×

বিএনপি

বিএনপি: তৃণমূলে ‘বঞ্চনা’র আগুন

Icon

হরলাল রায় সাগর

প্রকাশ: ১৯ নভেম্বর ২০২৫, ০২:০২ পিএম

বিএনপি: তৃণমূলে ‘বঞ্চনা’র আগুন

ছবি : সংগৃহীত

জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ২৩৭ আসনে সম্ভ্যাব্য প্রার্থী ঘোষণার পর দলীয় কোন্দল আরো বাড়ছে বিএনপিতে। তৃণমূলের এই ক্ষোভের আঁচ লেগেছে কেন্দ্রেও। অনেক আসনে মনোনয়নবঞ্চিতরা বিক্ষোভ করছেন। অনেকে নিষ্ক্রিয় থেকে দলীয় প্রার্থীকে বেকায়দায় ফেলছেন। কোনো কোনো নেতা প্রার্থী বদলের জন্য কেন্দ্রে জোর লবিং-তদবির চালাচ্ছেন। প্রার্থী নির্বাচনে অনেক ত্যাগী নেতা যেমন বাদ পড়েছেন; তেমনি নতুন, অযোগ্য, অক্ষম ও বিতর্কিত ব্যক্তিদের দেয়া হয়েছে মনোনয়ন। চলছে নবীন-প্রবীণ নেতৃত্বের লড়াইও। ফলে বরাবরের মতো মনোনয়ন নিয়ে জটিলতা বাড়ছে দলটিতে। অন্যদিকে দ্ব›দ্ব-সংঘাত রূপ নিচ্ছে সহিংসতায়। এতে আরো অস্থিতিশীল হয়ে উঠছে রাজনৈতিক অঙ্গন। কোন্দল নিরসনে হাইকমান্ড থেকে দ্রুত পদক্ষেপ নেয়া না হলে নির্বাচনের ফলাফলে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

বিএনপি নেতাকর্মীদের অভিযোগ, দলের ঘোষিত অনেক আসনে নব্য, হাইব্রিড, বিগত দিনের সুবিধাভোগী, আন্দোলন-সংগ্রামে নিষ্ক্রিয় ছাড়াও প্রবাসের অনেককে মনোনয়ন দেয়া হয়েছে। সম্ভ্যাব্য ওই তালিকায় ত্যাগী, যোগ্য আর জনপ্রিয় নেতাদের বঞ্চিত করা হয়েছে। আর এতে ক্ষোভে ফুঁসছেন তৃণমূলের নেতাকর্মীরা। অনেক স্থানেই প্রার্থী বদলের দাবিতে রাজপথে নেমেছেন তারা। তবে সাংগঠনিক শাস্তির ভয়ে গ্রহণযোগ্য ও ত্যাগী নেতারা প্রকাশ্যে কিছু বলছেন না। 

বিএনপির স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য জানান, কয়েক দফা মাঠ জরিপ, সাংগঠনিক নেতাদের মতামতের ভিত্তিতে এবারের সম্ভ্যাব্য প্রার্থী ঘোষণা করা হয়েছে। তবে এটাই চ‚ড়ান্ত নয়। তফসিল ঘোষণার আগে-পরে এই তালিকায় প্রয়োজন অনুসারে কিছু কিছু পরিবর্তন হতে পারে। তবে কোনো অবস্থাতেই তৃণমূলের কোন্দলকে মেনে নেয়া হবে না। সবাইকে ঐক্যবদ্ধ করে নির্বাচনে যেতে হবে। এজন্য যা যা করার দরকার দল তাই করবে। 

দলের পক্ষ থেকেও বলা হয়েছে- প্রার্থী মনোনয়নের এই তালিকা চ‚ড়ান্ত নয়। দলের স্থায়ী কমিটি, পার্লামেন্টারি বোর্ড যদি মনে করে, তাহলে নিঃসন্দেহে নিয়ম মেনে প্রার্থীতায় পরিবর্তন নিয়ে আসবে।

