সালমান শাহর মৃত্যুর চাঞ্চল্যকর রহস্য প্রকাশ!

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৪:০০ পিএম

নায়ক সালমান শাহ। ছবি : সংগৃহীত
নায়ক সালমান শাহর মৃত্যুর চাঞ্চল্যকর ১০টি রহস্য প্রকাশ করে রাষ্ট্রের কাছে তার বিচার চেয়েছেন অভিনেতার মামা আলমগীর কুমকুম। তিনি বিশ্বাস করেন, এটি আত্মহত্যা নয়, বরং সুপরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে।
একটি গণমাধ্যমে দেওয়া বিশেষ সাক্ষাৎকারে আলমগীর কুমকুম দাবি করেন, সালমান শাহর মৃত্যুর পেছনে তার সাবেক স্ত্রী সামিরা হককে দায়ী। সামিরার সঙ্গে সম্পর্কিত কিছু রহস্যময় ঘটনার দীর্ঘ সময় পেরিয়ে গেলেও আজও যুক্তিসঙ্গত কোনো উত্তর মেলেনি।
তিনি মনে করেন, রাজনৈতিক কারণে এতদিন সালমান শাহর হত্যার সঙ্গে জড়িত খুনিরা শাস্তি পায়নি। এবার তিনি বিশেষ করে সামিরার শাস্তি দাবি করেন। আলমগীর কুমকুম বলেন, মৃত্যুর আগে সালমান বাথরুম থেকে ফোন করে তাকে জানিয়েছিলেন, মামা, আমি ডিভোর্স পেপারে সাইন করে চলে আসছি। সেই সময় সামিরা বিষয়টি শুনে তাদের মধ্যে ঝগড়া হয়।
মারা যাওয়ার খবর পেয়ে সালমান শাহর বাড়িতে গেলে তিনি টেবিলে ছড়িয়ে থাকা নষ্ট খাবার দেখেন। এটি প্রমাণ করে রাতের খাবারও খাননি সালমান। তিনি হয়তো নিজের শোবার বালিশ নিয়ে ড্রেসিং রুমে চলে গিয়েছিলেন।
সামিরার বিরুদ্ধে অভিযোগ করে আলমগীর কুমকুম বলেন, সামিরা হয়তো লোকজনকে ফোন করে ডিভোর্সের বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেছে এবং ফ্ল্যাটে আসার নির্দেশ দিয়েছে। তিনি আরো বলেন, সালমানের মৃত্যুর প্রমাণ যেমন আঙুলের ছাপ, ছবি রয়েছে যাতে হত্যার প্রমাণ পাওয়া যেত বলে তার অনুমান।
আরো পড়ুন : দর্শক হৃদয়ে আজও অমর কিংবদন্তি নায়ক সালমান শাহ
এরপর তিনি চাঞ্চল্যকর ও প্রশ্নবিদ্ধ ১০টি তথ্য তুলে ধরেন, যেগুলো আজও প্রকাশ্যে আসেনি। একইসঙ্গে তিনি এই মৃত্যুকে হত্যাকাণ্ড দাবি করে এর বিচার দাবি করেন:
১. মৃত্যুর আগে সালমানের ব্যবহৃত সেলফোনটি আজও পাওয়া যায়নি। ওই ফোনে অনেক প্রমাণ লুকিয়ে থাকায় সেটির হদিশ নেই।
২. মৃত্যুর আগের কয়েক দিনের কলরেকর্ডগুলো প্রকাশ্যে আনা হয়নি।
৩. সালমান শাহর মৃত্যুর পর প্রথম যখন ফ্ল্যাট খোলা হয় তখন ডিপিডিসি বজলুর করিম সাহেব ও পুলিশ কর্মকর্তারা ছিলেন। তারা প্রথমে ফাঁসির দড়িটি মাপেন। সালমান শাহ যতটুকু লম্বা এবং ওর গলায় যেখানে ফাঁসির দাগ সে অনুযায়ী ঝোলানো রশি পরিমাপ করে দেখা যায়, সালমান শাহর পা মাটিকে স্পর্শ করে। তাহলে কীভাবে সালমান শাহর মৃত্যু হলো তার রহস্য এখনো প্রকাশ্যে আনা হয়নি।
৪. জানালার পর্দা ছেঁড়া ও জানালার গ্লাসে অসংখ্য আঙুলের ছাপ ছিল। এটি কেন জানতে চান তিনি।
৫. বাথরুমে পাওয়া গেছে লক করা একটি স্যুটকেস। তাতে ছিল ভেজা কাপড়। এর রহস্য কী?
৬. ফ্লোরে পাওয়া গেছে ডানহিল সিগারেট। কোনো ভদ্রলোক সিগারেট খেলে সেটি কি তার নিজের ঘরে ফ্লোরে ফেলবে, প্রশ্ন তার। তিনি বলেন, এ সিগারেট সালমান শাহ খায় না। তাহলে ওই সিগারেট কার?
৭. পাশের বাসার প্রতিবেশি সাক্ষী দিয়েছে, মধ্যরাতে সালমান শাহর ড্রেসিং রুমে মারামারি হয়েছে তারা জানালা দিয়ে দেখেছে। তবে স্পষ্ট দেখেননি। তারা মনে করেছেন, স্বামী-স্ত্রীর ঝগড়া। ওই দিন ড্রেসিং রুমে কী ঘটেছিল সে সঠিক তথ্য আমরা কেন বের করবো?
৮. ফ্যানে ঝুলতে দেখে সামিরা বলেছে, সে রশি কেটে সালমানকে নামায়। এরপর তাকে গোসল করায়। তার শরীরে তেল মালিশ করে। কীভাবে এটা সম্ভব? এ দৃশ্য দেখে পাশের ফ্ল্যাটের লোকজনদের ডাকার কথা। দ্রুত হাসপাতালে না নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করার কথা। তা না করে সালমানকে গোসল করালো। নতুন হাফপ্যান্ট পরালো কেন?
৯. তাড়াহুড়ায় সে হাফ প্যান্টের স্টিকারও খোলা হয়নি দেখেছিলাম। হাসপাতালে না নিয়ে দুই চারজনকে দিয়ে নিথর শরীরে তেল মালিশ করিয়েছে সামিরা। এ তেল মালিশের কারণ কী?
১০. পরিবারের কেউ মারা গেলে পুলিশ মৃত্যুর সঠিক কারন জানতে পরিবারের সদস্যদের জেরা করে। প্রয়োজনে রিমান্ডে নেবে। এটাই আইনি প্রক্রিয়া। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় হলো সালমানের হঠাৎ মৃত্যুকে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেয়া হয়। এ কারণে বাড়ির ৪ জনের কাউকেই (দুই গৃহকর্মী ডলি ও মনোয়ারা, কাজের লোক আবুল, স্ত্রী সামিরা) থানায় নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়নি। এর কারণ কী?
প্রসঙ্গত, ১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর রাজধানীর নিউ ইস্কাটন রোডের ইস্কাটন প্লাজার একটি ফ্ল্যাটে মারা যান ঢালিউডের ‘স্বপ্নের নায়ক’ খ্যাত সালমান শাহ। তার স্ত্রী সামিরা হক মৃত্যুকে আত্মহত্যা দাবি করলেও পরিবার সুপরিকল্পিত হত্যার দাবি করছে।