এসবিবিএস আয়োজিত সেমিনারে উদ্বেগ প্রকাশ
ইমিগ্রেশন হোয়াইট পেপার ব্যক্তিগত ও পারিবারিক অধিকার হুমকির মুখে ফেলতে পারে

লন্ডন প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৬ জুন ২০২৫, ০৯:০২ পিএম

ছবি: সংগৃহীত
যুক্তরাজ্য হোম অফিস কর্তৃক সম্প্রতি প্রকাশিত ‘ইমিগ্রেশন হোয়াইট পেপার ২০২৫’-এর প্রস্তাবিত নীতিমালাকে ঘিরে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন ব্রিটিশ বাংলাদেশি আইনজীবী ও বিশেষজ্ঞরা। পূর্ব লন্ডনের এক সেমিনারে তারা মত দেন, এই আইনি পরিবর্তন কার্যকর হলে অভিবাসী কমিউনিটি, ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষা, পরিবার ও মানবাধিকার মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
এই সেমিনারের আয়োজন করে দ্য সোসাইটি অব ব্রিটিশ বাংলাদেশি সলিসিটরস (এসবিবিএস)। এতে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি ও দ্য ল সোসাইটি অব ইংল্যান্ড অ্যান্ড ওয়েলস-এর কাউন্সিল মেম্বার সলিসিটর মুহাম্মদ নুরুল গাফ্ফার। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সুপ্রিম কোর্টের প্রথিতযশা আইনজীবী, কিংস কাউন্সিল ব্যারিস্টার মানজিৎ গিল।
সেমিনারে উদ্বোধনী বক্তব্য রাখেন সম্মানিত বিচারক বেলায়েত হোসাইন। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন দ্য ল সোসাইটি অব ইংল্যান্ড অ্যান্ড ওয়েলস-এর ডেপুটি ভাইস প্রেসিডেন্ট ব্রেট ডিক্সন। সঞ্চালনায় ছিলেন সলিসিটার মুনসাত হাবিব।
প্রস্তাবিত আইনটি কার্যকর হলে অভিবাসী পরিবারগুলো বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়তে পারে এবং বিচার ব্যবস্থার নিরপেক্ষতা ও স্বাধীনতাও প্রশ্নবিদ্ধ হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন বক্তারা। বক্তৃতায় বারবার উঠে আসে হোয়াইট পেপারের নানা অস্পষ্টতা এবং এর মানবিক ও আইনি পরিণতি।
সেমিনারে আরও বক্তব্য রাখেন ব্যারিস্টার মাসুদ চৌধুরী, ব্যারিস্টার শাহ মেজবাউর রহমান, সলিসিটার আব্দুল হালিম, ফজলে এলাহী, সুহেল আহমেদ, ফেরদৌসী কবির প্রমুখ।
বিশেষ আলোচ্য বিষয় ছিল কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এআই-এর আইনি গবেষণায় ব্যবহার। বক্তারা জানান, এআই আইনজীবীদের জন্য একটি সহায়ক মাধ্যম হতে পারে। তবে এর ব্যবহারে সচেতনতা ও নৈতিকতা রক্ষা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। মি. ডিক্সন জানান, গুগলের নোটবুক এলএম-এর মতো প্ল্যাটফর্ম এআই গবেষণাকে নতুন উচ্চতায় নিতে পারে। তবে যাচাইকৃত তথ্যের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত গ্রহণের গুরুত্ব অপরিহার্য।
প্যানেল আলোচনায় একমত হন যে, এআই-এর চ্যালেঞ্জগুলোর উৎস প্রযুক্তির সীমাবদ্ধতা নয়, বরং ব্যবহারকারীর দক্ষতা ও জবাবদিহিতার অভাবই প্রধান সমস্যা। বক্তারা এআই-কে ‘সহায়ক গবেষণা হাতিয়ার’ হিসেবে ব্যবহারের ওপর গুরুত্বারোপ করেন, যাতে তা নৈতিক কাঠামোর মধ্যেই থাকে।
সেমিনারটি আইনজীবীদের জন্য প্রযুক্তি ও পেশাগত নৈতিকতা নিয়ে একটি প্রয়োজনীয় প্ল্যাটফর্ম তৈরি করে দেয়, যা ভবিষ্যতের আইনি চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে। পাশাপাশি এটি ল সোসাইটির স্বচ্ছতা, উদ্ভাবন ও পেশাদারিত্বের প্রতি অঙ্গীকারকে নতুনভাবে তুলে ধরে।