দলের এমন সিদ্ধান্তেই মাদারীপুর-১ (শিবচর) আসনে কামাল জামান মোল্লার প্রার্থিতা স্থগিত করেছে বিএনপি। বিতর্কিত ওই আসনের প্রার্থিতা স্থগিত করায় অনেক আসনের মনোনয়নপ্রত্যাশীরা আশান্বিত হয়ে উঠেছেন। তারাও একই প্রক্রিয়ায় যোগ্য প্রার্থীদের মনোনয়ন দেয়ার দাবিতে বিক্ষোভ-আন্দোলন শুরু করেছেন। এখন পর্যন্ত দেশের প্রায় ২০টি জেলায় একাধিক আসনে এই আন্দোলন চলছে। কোথাও কোথাও সংঘাত-সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটছে। রবিবার ময়মনসিংহ-৩ (গৌরীপুর) আসনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী এম ইকবাল হোসেইনকে পরিবর্তনের দাবিতে গৌরীপুরে বিক্ষোভ সমাবেশ করেন উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক তায়েবুর রহমান হিরন। ইকবাল এলাকায় প্রবেশের সময়ে দুপক্ষের সংঘর্ষে প্রাণ হারান উত্তর জেলা ছাত্রদলের সহসভাপতি তানিজল আহমেদ মিঠু। এই সংঘাত কোনো কোনো ক্ষেত্রে পারবারিক পর্যায়েও শুরু হয়েছে। চলছে নবীন আর প্রবীণের মধ্যে লড়াই। কেউ কাউকে ছাড় দিতে নারাজ। আবার অনেক আসনে মনোনয়ন নিয়ে নেতাকর্মীদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হলেও সাংগঠনিক শাস্তির ভয়ে মনোনয়নবঞ্চিত নেতারা প্রকাশ্যে কঠোর কোনো প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছেন না। তবে ভেতরে ভেতরে ক্ষোভ-দুঃখে ফুঁসছেন।

এ বিষয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু বলেন, দলের পক্ষ থেকে স্পষ্ট করেই বলা হয়েছে- এটা চ‚ড়ান্ত তালিকা নয়। এটা সম্ভ্যাব্য তালিকা। কোনো এলাকায় তেমন পরিবর্তন মনে করলে অবশ্যই সেটা করা হবে। আর বড় দল হিসেবে প্রত্যেক আসনে একাধিক যোগ্য প্রার্থী আছে। সবকিছু বিশ্লেষণ করেই এই তালিকা করা হয়েছে। 

এসব বিষয়ে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, বিএনপি সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক দল। এখানে অনেক মনোনয়নপ্রত্যাশী। সবাইকে তো আর মনোনয়ন দেয়া সম্ভব নয়। যারা মনোনয়ন পাননি তাদের দল অন্যভাবে মূল্যায়ন করবে। 

চলছে নবীন-প্রবীণের লড়াই : ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৪ (কসবা-আখাউড়া) আসনে সাবেক এমপি মুশফিকুর রহমানকে সম্ভ্যাব্য মনোনয়ন দিয়েছে বিএনপি। নব্বই বছরের ঊর্ধ্বে একজন প্রবীণ ও অসুস্থ নেতাকে মনোনয়ন দেয়া হয়েছে; যিনি অপরের সাহায্য ছাড়া চলাচল করতে পারেন না- এমন অভিযোগ তুলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন দলীয় নেতাকর্মীদের একটি অংশ। তারা বলছেন, বিগত ১৭ বছর মুশফিকুর রহমান কানাডা প্রবাসী ছিলেন। ৫ আগস্টের পর দেশে ফেরেন তিনি। ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগের প্রার্থী অ্যাডভোকেট শাহ আলমের কাছে পরাজয়ের পর তিনি রাজনীতি থেকে সরে যান। ২০১৮ সালের নির্বাচনে বিএনপি তাকে মনোনীত করলেও মনোনয়নপত্রে ভুল করে তিনি প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে সরে দাঁড়ান। সে সময় তৎকালীন আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের সঙ্গে তার আঁতাতের অভিযোগ ওঠে- যা আজো স্থানীয় রাজনীতিতে আলোচনায় আছে। দলের দুর্দিনে নেতাকর্মীরা তাকে কাছে পাননি। এই আসনে অপর মনোনয়নপ্রত্যাশী কবির আহমদ ভূইয়ার পক্ষে দুই উপজেলার নেতাকর্মীরা মাঠে নেমেছেন। প্রতিদিনই কর্মসূচি পালন করছেন। 

