বিজয়ের মাসে বিতর্কের ঝড়
ফেনীতে তালিকাভুক্ত রাজাকারকে ‘শহীদ’ আখ্যা
কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ০৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৭:৫৪ পিএম
ফেনীতে তালিকাভুক্ত রাজাকারকে ‘শহীদ’ আখ্যা
বাংলাদেশের স্বাধীনতার মাস ডিসেম্বরে ফেনী জেলা রাজনীতিতে নতুন করে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে তালিকাভুক্ত এক রাজাকারকে “শহীদ” হিসেবে উপস্থাপন করার ঘটনায়। বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তীব্র প্রতিক্রিয়া তৈরি করেছে, কারণ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিটি ২০১৯ সালে প্রকাশিত সরকারি রাজাকার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত ছিলেন।
মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে ওই ব্যক্তি পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর সহায়ক বাহিনীর সদস্য হিসেবে চিহ্নিত হন। স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধাদের হাতে আটক হওয়ার পর তাকে ফেনী শহরের ট্রাংক রোড এলাকায় একটি খেজুর গাছের সঙ্গে ঝুলিয়ে হত্যা করা হয়েছিল বলে মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কিত স্থানীয় বয়োজ্যেষ্ঠদের বর্ণনা রয়েছে।
তবে সাম্প্রতিক সময়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জেলা জামায়াতে ইসলামীর আমির আবদুল হান্নানসহ–সংশ্লিষ্ট কয়েকজন নেতা তাকে “শহীদ” হিসেবে অভিহিত করছেন। বিষয়টি আরও আলোচনার জন্ম দিয়েছে, কারণ একটি পোস্টে দেখা গেছে, জামায়াতে ইসলামীর ফেনী জেলা আমির আবদুল হান্নান তার ভেরিফায়েড পেজ থেকে ওই রাজাকারের কবরের ছবি প্রকাশ করেছেন। সেখানে জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আনোয়ার হোসেন পাটোয়ারীকেও উপস্থিত দেখা গেছে।
স্বাধীনতার মাসে এমন পোস্ট প্রকাশ ও রাজনৈতিক নেতাদের উপস্থিতিতে নতুন করে ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে সাধারণ মানুষের মধ্যে। নেটিজেনদের অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন, “একজন তালিকাভুক্ত রাজাকারকে শহীদ বানানো কি মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সঙ্গে সংগতিপূর্ণ?”
বিভিন্ন মুক্তিযোদ্ধা, গবেষক ও নাগরিক সমাজের সদস্যরা মন্তব্য করছেন, স্বাধীনতা যুদ্ধের নথিবদ্ধ ইতিহাসকে রাজনৈতিক স্বার্থে বিকৃত করার যে প্রবণতা দীর্ঘদিন ধরে চলমান, এই ঘটনা তার আরেকটি উদাহরণ।
২০১৯ সালে সরকার যে ১০,৭৮৯ জনের প্রথম রাজাকার তালিকা প্রকাশ করে তাতে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির নাম ছিল বলে স্থানীয় সূত্র জানিয়েছে। সেই প্রেক্ষাপটে তাকে “শহীদ” হিসেবে উপস্থাপন করা মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে পুনর্লিখন করার সমতুল্য বলে মনে করছেন অনেকে।
এ বিষয়ে বিএনপি বা জামায়াতে ইসলামী এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক মন্তব্য দেয়নি।
