বরখাস্ত এসআইকে গণপিটুনির পর পুলিশে সোপর্দ

রাজশাহী প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৪ আগস্ট ২০২৫, ১২:৫০ পিএম

বরখাস্ত হওয়া পুলিশের এক উপপরিদর্শক (এসআই) মাহবুব হাসান। ছবি : ভোরের কাগজ
রাজশাহীতে বরখাস্ত হওয়া পুলিশের এক উপপরিদর্শক (এসআই) মাহবুব হাসানকে গণপিটুনির পর পুলিশে সোপর্দ করা হয়েছে। শনিবার রাত ১১টার দিকে নগরীর হাজির মোড় এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
পিটুনিতে গুরুতর আহত হয়ে রক্তাক্ত অবস্থায় হাসানকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তার মাথায় জখমের চিহ্ন পাওয়া গেছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, এসআই হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে নিরীহ মানুষকে হয়রানি, ভয় দেখানো ও টাকা আদায়ের মতো অসংখ্য অপকর্ম করেছেন মাহবুব হাসান। এসব অভিযোগে ক্ষুব্ধ হয়ে স্থানীয়রা তাকে আটক করে মারধর করে পুলিশের হাতে তুলে দেন।
আরো পড়ুন : ভারতে অনুপ্রবেশকালে বাংলাদেশি পুলিশ কর্মকর্তা গ্রেফতার
মাহবুব হাসান রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন এবং ২০১৩ সালে এসআই পদে নিয়োগ পান। প্রথমে মতিহার থানায় যোগ দিলেও ২০১৬ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর রাজশাহী মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা শাখায় (ডিবি) যোগ দেন। শুরু থেকেই তার বিরুদ্ধে বেপরোয়া আচরণ, রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ ও সাধারণ মানুষকে দমন–নিপীড়নের অভিযোগ ছিল।
স্থানীয়দের দাবি, তিনি ছাত্রলীগের রাজনীতির প্রভাবে পুলিশে চাকরি পান এবং ডিবিতে থেকে বিএনপি, জামায়াত, ছাত্রদল ও ছাত্রশিবিরের অসংখ্য নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করে নির্যাতন করেছেন।
এছাড়া সাধারণ মানুষের কাছ থেকেও চাঁদাবাজি ও মামলা বাণিজ্যের মাধ্যমে বিপুল অর্থ হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ রয়েছে। সাংবাদিক রাজীব আলী রাতুলও তার শিকার হন বলে অভিযোগ আছে। রাজীবের বাবা মাসুদ রানা হাসানের বিরুদ্ধে মামলা করেন।
এজাহারে বলা হয়, ২০১৯ সালে নগরের রেলগেট এলাকায় রাতুলকে তুলে নিয়ে পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা আদায় করেন হাসান। টাকা দেওয়ার পরও মাদক মামলায় রাজীবকে গ্রেপ্তার দেখানো হয় এবং তাকে ১৬ মাস কারাগারে থাকতে হয়।
চন্দ্রিমা থানার ওসি মেহেদী মাসুদ জানান, আটক হাসানকে প্রাথমিক চিকিৎসার পর বোয়ালিয়া থানার কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। বোয়ালিয়া থানার ওসি আবুল কালাম আজাদ বলেন, চাঁদাবাজির একটি মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে এবং কারাগারে পাঠানো হবে। পরে অন্য কোনো মামলার প্রমাণ মিললে সেগুলোতেও তাকে আসামি করা হবে।
রাজশাহী মহানগর পুলিশের মুখপাত্র গাজিউর রহমান বলেন, মাহবুব হাসান সর্বশেষ নগর ডিবিতে কর্মরত ছিলেন। পরবর্তীতে অভিযোগের ভিত্তিতে তাকে বরখাস্ত করা হয়। তার বিষয়ে বিস্তারিত খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।