কুষ্টিয়া-৪ আসনে মনোনয়ন দেয়া হয়েছে সাবেক এমপি সৈয়দ মেহেদি আহমেদ রুমিকে। আশি বছরের বেশি বয়সী এই নেতার আসনে জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক শেখ সাদী মনোনয়ন চাইছেন। শেখ সাদী তরুণ প্রজন্ম আর নারী ভোটারদের কাছে টানতে দীর্ঘদিন ধরে কর্মসূচি পালন করে আসছেন। এখানে মনোনয়ন পরিবর্তন না আসলে অঘটন ঘটতে পারে বলে জানিয়েছেন খোকসা উপজেলা বিএনপির সাবেক নেতা মোস্তাফিজুর রহমান। 

মাগুরা-২ আসনে প্রার্থী করা হয়েছে বিএনপির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান নিতাই রায় চৌধুরীকে। তার মনোনয়নকে কেন্দ্র করে বিভক্ত হয়ে পড়েছে স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীরা। একপাশে নিতাই রায়; অন্যদিকে সাবেক এমপি কাজী সলিমুল হক কামালের সমর্থকরা। এর মধ্যে এই আসনের মোহাম্মদপুর, শালিখা ও সদর উপজেলার ১৭১টি ওয়ার্ড বিএনপির ৫০১ জন নেতাকর্মী নিতাই রায় চৌধুরীর প্রার্থিতা বাতিলের দাবি জানিয়ে দলের হাইকমান্ডের কাছে লিখিত দাবি জানিয়েছেন। আগামী ১৭ নভেম্বর সলিমুল হক কামাল পৃথক সমাবেশ কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন। 

সালিখা উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মোজাফফর হোসেন টুকু বলেন, নিতাই রায় চৌধুরী বিগত তিনটি নির্বাচনে বিএনপির মনোনয়নে নির্বাচন করে পরাজিত হয়েছেন। এবারের নির্বাচনেও তিনি জয়ের মুখ দেখবেন না।

মোহাম্মদপুর উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম বাচ্চু বলেন, জনবিচ্ছিন্ন এই নেতার মনোনয়ন বহাল রাখলে এই আসন হাতছাড়া হবে। এমনকি হিন্দু সম্প্রদায়ও তাকে ভোট দেবে না। 

ঢাকা-৫ আসনে প্রার্থী ঘোষণা করা হয়েছে নবীউল্লাহ নবীকে। তাকে নিয়ে একদিকে যেমন বিতর্ক রয়েছে তেমনি বয়সের হিসেবও ভাবাচ্ছে দলকে। তবে এই আসনের প্রার্থী বদলে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম কিংবা যুগ্ম মহাসচিব হাবিব-উন নবী খান সোহেলকে দেয়া হতে পারে বলে দলের একটি সূত্র জানিয়েছে। 

নৈতিক চরিত্রের অধঃপতনের একাধিক ভিডিও চিত্র প্রকাশ হওয়ায় নেত্রকোনা-৫ (পূর্বধলা উপজেলা) আসনের ধানের শীষের প্রাথমিক সম্ভাব্য ঘোষিত প্রার্থী আবু তাহের তালুকদারের বিরুদ্ধে অসন্তোষ বাড়ছে নেতাকর্মীদের মধ্যে। ২০০১ সালে চারদলীয় জোট সরকারের শুরুতেই নেত্রকোনা জেলা শহরে  ‘আইটিসিএল’ লুট করার অপরাধে জেলা সাধারণ সম্পাদক থাকা অবস্থায় আবু তাহের তালুকদারকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়। ২০০৬ সালে সংসদ নির্বাচনে দলীয় সিদ্ধান্তের বাহিরে গিয়ে কাঁঠাল প্রতীকে নির্বাচন করেন তিনি। এছাড়া তার বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের শাসনামলে ক্ষমতাসীনদের সহযোগীদের অর্থের বিনিময়ে পুনর্বাসন, বিএনপির বিভিন্ন কমিটিতে স্থান দেয়া, কর্মীদের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে উৎসাহিত করে অন্য রাজনৈতিক দলের ওপর তার দায় চাপিয়ে দেয়ার প্রতিজ্ঞা এবং গেল বছরের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর বিভিন্ন অসাধু উপায়ে বিপুল বিত্ত বৈভবের মালিক বনেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। 

