হাদি আমার সন্তানতূল্য, প্রতিদ্বন্দ্বী নন: মির্জা আব্বাস
কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৬:১১ পিএম
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস। ছবি : সংগৃহীত
ঢাকা-৮ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী শরীফ ওসমান হাদিকে নিজের সন্তানতূল্য উল্লেখ করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেছেন, হাদি তাঁর নির্বাচনি প্রতিদ্বন্দ্বী নন, বরং একজন প্রতিযোগী। একই সঙ্গে হাসপাতালে হাদিকে দেখতে যাওয়ার সময় সৃষ্ট অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতিকে তিনি পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র বলে দাবি করেছেন।
শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) দুপুরে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপি আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
ওসমান হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার প্রতিবাদ এবং জড়িত সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তারের দাবিতে এই সমাবেশের আয়োজন করা হয়।
মির্জা আব্বাস বলেন, আমি ঢাকার ছেলে। দীর্ঘ ৫০ বছর ঢাকায় রাজনীতি করছি। আমি শান্ত ছিলাম। আমার নির্দেশ পেলে কর্মীরা তোমাদের তুলোধুনো করতে পারত, কিন্তু আমরা শান্ত না থাকলে হাদির চিকিৎসা ব্যাহত হতো।
গুলিবিদ্ধ প্রার্থীর প্রতি সহমর্মিতা জানিয়ে তিনি বলেন, হাদি আমার সন্তানতূল্য। তাকে গুলি করার খবর পেয়ে আমি মানসিকভাবে আহত হয়েছি। এই আঘাত আসলে গণতন্ত্রের ওপর আঘাত। হাদি আমার নির্বাচনি প্রতিদ্বন্দ্বী নয়, প্রতিযোগী। সে রাজপথের সাহসী সৈনিক। আমি আশা করি, তাকে আবার নির্বাচনী মাঠে সক্রিয়ভাবে পাবো।
হাসপাতালে স্লোগান ও হট্টগোলের প্রসঙ্গ তুলে মির্জা আব্বাস বলেন, দুপুর দুইটার দিকে হাদি গুলিবিদ্ধ হয়। আধাঘণ্টার মধ্যেই একটি গোষ্ঠী ফেসবুকে উত্তেজনামূলক পোস্ট দিতে শুরু করে। পরে হাসপাতালে গিয়ে বুঝতে পারি, পুরো ঘটনাই ছিল পরিকল্পিত। যারা সেখানে উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে, তারা হাদির সমর্থক নয়, তারা একটি বিশেষ দলের লোক। তাদের উদ্দেশ্য ছিল হাদির চিকিৎসা ব্যাহত করা এবং তাকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেওয়া।
আরো পড়ুন : হাদির বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে যা জানালো মেডিকেল বোর্ড
নাম উল্লেখ না করে একটি রাজনৈতিক দলের দিকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, এই দলের ষড়যন্ত্র আমরা ১৯৭১ ও ১৯৮৬ সালসহ বহুবার দেখেছি। ষড়যন্ত্রই তাদের মূল শক্তি। তারা স্থিতিশীল রাষ্ট্র সহ্য করতে পারে না। হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর তাদের এক থেকে দেড়শ মানুষ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মব তৈরির জন্য উস্কানি দিয়েছে।
তিনি আরো বলেন, আমি ১৯৭৭ সাল থেকে নির্বাচন করছি। কখনো কারও সঙ্গে মারামারি হয়নি। প্রার্থীরা একসঙ্গে কোলাকুলি করেছি, খেয়েছি। মারামারি করে আওয়ামী লীগ, আর নির্বাচন ও রাষ্ট্রকে অস্থির করে সেই বিতর্কিত রাজনৈতিক দল। আমরা চাই, হাদির ওপর হামলাকারীদের গ্রেপ্তার করা হোক এবং ওই বিশেষ দলের মুখোশ উন্মোচিত হোক।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সদস্য সচিব তানভীর আহমেদ রবিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। আরো বক্তব্য রাখেন যুগ্ম মহাসচিব আব্দুস সালাম আজাদ, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু, প্রকৌশলী ইশরাক হোসেন, যুবদলের সভাপতি আব্দুল মোনায়েম মুন্নাসহ দলের বিভিন্ন স্তরের নেতারা।
সমাবেশ শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল নয়াপল্টন থেকে শুরু হয়ে বিজয়নগর ও ফকিরাপুল মোড় ঘুরে আবার দলীয় কার্যালয়ের সামনে এসে শেষ হয়।
