প্রাথমিক শিক্ষকদের শাটডাউন শুরু, বার্ষিক পরীক্ষা স্থগিত
কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ০৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০:২০ এএম
ছবি : সংগৃহীত
সারাদেশের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বুধবার (৩ ডিসেম্বর) থেকে ‘শাটডাউন’ কর্মসূচি শুরু করেছে প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদ।
তিন দফা দাবি বাস্তবায়নে সরকারের দৃশ্যমান অগ্রগতি না থাকা এবং তিন শিক্ষক নেতাকে শোকজ নোটিশ দেওয়ার প্রতিবাদে এই কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে। ফলে টানা তৃতীয় দিনের মতো স্থগিত থাকছে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বার্ষিক পরীক্ষা।
মঙ্গলবার (২ ডিসেম্বর) পরিষদের আহ্বায়ক মোহাম্মদ শামছুদ্দীন বলেন, সরকারের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী কোনো অগ্রগতি নেই। উল্টো তিন শিক্ষক নেতাকে শোকজ করা হয়েছে। তাই দেশব্যাপী আন্দোলন জোরদার করা ছাড়া আর কোনো পথ নেই।
শিক্ষকদের অভিযোগ, অর্থ মন্ত্রণালয়ের ঘোষিত প্রতিশ্রুতির পর ২২ দিন পার হলেও তিন দফা দাবি বাস্তবায়নে কোনো উদ্যোগ দেখা যায়নি। এজন্য বুধবার থেকে পরীক্ষা বর্জনের পাশাপাশি ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি চলবে বলে জানিয়েছেন তারা।
সংগঠন সূত্র জানায়, অর্থ মন্ত্রণালয়ের কমিটমেন্ট অনুযায়ী অন্তত সহকারী শিক্ষকদের ১১তম গ্রেডসহ তিন দফা দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন অব্যাহত থাকবে। পাশাপাশি দাবি উপস্থাপনের অভিযোগে সংগঠনের আহ্বায়ক মো. আবুল কাসেম, মোহাম্মদ শামছুদ্দিন মাসুদ, খাইরুন নাহার লিপি, মু. মাহবুবুর রহমান এবং ২০২৩ ও ২০২৫ ব্যাচের শিক্ষকদের শোকজ নোটিশ দেওয়ার প্রতিবাদে বিক্ষোভ কর্মসূচিও ঘোষণা করা হয়েছে।
এর অংশ হিসেবে আজ বেলা ১১টায় দেশের প্রতিটি উপজেলা শিক্ষা অফিসের সামনে প্রতিবাদ সমাবেশ করবে শিক্ষকরা।
প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের তিন দফা দাবি হলো—
১. সহকারী শিক্ষকদের বেতন স্কেল ১০ম গ্রেডে উন্নীত করা।
২. ১০ ও ১৬ বছর পূর্তিতে উচ্চতর গ্রেড পাওয়ার জটিলতা দূর করা।
৩. সহকারী শিক্ষক থেকে প্রধান শিক্ষক পদে শতভাগ বিভাগীয় পদোন্নতির ব্যবস্থা করা।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর (ডিপিই) সূত্রে জানা গেছে, দেশে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে ৬৫ হাজার ৫৬৯টি, যেখানে কর্মরত শিক্ষক সংখ্যা তিন লাখ ৮৪ হাজারের বেশি। প্রধান শিক্ষকরা ইতোমধ্যে ১০ম গ্রেডে গেলেও সহকারী শিক্ষকরা এখনও ১৩তম গ্রেডে রয়েছেন। গ্রেড উন্নীতকরণ, উচ্চতর গ্রেড–সংক্রান্ত জটিলতা সমাধানসহ এসব দাবি দীর্ঘদিন ধরে জানিয়ে আসছেন তারা।
এর আগে ৮–১২ নভেম্বর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অবস্থান কর্মসূচি পালনকালে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে দেড় শতাধিক শিক্ষক আহত হন। পরে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং অর্থ মন্ত্রণালয়ের আশ্বাসে কর্মস্থলে ফিরলেও প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়ন না হওয়ায় শিক্ষকরা পুনরায় কর্মবিরতিতে ফেরেন।