বিতর্কিতদের ভারে অসন্তোষ বাড়ছে : ৫ আগস্টের পর এস আলম গ্রুপের গাড়িকাণ্ডে দল থেকে বহিষ্কৃত ও বিতর্কিত নেতা এনামুল হককে চট্টগ্রাম-১২ আসনে মনোনয়ন দিয়েছে দল। যদিও বহিষ্কারের কয়েক মাসের মধ্যে লবিং-তদবিরের চাপে তার সাংগঠনিক শাস্তি প্রত্যাহার করা হয়। নেতাকর্মীরা জানান, এস আলম পরিবারের তদবিরেই এনামুলকে মনোনয়ন দেয়া হয়েছে। তার বিরুদ্ধে নানাবিধ অভিযোগ থাকলেও তা আমলে নেয়নি দলের হাইকমান্ড। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক নেতিবাচক প্রচারণা চলছে। অনেকেই ক্ষোভ প্রকাশ করে মতামত দিচ্ছেন। এই আসনে বিগত আওয়ামী আমলে গুমের শিকার সৈয়দ সাদাত আহমেদের মতো উচ্চশিক্ষিত, মার্জিত আর কর্মীবান্ধব নেতাকে বঞ্চিত করা হয়েছে বলেও ক্ষোভ প্রকাশ করেন নেতাকর্মীরা। ২০২৪ সালের ২৯ আগস্ট রাতে নগরীর কালুরঘাট শিল্প এলাকার (বিসিক) মীর গ্রুপের ওয়্যারহাউস থেকে ১৪টি বিলাসবহুল গাড়ি সরিয়ে নেয়া হয়। গাড়িগুলো ছিল এস আলম গ্রুপের। এ ঘটনায় ২ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির প্রথম যুগ্ম আহ্বায়ক মো. এনামুল হক এনামকে প্রাথমিক সদস্যসহ সব পদ থেকে স্থগিত করা হয়।

৩০ ডিসেম্বর চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধনে বিএনপির তৃণমূল কর্মীরা অভিযোগ করেন, এনামুল হক আওয়ামী লীগ আমলে চাল ব্যবসায়ী হিসেবে আঁতাত করে ব্যবসা ও রাজনীতি করেছেন। তাদের অভিযোগ, আওয়ামী লীগের শাসনামলে যখন সাধারণ কর্মীরা নির্যাতিত হয়েছেন, তখন এনাম ছিলেন সুবিধাভোগী।

গাইবান্ধা-৪ আসনে মনোনয়ন দেয়া হয়েছে ওয়ান ইলেভেনের সংস্কারপন্থি নেতা ও সাবেক এমপি মোহাম্মদ শামীম কায়সার লিঙ্কনকে। তার মনোনয়নকে মানতে পারছেন না তৃণমূলের নেতাকর্মীরা। এই আসনের আরেক জনপ্রিয় প্রার্থী জেলা বিএনপির সহসভাপতি ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ফারুক আহমেদকে মনোনয়ন না দিলে এই আসনটি হাতছাড়া হবে বলে দাবি করছেন নেতাকর্মীরা। 

নরসিংদী-৪ আসনে বিএনপির সম্ভ্যাব্য প্রার্থী হিসেবে সরদার সাখাওয়াত হোসেন বকুলের নাম ঘোষণা করেছে বিএনপি। সাবেক এই এমপি ওয়ান ইলেভেনে সংস্কারপন্থি ছিলেন। জিয়া পরিবারকে নিয়ে কট‚ক্তি করা ছাড়াও তার বিরুদ্ধে বিগত বছরে আওয়ামী লীগের সঙ্গে তার সখ্যতা নিয়েও নেতাকর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ রয়েছে। আওয়ামী লীগের প্রয়াত শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন তার আত্মীয় ছিলেন। ফলে বিগত দিনে তার বিরুদ্ধে কোনো মামলা-হামলা, এমনকি তাকে কারাগারেও যেতে হয়নি। এখানে ছাত্রদলের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি ও স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাদির ভূঁইয়া জুয়েল বছরের পর বছর কাজ করছেন, সংগঠনকে শক্তিশালী করেছেন। মামলা-হামলায় জর্জরিত এই নেতাকে মনোনয়ন না দেয়ায় নেতাকর্মীরা হতাশ।

শূন্য আসনের ভাবনায় নেতাকর্মীরা : টাঙ্গাইল-৫ আসনে কোনো প্রার্থী ঘোষণা করেনি বিএনপি। এই আসনে জোটের কোনো সম্ভ্যাব্য প্রার্থীও নেই। তারপরও কেন এই আসনে প্রার্থী ঘোষণা করা হয়নি তা নিয়ে ক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা। তারা বলছেন, এই আসনে হেভিওয়েট আর জনপ্রিয় নেতা হিসেবে দলের কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছেন, দলকে সংগঠিত করছেন, সাধারণ মানুষের কাছে দলকে নিয়ে গেছেন। কিন্তু তাকে মনোনয়ন না দিয়ে আসন ফাঁকা রাখায় যেমন ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে তেমনি হতাশাও কাজ করছে তাদের মধ্যে। 

