ইন্দোনেশিয়ায় বন্যা-ভূমিধস
মৃতের সংখ্যা ৯১৬, নিখোঁজ শতাধিক
কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ০৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ০১:০৫ পিএম
ছবি : সংগৃহীত
ঘূর্ণিঝড়, টানা ভারী বর্ষণ ও এর ফলে সৃষ্ট বন্যা-ভূমিধসে ইন্দোনেশিয়ার সুমাত্রা ও আচেহ প্রদেশজুড়ে ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। এখন পর্যন্ত বিভিন্ন গ্রাম, শহর ও উপকূলীয় এলাকা থেকে ৯১৬ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এখনও নিখোঁজ রয়েছেন অন্তত ২৭৪ জন।
শনিবার প্রাদেশিক ও কেন্দ্রীয় সরকারের বরাত দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছে রয়টার্স।
আচেহ প্রদেশের তামিয়াং জেলার বাসিন্দারা জানান, ভয়াবহ বন্যার কারণে স্থানীয়দের খাবার, পানি ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মারাত্মক সংকট দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে দুর্গম এলাকার সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ায় সহায়তা পৌঁছাতে বিলম্ব হচ্ছে এবং মানুষ চরম ভোগান্তিতে পড়েছে।
আরো পড়ুন : এশিয়ার ৩ দেশে ভয়াবহ বন্যা: মৃত্যু প্রায় ১ হাজার ৮০০, লাখো মানুষ বাস্তুচ্যুত
তামিয়াং জেলার একটি ইসলামি আবাসিক স্কুলের শিক্ষার্থী ১৪ বছরের দিমাস ফিরমানসিয়াহ রয়টার্সকে জানায়, সে এবং তার সহপাঠীরা গত এক সপ্তাহ ধরে স্কুলের হোস্টেলে আটকা পড়েছে। পরিষ্কার পানির মজুদ শেষ হয়ে যাওয়ায় তারা বাধ্য হয়ে বন্যার পানি পান করছে।
জেলার আরো অনেক বাসিন্দা জানিয়েছেন, সরকারি সহায়তা কেন্দ্র থেকে প্রয়োজনীয় খাবার ও পানি সংগ্রহ করতে গিয়ে তাদের সীমাহীন দুর্ভোগের মুখে পড়তে হচ্ছে।
ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট প্রবাও সুবিয়ান্তো কয়েক দিন আগে দাবি করেছিলেন, বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে এবং বিপর্যয় মোকাবিলায় সরকারের প্রস্তুতি সন্তোষজনক। তবে সুমাত্রা ও আচেহ প্রদেশের কর্মকর্তারা জানান, বাস্তব পরিস্থিতি প্রেসিডেন্টের বক্তব্যের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। তারা কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে জরুরি অবস্থা ঘোষণার আহ্বান জানিয়েছেন।
ইন্দোনেশিয়ার পরিবেশবাদী সংগঠনগুলো অভিযোগ করেছে, ব্যাপক প্রাণহানির জন্য বনজঙ্গল উজাড় এবং অবৈধ খনি খননই মূলত দায়ী। তাদের মতে, চীনের অর্থায়নে পরিচালিত নর্থ সুমাত্রা হাইড্রো এনার্জি এবং স্বর্ণ উত্তোলনকারী এগিনকোর্ট রিসোর্সেসসহ কয়েকটি কোম্পানির কার্যক্রম গুরুতর পরিবেশগত ক্ষতি ডেকে এনেছে।
রয়টার্স এ বিষয়ে নর্থ সুমাত্রা হাইড্রো এনার্জি ও এগিনকোর্ট রিসোর্সেসের সঙ্গে যোগাযোগ করলেও কোম্পানিগুলো কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি।
গত নভেম্বরের শেষ সপ্তাহে ঘূর্ণিঝড় ‘সেনিয়া’সহ একাধিক মৌসুমি ঝড় এবং ভারী বর্ষণের পর থেকে বন্যা শুরু হয়। সুমাত্রা ও আচেহ সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। পাশাপাশি বিভিন্ন এলাকায় ভূমিধসের ঘটনাও ঘটেছে, যা মৃতের সংখ্যা আরো বাড়িয়ে দিয়েছে।
