ্ছেন তারা। তবে নির্দিষ্ট তিনটি দল থেকে প্রতিনিধি নির্ধারণের এই সিদ্ধান্ত, নির্বাচনের আগে অন্য রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে ভুল বার্তা দিচ্ছে কি না, উঠেছে এমন প্রশ্নও। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও আলোচনা চলছে। এদিকে সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, ভবিষ্যতে দেশ পরিচালনার দায়িত্ব যেহেতু রাজনীতিবিদদের হাতেই থাকবে, এ কারণেই দেশের গুরুত্বপূর্ণ নানা আলোচনায় রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের যুক্ত করা হচ্ছে। আর বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সম্প্রতি এক গণমাধ্যমে দেয়া সাক্ষাৎকারে বলেছেন, প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস একটি নিরপেক্ষতা দেখানোর চেষ্টা করছেন। পাশাপাশি সেখানে তিনি এই রাজনীতি দেখাতে চান, ‘সম্পূর্ণ নিরপেক্ষভাবে কাজটি করছি’। এ ছাড়াও দুটি গুরুত্বপূর্ণ মিটিং আছে। প্রবাসীদের সঙ্গে মিটিং আছে, তিনি সম্ভবত সেখানে চাচ্ছেন আমাদের।

বিএনপির পক্ষ থেকে জানানো হয়, ১৯৮০ সালের আগস্টে যুক্তরাষ্ট্র সফরে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান কয়েকজন রাজনীতিককে সফরসঙ্গী করেছিলেন। কিন্তু কারোর নাম উল্লেখ করতে পারেননি। এ প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, জিয়াউর রহমান সরকারের সময় জাতিসংঘ সফরে গিয়েছিলেন কয়েকজন রাজনীতিক। তাদের নাম আমার এই মুহূর্তে মনে পড়ছে না। এছাড়া খালেদা জিয়ার সঙ্গে দিলীপ বড়ুয়া চীনে গিয়েছিলেন বলে জানান বিএনপির এই নেতা। 

গণতন্ত্র মঞ্চের অন্যতম নেতা, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক মনে করেন, চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি, আগামী নির্বাচন, সেখানে মার্কিন প্রভাবসহ এক ধরনের বোঝাপড়া তৈরি করা যায় কি না, এই নিয়ে সম্ভবত কাজ করছে। তাদের এখানে সামরিক উপস্থিতির বিষয়টিও থাকতে পারে। সাম্প্রতিক কিছু বিষয়ে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে বলেও আমি সরকারের উদ্দেশ্যে বলেছি, তাদের এসব স্পষ্ট করা দরকার।

এদিকে নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্নাও মনে করেন বিষয়টি স্পষ্ট হওয়া দরকার। তিনি বলেন, যদি ধরে নেই, বড় দল হিসেবে বিএনপি ও জামায়াতকে সঙ্গে নিচ্ছেন প্রধান উপদেষ্টা। কিন্তু এনসিপিকে কীভাবে যুক্ত করলেন? 

জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমীর সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের জানান, সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের পাশাপাশি কিছু সেশন আছে যেখানে তারা অংশ নেবেন। এছাড়া বাংলাদেশ কমিউনিটির সাথেও বৈঠক আছে। 

রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সাব্বির আহমেদ অবশ্য মনে করেন, রাজনৈতিক ঐক্য সবার সামনে তুলে ধরার পাশাপাশি এই মুহূর্তে বাংলাদেশে মার্কিন প্রভাবের যে বিষয়টা লক্ষ্য করা যাচ্ছে, সেখানেও রাজনৈতিক দলগুলোকে সঙ্গে রাখতে চাইছেন প্রধান উপদেষ্টা। সম্ভবত তিনি একাই এই ঝুঁকিটা নিতে চাচ্ছেন না। রাজনৈতিক দলকেও তিনি এই ঝুঁকির মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করতে চান, যাতে রাজনৈতিক দলের দিক থেকে এ বিষয়ে কোনো বিরোধিতা না আসে। সেটাও একটা লক্ষ্য থাকতে পারে। 

প্রধান উপদেষ্টার সফরসূচি অনুযায়ী, ২৬ সেপ্টেম্বর সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে ভাষণ দেবেন। প্রধান উপদেষ্টার ২ অক্টোবর দেশে ফেরার কথা রয়েছে। 

প্রসঙ্গত, গত বছর জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৭৯তম অধিবেশনে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে সাইডলাইনে বৈঠক করেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এ বছরে সাইডলাইনে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠক হবে কি না, তা এখনো জানা যায়নি।


টাইমলাইন: অন্তর্বর্তীকালীন সরকার

আরো পড়ুন

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

ডেঙ্গুতে একদিনে সর্বোচ্চ মৃত্যু

ডেঙ্গুতে একদিনে সর্বোচ্চ মৃত্যু

'ব্রেইন ফগ' থেকে মুক্তি পাওয়ার ৪ উপায়

'ব্রেইন ফগ' থেকে মুক্তি পাওয়ার ৪ উপায়

অর্থ আত্মসাত মামলায় হাজিরা দিলেন কলিমউল্লাহ, তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের দিন নির্ধারণ

অর্থ আত্মসাত মামলায় হাজিরা দিলেন কলিমউল্লাহ, তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের দিন নির্ধারণ

হাসিনা-রেহানার বিরুদ্ধে ৩ মামলায় আরও ৯ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ

হাসিনা-রেহানার বিরুদ্ধে ৩ মামলায় আরও ৯ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ

সব খবর

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App