একদিনে ঘুরে আসুন চট্টগ্রাম: পাহাড়, সমুদ্র আর ইতিহাসের মিলনমেলা

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ১২ অক্টোবর ২০২৫, ০৫:৩৫ পিএম

একদিনে ঘুরে আসুন চট্টগ্রাম। দেখুন পাহাড়, সমুদ্র আর ঐতিহাসিক স্থাপনা
বাংলাদেশের প্রধান সমুদ্রবন্দর ও দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর চট্টগ্রামকে বলা হয় দেশের বাণিজ্যিক রাজধানী। তবে শুধু ব্যবসা-বাণিজ্য নয়, প্রকৃতি, ইতিহাস আর আধুনিকতার মিশেলে চট্টগ্রাম একটি জনপ্রিয় ভ্রমণ গন্তব্য। ব্যস্ত নগরীর ভেতরেও লুকিয়ে আছে পাহাড়, সমুদ্র, নদী আর নানা ঐতিহাসিক স্থাপনা। তাই একদিন সময় নিয়েও ঘুরে দেখা সম্ভব চট্টগ্রামের বেশ কয়েকটি আকর্ষণীয় স্পট। চলুন দেখে নিই কেমন হতে পারে একদিনের চট্টগ্রাম ভ্রমণ।
সকাল শুরু হোক চট্টগ্রাম বোটানিক্যাল গার্ডেন ও চিড়িয়াখানা
চট্টগ্রাম ভ্রমণ শুরুর গন্তব্য হতে পারে চট্টগ্রাম বোটানিক্যাল গার্ডেন ও চিড়িয়াখানা। পাহাড় ঘেঁষে গড়ে ওঠা এই জায়গায় রয়েছে নানা প্রজাতির বৃক্ষ আর প্রাণী। পরিবার নিয়ে সময় কাটানোর জন্য আদর্শ জায়গা এটি। বিশেষ করে শিশুদের জন্য এটি এক অসাধারণ অভিজ্ঞতা। এরপর যেতে পারেন চট্টগ্রামের অন্যতম ঐতিহাসিক জায়গা হলো আদালত পাহাড়। এখান থেকে পুরো শহরের একটি সুন্দর দৃশ্য চোখে পড়ে। সকাল সকাল এই জায়গায় উঠলে পাওয়া যায় এক বিশেষ শান্তি। কাছেই আছে দারুল ফজল মসজিদ, যেটি স্থাপত্যশৈলীতে ভ্রমণকারীদের মুগ্ধ করে। ঘুরবেন, দেখতে আর এই ভালো লাগা মুহূর্তগুলো নিজের হাতে থাকা স্মার্টফোনে ক্যামেরাবন্দী করতে ভুলবেন না। হাতে থাকা স্মার্টফোন যদি ট্রাভেল পোর্ট্রেট হয় তবে কেমন লাগবে ব্যাপারটা। কোনো ছবিই মিস হবে না এই ভ্রমণে।
ফয়’স লেক: পাহাড় আর লেকের রূপকথা
চট্টগ্রাম ভ্রমণে ফয়’স লেক অবশ্যই তালিকায় রাখতে হবে। পাহাড়ের বুক চিরে তৈরি হওয়া এই লেক ও বিনোদন কেন্দ্র প্রকৃতিপ্রেমী আর পর্যটকদের কাছে সমান জনপ্রিয়। নৌকাভ্রমণ, পাহাড়ি দৃশ্য আর লেকের শান্ত পরিবেশ মুগ্ধ করবে আপনাকে। এছাড়া এখানে রয়েছে বিনোদন পার্ক, যা পরিবার ও শিশুদের জন্য বাড়তি আনন্দ যোগ করে। এখানে এতো কিছু দেখার আছে যা ভ্রমণে না এলে বোঝানো সম্ভব নয়। ফয়’স লেক যেমন সুন্দর তেমন সুন্দর ছবি হবে ভিভো ভি৬০ লাইটের ৩২ মেগাপিক্সেলের সেলফি ক্যামেরায়। আপনার ভ্রমণ গল্প শুধু ভ্রমণের নয় ছবিতেও স্মৃতি হয়ে থাকবে।
পতেঙ্গা সমুদ্রসৈকত
বিকেল গড়ালে চলে যেতে পারেন পতেঙ্গা সমুদ্রসৈকতে। কর্ণফুলী নদীর মোহনা আর বঙ্গোপসাগরের মিলনস্থলে গড়ে ওঠা এই সৈকতে হাঁটার আলাদা আনন্দ আছে। এখানে সূর্যাস্ত দেখার অভিজ্ঞতা চট্টগ্রাম ভ্রমণকে করবে আরও রঙিন। সৈকতের পাশেই আছে বিভিন্ন খাবারের দোকান যেখানে ঝালমুড়ি, ফুচকা কিংবা সি-ফুড খেতে পারেন। এরপর যাবেন কর্ণফুলী নদীর তীরে। চট্টগ্রামের প্রাণ হলো কর্ণফুলী নদী। নদীর পাড়ে দাঁড়িয়ে জাহাজের আনাগোনা দেখা কিংবা নৌকায় চড়ে নদী ভ্রমণ করা ভ্রমণকারীদের জন্য দারুণ অভিজ্ঞতা হতে পারে। সন্ধ্যার আলো-অন্ধকারে নদীর দৃশ্য অপূর্ব লাগে। লো লাইটেও কোনো ভয় নেই। হাতে থাকলে ট্রাভেল পোর্ট্রেট ভিভো ভি৬০ লাইট আপনার চট্টগ্রাম ভ্রমণের সব মুহূর্তগুলো দারুণ ভাবে ক্যামেরাবন্দী হবে। ভিভো অরা লাইট আর ৫০ মেগাপিক্সেল মেইন ক্যামেরা ও ভিভোর উন্নত এআই মাস্টার অ্যালগরিদম আপনাকে দেবে একদম পরিষ্কার ও নয়েসমুক্ত ছবি।
