মার্কিন সিনেটে পাস হলো ‘বিগ বিউটিফুল বিল’

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ০২ জুলাই ২০২৫, ০৮:৩৮ পিএম

ছবি : সংগৃহীত
যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসের উচ্চকক্ষ সিনেটে স্বল্প ব্যবধানে পাস হয়েছে ট্রাম্পের কর ও ব্যয়ের ‘বিগ বিউটিফুল বিল’। এর পক্ষে পড়ে ৫১ এবং বিপক্ষে পড়ে ৫০ ভোট।
সিনেটে বিলটি নিয়ে ২৪ ঘণ্টার বিতর্ক শেষে মঙ্গলবার ভোট হয়। ৫০-৫০ ভোটে কয়েক ঘণ্টার অচলাবস্থার পর ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্সের টাই ব্রেকিং ভোটেই শেষ পর্যন্ত পাস হয়ে বাধা পেরোয় এ বিল। খবর বিবিসির।
বিলটি এখন আবার নিম্নকক্ষ প্রতিনিধি পরিষদে (হাউজ অব রিপ্রেজেন্টেটিভস) ফেরত যাবে। সেখানে এই বিল নিয়ে চলবে আরেক দফা কাটাছেঁড়া।
এর আগে প্রতিনিধি পরিষদ থেকেই বিলটির প্রাথমিক সংস্করণ মাত্র এক ভোটের ব্যবধানে পাস হয়ে উচ্চকক্ষে গিয়েছিল।
এখন বিলটি প্রতিনিধি পরিষদে যাওয়ার পর তা অনুমোদনের জন্য পেশ করা হবে। বিলটি অনুমোদন পেলে তা আইনে পরিণত করতে সইয়ের জন্য প্রেসিডেন্টের কাছে পাঠানো হবে।
বিবিসি জানায়, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বিলটি তার টেবিলে পাঠানোর জন্য ৪ জুলাই পর্যন্ত সময়সীমা দিয়েছেন।
কিন্তু ট্রাম্পের প্রধান সব কর্মসূচি বাস্তবায়নের জন্য ‘বিগ বিউটিফুল বিল’ খুব গুরুত্বপূর্ণ হলেও বিলটির নানা বিষয় নিয়ে মতবিরোধের কারণে এ প্রক্রিয়ায় দেরিও হতে পারে।
ট্রাম্প নিজেও মঙ্গলবার সকালে এ কথা স্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, সময়সীমা পূরণ করা ‘খুবই কঠিন’ হবে।
এর আগে সিনেটের রিপাবলিকানরা বিলটি পাসের পথে এক ধাপ অগ্রসর হয়েছিল গত শনিবার রাতের ভোটে এ বিল সিনেটে আলোচনার জন্য ওঠার মধ্য দিয়ে।
ট্রাম্প বিলটির নাম দিয়েছেন ‘বিগ বিউটিফুল বিল’। এটি আসলে যুক্তরাষ্ট্রের কর এবং ব্যয় কমানোর জন্য তৈরি করা একটি বিল।
এই বিল চূড়ান্ত অনুমোদন পেলে এর আওতায় উচ্চ আয়ের মার্কিন নাগরিকেরা কর ছাড়ের সুবিধা পাবেন। অন্যদিকে, মেডিকেইড- এর মতো জনকল্যাণমূলক কর্মসূচির ব্যয় কমে যাবে প্রায় লক্ষ কোটি ডলার।
তাছাড়া এ বিল কার্যকর হলে অভিবাসন, সীমান্ত নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষাখাতে ট্রাম্পের অগ্রাধিকার পরিকল্পনায় প্রয়োজনীয় অর্থ সংস্থান করাও সহজ হবে।
এই বিলে যা আছে:
কর ছাড়
এখন মানুষ সর্বোচ্চ ১০ হাজার ডলার পর্যন্ত রাজ্য বা স্থানীয় কর ছাড় নিতে পারে। নতুন আইনে এ সীমা বাড়িয়ে ৪০ হাজার ডলার করা হবে ৫ বছরের জন্য।
বকশিশ, অতিরিক্ত সময়ে কাজের আয় (ওভারটাইম), এবং যুক্তরাষ্ট্রে তৈরি গাড়ি কেনার জন্য নেওয়া ঋণের সুদ কর থেকে বাদ দেওয়া হবে। সব মিলিয়ে প্রায় ৪.৫ ট্রিলিয়ন ডলার কর ছাড় দেওয়া হবে।
সীমান্ত নিরাপত্তা ও অভিবাসন
এই বিলে সীমান্ত ও নিরাপত্তার জন্য ৩৫০ বিলিয়ন ডলার রাখা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে:
অভিবাসীদের আটক কেন্দ্রে ১ লাখ শয্যার জন্য ৪৫ ডলার বিলিয়ন
মেক্সিকো সীমান্তে দেয়াল নির্মাণে ৪৬ ডলার বিলিয়ন
২০২৯ সালের মধ্যে আরও ১০,০০০ ইমিগ্রেশন পুলিশ (আইসিই) নিয়োগ
এই বিপুল খরচ সামলাতে সরকার গরিবদের জন্য থাকা স্বাস্থ্যসেবা ও খাদ্য সহায়তা কমাতে চায়। এতে করে অনেক মানুষ এসব সেবা থেকে বঞ্চিত হবে। অনুমান করা হচ্ছে, নতুন আইনে ১ কোটির বেশি মানুষ ভবিষ্যতে স্বাস্থ্যবিমা হারাতে পারে।
সবচেয়ে বেশি লাভ কাদের?
ধনী মানুষরা এই বিলে সবচেয়ে বেশি উপকৃত হবেন। ইয়েল ইউনিভার্সিটি বলছে, গরিবদের আয় গড়ে ২.৫% কমবে, কারণ তাদের জন্য সেবা কমে যাবে। অন্যদিকে ধনীদের আয় গড়ে ২.২% বাড়বে।