রাজনৈতিক অনিশ্চয়তায় স্থগিত আইএমএফ ঋণের কিস্তি

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ২২ অক্টোবর ২০২৫, ০৪:৫৬ পিএম

ছবি : সংগৃহীত
বাংলাদেশ সরকারের আইএমএফের সঙ্গে চুক্তি করা ৪.৭ বিলিয়ন ডলারের ঋণের ৬ষ্ঠ কিস্তি ঋণ অর্থাৎ প্রায় ৮০ কোটি ডলার ডিসেম্বরের শেষ বা আগামী জানুয়ারির প্রথমার্ধে পাওয়ার কথা ছিল। তবে ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর যে রাজনৈতিক সরকার আসবে, তারা ঋণের শর্ত মানবে কি-না, সেই নিশ্চয়তা না পাওয়ায় কিস্তি ছাড় স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সংস্থাটি।
ওয়াশিংটনে আইএমএফ ও বিশ্বব্যাংকের বার্ষিক সম্মেলনে বাংলাদেশকে এমন বার্তা দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ ও বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর।
ডলার সংকটের সময় আওয়ামী লীগ সরকার আইএমএফের কাছ থেকে ৪.৭ বিলিয়ন ডলার ঋণ চুক্তি স্বাক্ষর করে। বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর আরো ৮০০ মিলিয়ন ডলার ঋণ চুক্তি করা হয়। ফলে মোট ৫.৫ বিলিয়ন ডলারের মধ্যে পাঁচ কিস্তি পর্যন্ত প্রায় ৩ বিলিয়ন ডলার বাংলাদেশ পেয়েছে। ৬ষ্ঠ কিস্তি ডিসেম্বরে, ৭ম কিস্তি আগামী জুনে পাওয়ার কথা রয়েছে।
আরো পড়ুন : বিএনপি তত্ত্বাবধায়ক নয়, নিরপেক্ষ সরকার চায়: আসিফ নজরুল
সাধারণত প্রতি কিস্তি ছাড়ের আগে আইএমএফের দেওয়া শর্তগুলো বাস্তবায়ন হয়েছে কি-না তা যাচাই করতে সংস্থার একটি মিশন দুই সপ্তাহের জন্য বাংলাদেশে আসে। ৬ষ্ঠ কিস্তি ছাড়ের আগে এই মিশন আগামী ২৯ অক্টোবর দেশে এসে প্রতিবেদন দেবে।
অর্থ মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ৬ষ্ঠ কিস্তির পূর্বশর্তে সব শর্ত পূরণ করা হলেও শুধুমাত্র রাজস্ব আহরণের শর্ত পূরণ করা যায়নি। বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর জানিয়েছেন, সব শর্ত পূরণ করলেও, রাজনৈতিক সরকার এই শর্তগুলো মানবে কি-না নিশ্চিত হওয়ার পরই কিস্তি ছাড় হবে।
অর্থ উপদেষ্টা জানিয়েছেন, আইএমএফ ঋণের আগামী কিস্তি অর্থ ডিসেম্বরের বদলে মার্চ-এপ্রিলে ছাড়া হতে পারে। তবে, কেন্দ্রীয় ব্যাংক সূত্র বলছে, দেশে রেমিট্যান্স প্রবাহ ভালো, রপ্তানি আয় সামান্য হলেও গত তিন মাসে প্রবৃদ্ধি ৫.৫ শতাংশ, রেমিট্যান্স বেড়েছে ১৬ শতাংশ, আমদানি ব্যয় নিয়ন্ত্রণে এবং বকেয়া ঋণ সিঙ্গেল ডিজিটে। ফলে ৬ষ্ঠ কিস্তি ছাড় না করলেও বৈদেশিক মুদ্রার স্থিতিশীলতায় কোনো সমস্যা হবে না।
উল্লেখ্য, ২০২২ সালের শেষদিকে বৈশ্বিক মন্দার প্রভাব মোকাবিলায় তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার আইএমএফের কাছে ঋণ সহায়তা চায়। ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে ৪৭০ কোটি ডলার অনুমোদন করে সংস্থাটি। নতুন সরকারের সময় ঋণ কর্মসূচি ৮০ কোটি ডলার বাড়িয়ে ৫৫০ কোটি ডলারে উন্নীত করা হয়। ইতোমধ্যে পাঁচ কিস্তি বাবদ ৩৬০ কোটি ডলার ছাড় হয়েছে।