কাপ্তাইয়ে পেশাদার সাংবাদিকদের করণীয় শীর্ষক আলোচনা সভা

মাহফুজ আলম, কাপ্তাই প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৮:৪৯ পিএম

ছবি: ভোরের কাগজ
জুলাই-আগস্টে যে সব ছাত্র-জনতা গণঅভ্যুত্থানে শহীদ ও হতাহতদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত হয়েছে বাংলাদেশের স্বাধীনতার পুনরুদ্ধার। তাদের স্মরণে রবিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে কাপ্তাই উপজেলা মিলনায়তন কক্ষে কাপ্তাই উপজেলা পেশাদার সাংবাদিকদের আয়োজনে আলোচনা সভার প্রাক্কালে কোরআন তেলোয়াত, ত্রিপিটক পাঠ, বাইবেল পাঠ করনের মধ্য দিয়ে শহীদ ও আহতদের স্মরণে এক মিনিট নিরাবতা পালন ও দোয়া করার মধ্যদিয়ে অন্যান্য আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়।
আলোচনা সভায় বিজয় মারমা সঞ্চালনায়, স্বাগত বক্তব্য রাখেন- রবিউল হোসেন চৌধুরী রিপন, সময় টিভি কাপ্তাই প্রতিনিধি মাহফুজ আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- সিনিয়র সাংবাদিক নেটওয়ার্ক কো-অর্ডিনেটর বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা) সাধারণ সম্পাদক চট্টগ্রাম রিপোর্টাস ফোরাম'র আলীউর রহমান, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- ডা. রহমত উল্লা, চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব সদস্য সিনিয়র সাংবাদিক এয়াকুব আলী মনি, রাঙ্গুনিয়া প্রেসক্লাব সভাপতি ইলিয়াস তালুকদার, প্রেসক্লাব সাধারণ সম্পাদক নুরুল আবসার চৌধুরী, কাপ্তাই উপজেলা বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি জাফর আহমেদ স্বপন, উপজেলা বিএনপির সহ-সভাপতি হারুন অর রশীদ রতন, উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ইয়াছিন মামুন, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলাম চন্দ্রঘোনা ইউনিয়ন শাখা আমীর লোকমান হোসেন, ওয়াগ্গা ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আনোয়ার হোসেন, সিনিয়র সাংবাদিক শান্তি রঞ্জন চাকমা, উপজেলা যুবদল সদস্য সচিব ইব্রাহিম হাবিব মিলু, উপজেলা সেচ্ছাসেবক দল আহ্বায়ক রফিকুল ইসলাম, উপজেলা ছাত্রদলের আহবায়ক সেকেন্দার আলী রাসেল, উপজেলা ছাত্র দলের সদস্য সচিব মো. ইব্রাহিম, কর্ণফুলী সরকারি কলেজ ছাত্র দলের আহবায়ক আবদুল আল মামুন (অপু) কাপ্তাই সুইডেন পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের আহত ছাত্র ওয়াহিদুল ইসলাম, কর্ণফুলী সরকারি কলেজ ছাত্র দলের সদস্য সচিব রিয়াজ উদ্দিন আকাশ, ৭১ টিভি কাপ্তাই উপজেলা প্রতিনিধি রিপন মারমা, দৈনিক দিনকাল সাংবাদিক শহিদুল ইসলাম, মো. জয়নাল আবেদীন প্রমুখ।
আলোচনা সভায় গণমাধ্যমকর্মী, ছাত্র প্রতিনিধি ও সুশীল সমাজের বক্তারা বলেন, কাপ্তাইয়ে পেশাদারিত্ব সাংবাদিকদের আয়োজনে এই প্রথম জুলাই-আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে সাংবাদিকদের করণীয় শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠানে জুলাই-আগস্টের এই অর্জনকে ধরে রাখতে হলে যেখানে অসংগতি রয়েছে সেখানে সংস্কার করণ অতি প্রয়োজন রয়েছে। সামাজিক, রাজনৈতিক, সাংবাদিকতার পরিবেশ ও বর্তমানে কাপ্তাইয়ের প্রেক্ষাপট নিয়ে সবার সুচিন্তিত মতের গুরুত্বআরোপ করা হয়।
সভায় কাপ্তাইয়ের সাংবাদিকতায় আওয়ামী লীগ ফ্যাসিষ্টদের আধিপত্য মোকাবেলায় পদক্ষেপ নিতে হবে, কারণ যদি আমরা এখনই সচেতন না হই ফ্যাসিষ্টদের প্রভাব ভবিষ্যতে আরো বিস্তৃত হবে। ওই সব অপশক্তি থেকে সতর্ক থাকতে হবে। এ অর্জিত স্বাধীনতা পুনরুদ্ধার কারো পদতলে পৃষ্ট হতে দেয়া যাবে না।
বক্তারা আরো বলেন, সমাজ, পরিবেশ, জনগণ ও দেশ রক্ষার্থের সবাইকে আন্তরিক হয়ে কাজ করতে হবে। জুলাই-আগস্টের পরে আওয়ামী ফ্যাসিস্ট সরকারের মদদে কাপ্তাইয়ের কতিপয় আমলা অতি গোপনে আওয়ামী সাংবাদিককরণে গোপন চিঠির মাধ্যমে কাপ্তাই উপজেলার বিভিন্ন দপ্তরে অবগত করে আওয়ামী সাংবাদিকদের নিযে় প্রেসক্লাব গঠনের নামে দলীয়করণ করেছিল তার প্রমাণপত্র সাংবাদিকদের হাতে রয়েছে। যেটি অত্যন্ত নেক্কারজনক ঘটনা। যার প্রমাণ কাপ্তাই উপজেলা প্রশাসনের কতিপয় আমলার মনোনিত ও স্বাক্ষরিত এক পত্রাদেশে রয়েছে। তাতে কাপ্তাই সাংবাদিকদের প্রেসক্লাব গঠনতন্ত্র পরিপন্থী ক্ষমতার অপব্যবহার করা হয়েছিল। এছাড়াও দিনের ভোট রাতেও হয়েছিল কাপ্তাইয়ের। জনগণের ভোটাধিকার প্রয়োগের বঞ্চিত করেছে যারা, তাদেরকে চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনতে হবে। তাই আমরা সংস্কারের মধ্য দিয়ে কাপ্তাই প্রেসক্লাব পুনঃগঠন করা অতি জরুরী বলে কাপ্তাই উপজেলা প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করেন নেতারা।
বক্তারা আরো বলেন, আমরা চাই জনগণের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু হোক উপজেলা প্রশাসন ও কাপ্তাই পেশাদারিত্ব সাংবাদিকদের একটি সুসংগঠিত প্রেস ক্লাব (কার্যালয়) এবং স্বাধীনভাবে যেন সাংবাদিকতা পেশা পালন করা যায় সে ব্যাপারে সবার সহযোগিতা প্রয়োজন। জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানের অর্জিত স্বাধীনতা রক্ষা করা সবার নৈতিক দায়িত্ব। অন্যথায় এর ব্যত্যয় ঘটলে সুশাসন প্রতিষ্ঠায় বিরাট বাধা হবে বলে মনে করেন বক্তারা। সর্বশেষ বক্তারা দাবি করে বলেন, যেন আমরা বলতে পারি আগামীতে উপজেলা প্রশাসন ও কাপ্তাই প্রেসক্লাব দলীয়করণ ফ্যাসিষ্ট আওয়ামী দোসর থেকে মুক্ত থাকে। এ ব্যাপারে সবার সহযোগিতা একান্ত প্রয়োজন।