শাটডাউনের প্রভাব
পর্যটকশূন্য সমুদ্রকন্যা কুয়াকাটা
আনোয়ার হোসেন আনু, কুয়াকাটা (পটুয়াখালী) থেকে
প্রকাশ: ১৭ নভেম্বর ২০২৫, ১২:৫২ পিএম
ছবি : ভোরের কাগজ
কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ ঘোষিত শাটডাউনের প্রভাবে পটুয়াখালীর অন্যতম কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতে পর্যটক ও দর্শনার্থীর কোনো ভিড় নেই। সৈকত এলাকা ফাঁকা। অলস সময় পার করছেন পর্যটন নির্ভর ব্যবসায়ীরা। হোটেল-মোটেল ও রিসোর্টগুলো খালি। রাস্তাঘাটে অল্প কিছু অটোরিকশা ও অটোভ্যান। নেই পর্যটকবাহী বা পিকনিকের গাড়ি, কিংবা বাস-মাইক্রোবাস। যাত্রী সংকট এবং সড়কে নিরাপত্তার কথা বিবেচনায় রেখে কুয়াকাটা থেকে কোনো দূরপাল্লার যানবাহন ছেড়ে যায়নি।
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় ও বাস শ্রমিকদের সঙ্গে সংঘর্ষ এবং শাটডাউনের কারণে বরিশাল-কুয়াকাটা সড়কে যানবাহন তেমন চলাচল করছে না। এতে ভোগান্তি বেড়েছে যাত্রীদের। আর লোকসানে পড়েছেন পর্যটন ব্যবসায়ীররা।
গতকাল রবিবার সকাল এবং দুপুরে কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতে গিয়ে দেখা গেছে, পুরো সৈকত জুড়ে ৫০ থেকে ৬০ জন মানুষ। তাদের মধ্যে বেশিরভাগই ক্যামেরাম্যান। পুরো সৈকত এলাকা ফাঁকা। বিচে ছাতা-বেঞ্চ খালি পড়ে রয়েছে। সেখানে পর্যটক বা দর্শনার্থীদের কাউকে দেখা যায়নি। বিচের দুই দিকের চিত্র একই। এমন অবস্থায় ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা হতাশ হয়ে পড়েছেন।
কুয়াকাটা সৈকতের ছাতা-বেঞ্চ ব্যবসায়ী আবু ছালেহ জানান, সকাল থেকে তিনি একশ টাকাও আয় করতে পারেনি। বসে বসে অলস সময় পার করছেন।
বাংলাদেশ পর্যটন কর্পোরেশনের মোটেল যুব পান্থ নিবাসে গিয়ে জানা গেছে, তাদের মোটেলে দুই ইউনিট মিলে ৭৭টি কক্ষ। দুয়েকটি ছাড়া বেশিরভাগই খালি রয়েছে।
কুয়াকাটা সিকদার রিসোর্ট অ্যান্ড ভিলাস-এর সহকারী ব্যবস্থাপক আল আমিন খান উজ্জ্বল জানান, শাটডাউনের প্রভাবে তাদের রিসোর্ট এবং ওশান ভিউ কনভেনশন সেন্টার খালি পড়ে রয়েছে। কোনো পর্যটক নেই। তিনি আরো জানান, শাটডাউন ঘোষণার পর বুকিং বাতিল হয়ে গেছে। অবস্থা খুবই খারাপ। এভাবে চলতে থাকলে ব্যবসায়ীরা বড় বিপদের সম্মুখীন হবে।
নভেম্বর থেকে পর্যটন মৌসুম শুরু হলেও কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতে পর্যটক-দর্শনার্থীদের তেমন একটা ভিড় দেখা যায়নি। শুক্রবারনির্ভর কিছু পর্যটক এলেও তা খুবই কম। আগতদের বেশিরভাগই পিকনিক পার্টি। সকালে এসে রাতে চলে যায়। এরই মধ্যে শাটডাউন কর্মসূচি ব্যবসায়ীদের নতুন করে চিন্তায় ফেলেছে। কর্মচারীদের বেতন দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে তাদের।
কুয়াকাটা হোটেল মোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মোতালেব শরীফ বলেন, রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং শাটডাউন কর্মসূচিতে কুয়াকাটায় কোনো পর্যটক নেই। যা-ও ছিল তা শাটডাউন ঘোষণার পর চলে গেছে। আবাসিক হোটেল-মোটেলগুলোয় শতকরা একভাগ পর্যটকও নেই।
তিনি জানান, পর্যটন মৌসুম শুরু হলেও এখন পর্যন্ত তারা পর্যটক দর্শনার্থীদের তেমন একটা সাড়া পাননি। ছুটির দিনকেন্দ্রিক কিছু পর্যটক এলেও অন্যান্য দিন খুবই কম থাকে। এরইমধ্যে আবার রাজনৈতিক কর্মসূচি পর্যটনে বিরাট প্রভাব ফেলছে। পর্যটন খাত অর্থনৈতিকভাবে ভেঙে পড়বে বলে জানিয়েছেন এই ব্যবসায়ী নেতা।
