ঘন কুয়াশা ও কনকনে শীতে বিপর্যস্ত তেঁতুলিয়া
কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ২৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০:৫৯ এএম
ছবি : সংগৃহীত
পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় টানা ঘন কুয়াশা ও কনকনে শীতে জনজীবন চরমভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। ক্রমাগত তাপমাত্রা কমতে থাকায় সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে পড়েছেন খেটে খাওয়া মানুষ, শ্রমজীবী ও যানবাহন চালকরা।
বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) সকাল ৯টায় তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১১ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ সময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৯৯ শতাংশ এবং বাতাসের গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ১১ থেকে ১২ কিলোমিটার। ভোর থেকে সকাল পর্যন্ত ঘন কুয়াশায় সড়ক, মাঠ ও ঘাট ঢেকে থাকায় দৃষ্টিসীমা অনেকটাই কমে যায়। ফলে যানবাহনগুলোকে হেডলাইট জ্বালিয়ে চলাচল করতে দেখা গেছে।
এর আগের দিন মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) সকাল ৯টায় তেঁতুলিয়ায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১২ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ওইদিন বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৯৯ শতাংশ এবং দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা উঠেছিল মাত্র ১৬ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে।
টানা কুয়াশা ও শীতের কারণে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হচ্ছে। সকাল বেলায় অনেকেই কাজে বের হতে পারছেন না। শীত থেকে বাঁচতে বিভিন্ন এলাকায় খড়কুটো ও কাঠ জ্বালিয়ে আগুন পোহাতে দেখা গেছে মানুষকে। সন্ধ্যার পর থেকে শিশির বৃষ্টির মতো ঝরতে থাকায় শীতের তীব্রতা আরও বেড়ে যায়।
সদর উপজেলার জগদল এলাকার বাসিন্দা মিজানুর রহমান বলেন, সকালে কাজে বের হওয়া খুব কষ্টকর। এত ঠান্ডা লাগে যে হাত-পা অবশ হয়ে আসে। কাজ না করলে সংসার চলে না, আবার এই ঠান্ডায় কাজ করাও কঠিন।
ধাক্কামারা এলাকার অটোচালক আশরাফুল ইসলাম বলেন, সকালে কুয়াশার কারণে সামনে কিছুই দেখা যায় না। হেডলাইট জ্বালিয়েও অটো চালাতে ভয় লাগে। যাত্রীও খুব কম, ফলে আয় একেবারেই কমে গেছে।
জালাসী এলাকার গৃহিণী রুবি বেগম জানান, শিশু ও বয়স্কদের নিয়ে বেশি দুশ্চিন্তায় আছি। সন্ধ্যার পর থেকেই এত ঠান্ডা পড়ে যে ঘরের ভেতরেও থাকা কষ্টকর হয়ে যায়।
আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি শীত মৌসুমে তেঁতুলিয়ায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় গত ১১ ডিসেম্বর। সেদিন তাপমাত্রা নেমে আসে ৮ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসে, যা এ মৌসুমে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল।
তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জিতেন্দ্রনাথ রায় বলেন, ১১ থেকে ১৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত এলাকায় মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে গেছে। মাঝখানে তাপমাত্রা কিছুটা বাড়লেও পরবর্তী দিনগুলোতে আবার কমতে শুরু করেছে। ডিসেম্বরের শেষ দিকে মাঝারি ধরনের শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