জামালখান ও পুরনো চট্টগ্রাম
শহরের প্রাণকেন্দ্র জামালখান এলাকায় ঘুরে দেখার মতো রয়েছে বেশ কিছু পুরনো স্থাপনা। এখানে আছে চার্চ, পুরনো বাড়ি আর দোকানপাট যা চট্টগ্রামের ইতিহাসের সাক্ষী। চাইলে এখানে কেনাকাটাও করতে পারেন।
চট্টগ্রামের বার্মিজ বাজারে কেনাকাটা
ঘোরাঘুরির সময় আশপাশেই পর্যটকদের জন্য রয়েছে নানা রকমের দোকানপাট। চট্টগ্রামের বার্মিজ বাজার হলো ঐতিহ্যবাহী পণ্যের জন্য একটি জনপ্রিয় স্থান, যেখানে আপনি বার্মিজ ও স্থানীয় হস্তশিল্প, পোশাক, এবং বিভিন্ন ধরনের স্যুভেনিয়ার কিনতে পারবেন। এখানে বার্মিজ খাবারের দোকানও রয়েছে, যা পর্যটকদের কাছে খুব জনপ্রিয়। এই বাজারটি মূলত পর্যটকদের কেনাকাটার জন্য একটি আকর্ষণীয় গন্তব্য। পর্যটকেরা মূলত এখান থেকে বার্মিজ আচার, চকলেট, কফি ও বার্মিজ প্রসাধনসামগ্রী বেশি কিনে থাকেন। এ ছাড়া কিছু কিছু নির্দিষ্ট দোকানে আপনি টুকটাক বার্মিজ ধাঁচের পোশাকও পেয়ে যাবেন।
খাবারের ব্যবস্থা
চট্টগ্রাম মানেই সি-ফুডের স্বাদ! এখানে পাওয়া যায় ইলিশ, কোরাল, চিংড়ি, রূপচাঁদা মাছের ঝাল-মশলাদার পদ। এছাড়া কাচ্চি বিরিয়ানি, চট্টগ্রামের বিখ্যাত মেজবানি খাবার ও ফাস্টফুডও ভ্রমণকারীদের পছন্দের তালিকায় থাকে। পতেঙ্গা সৈকতের পাশে বসে ঝালমুড়ি খাওয়ার মজা কিন্তু আলাদা। সৈকতের পাশেই আপনি ভাত-মাছ ছাড়াও পাবেন বিভিন্ন রকমের স্ট্রিট ফুড। এসবের মধ্যে জনপ্রিয় কয়েকটি খাবার হচ্ছে কাঁকড়া ভাজা, চিংড়ি ভাজা, হরেক রকমের বার্মিস আচার, চটপটি, ফুচকা, বাদাম, আইসক্রিমসহ ঠাণ্ডা পানীয়। তবে এসবের বাইরে আপনি যদি ভালো মানের কোনো রেস্টুরেন্টে খেতে চান, তবে অবশ্যই ঢুঁ মারতে পারেন কাছেই বারকোড, ফ্লাই ভিউ, রিভার ভিউর মতো রেস্টুরেন্টগুলোতে।
যেখানে থাকবেন
পতেঙ্গার আশপাশে থাকার জন্য তেমন সুব্যবস্থা বলতে গেলে নেই। তবে মোটামুটির মধ্যে সৈকতের কাছাকাছি অবস্থিত বাটারফ্লাই পার্ক হোটেলে থাকতে পারেন। এ ছাড়া থাকার জন্য শহরের বিভিন্ন জায়গায় বাজেটমতো পর্যাপ্ত হোটেল পাওয়া যায়। আগ্রাবাদের হোটেল ল্যান্ডমার্ক, জিইসি মোড়ে হোটেল সি অ্যান্ড বি, লালখানবাজারে হোটেল রেডিসন ব্লুতে রাত্রি যাপনের জন্য প্যাকেজসহ বিভিন্ন সুব্যবস্থা রয়েছে।
চট্টগ্রাম এমন একটি শহর যেখানে পাহাড়, সমুদ্র, নদী আর ইতিহাস একসাথে মিশে আছে। একদিনের ভ্রমণেই আপনি পেয়ে যাবেন প্রকৃতির শান্তি, সমুদ্রের বিশালতা আর শহরের প্রাণচাঞ্চল্য। তাই অবসর পেলেই চলে আসুন চট্টগ্রামে—এখানে প্রতিটি মুহূর্ত ভ্রমণকে করে তুলবে স্মরণীয়। আর সারাদিনের ভ্রমণ গল্প ক্যামেরাবন্দী করতে গিয়ে ২৫৬ জিবি স্টোরেজ, ৬৫০০ এমএএইচ ব্লুভোল্ট ব্যাটারি থাকায় ভ্রমণের সব আনন্দ ঘরে ফেরা পর্যন্ত জীবন্ত থাকবে ভিভো ভি৬০ লাইটে।