বিডা চেয়ারম্যান
৭ ট্রিলিয়ন ডলারের হালাল অর্থনীতিতে আঞ্চলিক হাব হতে চায় বাংলাদেশ

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ০৪ আগস্ট ২০২৫, ০৮:১৮ এএম

চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন। ছবি : সংগৃহীত
বৈশ্বিক ৭ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলারের হালাল অর্থনীতিতে শক্ত অবস্থান তৈরি করতে বাংলাদেশের লক্ষ্য ও প্রস্তুতির কথা জানিয়েছেন বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) এবং বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের (বেজা) নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন।
রবিবার (৩ আগস্ট) রাজধানীর এক হোটেলে ‘হালাল ইকোনমি ৩৬০ : ড্রাইভিং গ্লোবাল গ্রোথ’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
আশিক বলেন, হালাল অর্থনীতির সহায়ক অবকাঠামো গড়ে তোলার মাধ্যমে বাংলাদেশকে এই খাতের আঞ্চলিক কেন্দ্রবিন্দুতে রূপান্তরের জন্য সরকার কাজ করছে।
আরো পড়ুন : চার শ্রেণি ছাড়া অনলাইনে আয়কর রিটার্ন দাখিল বাধ্যতামূলক
বাংলাদেশ-মালয়েশিয়া চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (বিএমসিসিআই) আয়োজিত এই সেমিনারে হালাল অর্থনীতির টেকসই প্রবৃদ্ধি, বিপুল বাজার সম্ভাবনা এবং মালয়েশিয়ার সঙ্গে অংশীদারিত্ব নিয়ে আলোচনা হয়।
বিডা চেয়ারম্যান বলেন, ‘বিশ্বের বেশির ভাগ হালাল পণ্য এখনো অমুসলিম দেশগুলোই উৎপাদন করে, যা আমাদের জন্য বিব্রতকর হলেও নতুন সুযোগের দুয়ারও খুলে দিয়েছে। সঠিক নীতিমালা, সহজ সনদ প্রক্রিয়া ও বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ তৈরি করে বাংলাদেশ এ খাতে বড় অবদান রাখতে পারে।
তিনি বলেন, হালাল পণ্য উৎপাদন ও রপ্তানি বাড়াতে সরকারি-বেসরকারি খাতের মধ্যে কার্যকর সমন্বয় ও অংশীদারিত্ব অপরিহার্য। এ ক্ষেত্রে সবাইকে একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানান তিনি।
সেমিনারে বিএমসিসিআই সভাপতি সাব্বির এ খান বলেন, হালাল অর্থনীতি এখন বৈশ্বিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগের গুরুত্বপূর্ণ চালিকাশক্তি। তৈরি পোশাকের বাইরে বাংলাদেশ হালাল পণ্যের গুরুত্বপূর্ণ যোগানদাতা হয়ে উঠতে পারে।
বিএমসিসিআই সভাপতি বলেন, সঠিক নীতি ও সনদ প্রক্রিয়া সহজ হলে শুধু মালয়েশিয়াতেই ২০৩০ সালের মধ্যে ৭-৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের হালাল পণ্য রপ্তানির সুযোগ তৈরি হবে।
তিনি আরো বলেন, ২০২৫ সালে বৈশ্বিক হালাল খাদ্যবাজারের আকার ৩.৩০ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার ছাড়াবে এবং ২০৩৪ সালের মধ্যে এটি ৯.৪৫ ট্রিলিয়ন ডলারে পৌঁছাতে পারে, যেখানে বার্ষিক গড় প্রবৃদ্ধির হার থাকবে ১২.৪২ শতাংশ।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত মালয়েশিয়ার হাইকমিশনার মোহাম্মদ শুহাদা ওসমান। তিনি বলেন, হালাল অর্থনীতি গড়ে তুলতে মালয়েশিয়ার অভিজ্ঞতা বাংলাদেশের সঙ্গে ভাগাভাগি করতে তার দেশ প্রস্তুত আছে।
বর্তমানে বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়ার মধ্যে বাণিজ্যে ভারসাম্যহীনতা থাকলেও হালাল অর্থনীতির উন্নয়নের মাধ্যমে তা উল্লেখযোগ্যভাবে কমানো সম্ভব বলে মত দেন বক্তারা। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বাংলাদেশ যেখানে মালয়েশিয়া থেকে প্রায় ২.৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের পণ্য আমদানি করেছে, সেখানে রপ্তানি হয়েছে মাত্র ২৯৩.৫১ মিলিয়ন ডলার।
সবশেষে অংশীজনরা জানান, হালাল অর্থনীতি হতে পারে বাংলাদেশের জন্য নতুন একটি রপ্তানি ভিত্তি, যা দেশের অর্থনীতিকে আরো বহুমাত্রিক ও টেকসই করবে।