সদর থানা বিএনপি নেতা আশরাফুল ইসলাম বলেন, তাদের প্রতিপক্ষ জামায়াত যেখানে এক বছর আগে তাদের প্রার্থী ঘোষণা করে নির্বাচনী মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন সেখানে টাঙ্গাইল সদরের মতো গুরুত্বপূর্ণ আসনটি ফাঁকা রেখেছে বিএনপি। এতে নির্বাচনের প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়ছেন তারা। সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু শুধু এই আসন নয়, পুরো জেলায় সমাদৃত আর অধিক জনপ্রিয়। তার মতো নেতার আসন ফাঁকা রাখায় তারা হতাশ। 

একইভাবে ঝিনাইদাহ-৪ আসনে ২০১৮ সালে নির্বাচন করেছিলেন সাইফুল ইসলাম ফিরোজ। এলাকায় এবারের নির্বাচনের জন্য সব প্রস্তুতিও সম্পন্ন করেছেন। কিন্তু অজ্ঞাত কারণে এই আসনের প্রার্থীও ফাঁকা রাখা হয়েছে। কেন এটা করা হয়েছে- তা নিয়ে হতাশ দলের নেতাকর্মীরা। 

পারিবারিক দ্বন্দ্বও বাড়ছে : নাটোর-১ (লালপুর-বাগাতিপাড়া) আসনে বিএনপির প্রয়াত নেতা ফজলুর রহমান পটলের ছোট মেয়ে জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট ফারজানা শারমিন পুতুলকে মনোনয়ন দিয়েছে দল। কিন্তু তার আপন বড় ভাই ও জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য, ঢাকা মেডিকেল কলেজের সাবেক ভিপি ডা. ইয়াসির আরশাদ রাজন তার বোনের প্রার্থিতা বাতিলের দাবিতে আন্দোলন করছেন। এই আসনে বিএনপির কেন্দ্রীয় সহদপ্তর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপু বিগত বছরগুলোতে দলের সাংগঠনিক তৎপরতা কিংবা নেতাকর্মীদের সংগঠিত করতে কাজ করেছেন। তবে প্রভাবশালীদের আশীর্বাদে পুতুলকেই বেছে নেয় দল। ফলে তিন ধারায় বিভক্ত এই আসনের নেতাকর্মীরা।

আরো বেশ কয়েকটি আসনে মনোনয়ন নিয়ে পারিবারিক দ্বন্দ্ব থাকলেও তা সংঘাত-সংঘর্ষে রূপ নেয়নি। তবে কোন্দলও মেটেনি। যার যার অনুসারী নিয়ে আলাদা কর্মসূচি পালন করছেন তারা।  বিএনপি গত ৩ নভেম্বর ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ২৩৭ আসনে প্রার্থীদের তালিকা ঘোষণা করে। ওই দিন থেকেই বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ করেন মনোনয়নবঞ্চিতদের কর্মী-সমর্থকরা। আগামী ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন করার ঘোষণা দিয়েছে সরকার।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

মধ্যরাতে সাংবাদিক সোহেলকে তুলে নিয়ে যাওয়ার যে ব্যাখ্যা দিলো পুলিশ

মধ্যরাতে সাংবাদিক সোহেলকে তুলে নিয়ে যাওয়ার যে ব্যাখ্যা দিলো পুলিশ

সারাদেশে হঠাৎ করেই বেড়ে গেছে খুনখারাবি

অপরাধ সারাদেশে হঠাৎ করেই বেড়ে গেছে খুনখারাবি

বিএনপি: তৃণমূলে ‘বঞ্চনা’র আগুন

বিএনপি: তৃণমূলে ‘বঞ্চনা’র আগুন

সাংবাদিক সোহেলকে তুলে নেয়ার ঘটনা খতিয়ে দেখার আশ্বাস স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার

সাংবাদিক সোহেলকে তুলে নেয়ার ঘটনা খতিয়ে দেখার আশ্বাস স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার

সব খবর

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App