মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে হত্যার ঘটনায় সেই গৃহকর্মী গ্রেপ্তার
কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ১০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২:৫৬ পিএম
ছবি : সংগৃহীত
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা ও মেয়ে হত্যার ঘটনায় মূল আসামি গৃহকর্মী আয়েশাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বুধবার (১০ ডিসেম্বর) দুপুরে পুলিশের একটি সূত্র থেকে জানা যায় বরিশালের নলছিটি এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
এর আগে সোমবার (৮ ডিসেম্বর) কথিত গৃহকর্মী আয়েশা, মা লায়লা ফিরোজ (৪৮) ও মেয়ে নাফিসা লাওয়াল বিনতে আজিজকে (১৫) হত্যা করে পালিয়ে যান। সকাল ৭টা ৫১ মিনিটে তিনি বোরকা পরে লিফটে উঠে ৭ তলায় যান। পরে সকাল ৯টা ৩৫ মিনিটে মুখে মাস্ক লাগিয়ে কাঁধে একটি ব্যাগ ও স্কুল ড্রেস পরে বেরিয়ে যান। নিহত নাফিসা মোহাম্মদপুর প্রিপারেটরি স্কুলের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল।
গত সোমবার সকালে মোহাম্মদপুরের শাহজাহান রোডের একটি বহুতল ভবনের সপ্তম তলায় লায়লা আফরোজ ও তার মেয়েকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। ঘটনার সময় লায়লার স্বামী আজিজুল ইসলাম বাসার বাইরে ছিলেন। রাতেই তিনি অজ্ঞাত গৃহকর্মীকে একমাত্র আসামি করে মোহাম্মদপুর থানায় মামলা করেন।
আরো পড়ুন : মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে খুন, নতুন যে তথ্য দিলো পুলিশ
ঘটনার পর ভবনের এক নিরাপত্তাকর্মীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছিল পুলিশ। পরে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
মোহাম্মদপুর থানার ওসি মেজবাহ উদ্দিন মঙ্গলবার রাতে জানান, নিরাপত্তাকর্মী স্বীকার করেছেন যে লায়লা আফরোজের পরিবারের প্রয়োজনীয়তা অনুযায়ী তিনি চার দিন আগে এক অচেনা নারীকে গৃহকর্মীর কাজের জন্য বাসায় নিয়ে গিয়েছিলেন। তার সঙ্গে নিরাপত্তাকর্মীর পূর্বপরিচয় ছিল না।
নিহতদের স্বজনরাও নিশ্চিত করেছেন, ওই নারী সকালে এসে কাজ করতেন এবং বিকালে চলে যেতেন। পরিচয় ও ফোন নম্বর জানতে চাইলে তিনি নানা অজুহাতে তা দিতে অস্বীকার করেছিলেন।
পেশায় শিক্ষক আজিজুল ইসলাম জানান, সোমবার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে তিনি কর্মস্থল উত্তরা চলে যান। পরে স্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ না পেয়ে বেলা ১১টার দিকে বাসায় ফিরে দেখেন, স্ত্রী রক্তাক্ত অবস্থায় মৃত পড়ে আছেন এবং গুরুতর জখম অবস্থায় মেয়েকে তিনি হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
মামলায় তিনি উল্লেখ করেন, সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে, সকাল ৭টা ৫১ মিনিটে গৃহকর্মী বাসায় প্রবেশ করেন এবং সকাল ৯টা ৩৫ মিনিটে মেয়ের স্কুলড্রেস পরে বাসা ছেড়ে চলে যান। যাওয়ার সময় তিনি একটি ফোন, ল্যাপটপ, স্বর্ণালংকার, নগদ টাকা ও অন্যান্য মূল্যবান সামগ্রী নিয়ে যান।
এদিকে নিহত মা–মেয়েকে মঙ্গলবার তাদের গ্রামের বাড়ি নাটোরে দাফন করা হয়। নবাব সিরাজ–উদ–দৌলা সরকারি কলেজ মাঠে জানাজা শেষে স্থানীয় কবরস্থানে তাদের দাফন সম্পন্ন হয়। মরদেহ পৌঁছালে স্বজন ও স্থানীয়দের আহাজারিতে এলাকাজুড়ে শোকের আবহ নেমে আসে। জানাজার আগে স্বজনরা দ্রুত সময়ের মধ্যে হত্যাকারীকে গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।
