আজ জাতির উদ্দেশে প্রধান উপদেষ্টার ভাষণ, জানাতে পারেন নির্বাচনের সম্ভাব্য তারিখ

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ০৫ আগস্ট ২০২৫, ০৮:৩২ এএম

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ছবি : সংগৃহীত
ছাত্র-জনতার রক্তক্ষয়ী গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের এক বছর পূর্ণ হচ্ছে আজ মঙ্গলবার (৫ আগস্ট)। এই দিনটিকে কেন্দ্র করে জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ পাঠ করবেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
সরকারি সূত্রে জানা গেছে, এদিন রাতে জাতির উদ্দেশে ভাষণও দিতে পারেন তিনি। এতে তিনি জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সম্ভাব্য সময়সূচি অর্থাৎ ২০২৬ সালের কোন মাসে ভোট হতে পারে তা ঘোষণা করতে পারেন। একইসঙ্গে অন্তর্বর্তী সরকারের এক বছরের অগ্রগতি, জুলাই গণহত্যার বিচার কার্যক্রম ও চলমান রাজনৈতিক সংস্কার বিষয়েও বিস্তারিত তুলে ধরার সম্ভাবনা রয়েছে।
জানা গেছে, বিকেল ৫টায় দক্ষিণ প্লাজায় ঘোষণাপত্র পাঠের আনুষ্ঠানিকতা শেষে রাত আটটার দিকে (সম্ভাব্য) জাতির উদ্দেশে তার ভাষণ প্রচারিত হতে পারে।
এ বিষয়ে উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য এবং বিদ্যুৎ, জ্বালানি, সেতু ও রেলপথ–বিষয়ক উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান জানিয়েছেন, প্রধান উপদেষ্টা রাতেই ভাষণ দেবেন, তবে নির্দিষ্ট সময় পরে জানানো হবে।
আরো পড়ুন : ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ পাঠ করবেন প্রধান উপদেষ্টা
সরকারের একটি মন্ত্রণালয় সূত্র আরো জানায়, ভাষণে জাতীয় নির্বাচনের সময়রেখা তুলে ধরার পাশাপাশি নির্বাচন কমিশনকে তফসিল ঘোষণার আহ্বান জানানো হতে পারে।
২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার পদত্যাগ করলে ৮ আগস্ট অধ্যাপক ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়। যদিও প্রথমে ৮ আগস্ট ভাষণ দেওয়ার পরিকল্পনা ছিল, পরে সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে আজ ৫ আগস্টেই ভাষণ দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।
প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের এক কর্মকর্তা জানান, ভাষণে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের মাধ্যমে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপে যেসব বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে তার বাস্তবায়ন পরিকল্পনাও তুলে ধরা হবে।
নির্বাচনের সম্ভাব্য সময় সম্পর্কে একটি আভাস মিলেছে গত ১৩ জুন লন্ডনে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে ইউনূসের বৈঠকের পর। বৈঠক শেষে প্রকাশিত যৌথ বিবৃতিতে জানানো হয়, এপ্রিলের প্রথমার্ধে ভোট অনুষ্ঠিত হতে পারে, তবে রমজানের আগেও তা আয়োজন সম্ভব যদি প্রয়োজনীয় বিচার ও সংস্কার কাজ যথাযথভাবে অগ্রসর হয়।
নির্বাচন কমিশনের প্রস্তুতির বিষয়ে জানতে চাইলে ইসির সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ বলেন, প্রধান উপদেষ্টার ঘোষণার জন্য কমিশন প্রস্তুত আছে। তফসিল কবে ঘোষণা হবে তা কমিশনের একান্ত সিদ্ধান্তের বিষয়, তবে সব প্রস্তুতি প্রায় চূড়ান্ত।
তিনি আরো জানান, প্রধান উপদেষ্টা যেই টাইমলাইন দিয়েছেন, ইসি সেই অনুযায়ী পরিকল্পনা করছে।
এর আগে গত ২৬ জুলাই রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় ১৪টি রাজনৈতিক দল ও জোটের সঙ্গে সংলাপে বসেন ইউনূস। সেখানে তিনি জানান, চার থেকে পাঁচ দিনের মধ্যে নির্বাচনের সময়সূচি জানানো হবে। সংলাপ শেষে জাতীয় পার্টি (কাজী জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার জানান, তিনি আশ্বস্ত হয়েছেন নির্বাচনের নির্দিষ্ট সময়সূচি শিগগিরই প্রকাশ হবে।
পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর শীর্ষ পর্যায়ের সঙ্গে গত ২৮ জুলাই নির্বাচনী প্রস্তুতি নিয়ে বৈঠক করেন প্রধান উপদেষ্টা। সেখানে সেনাবাহিনী, পুলিশ ও মাঠ প্রশাসনের মধ্যে সমন্বয় জোরদারে নির্দেশ দেওয়া হয়।
প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানান, সেপ্টেম্বর থেকে প্রায় দেড় লাখ পুলিশ সদস্যকে নির্বাচনী প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে, যা অক্টোবর-নভেম্বর পর্যন্ত চলবে। ইতোমধ্যে সেনাবাহিনীর সদস্যরা ৫ আগস্ট থেকে মাঠে সক্রিয় হয়েছেন এবং তাদের বিচারিক ক্ষমতা থাকবে নির্বাচনের সময়। পরিকল্পনা অনুযায়ী, মোট ৬০ হাজার সেনাসদস্য নির্বাচনে দায়িত্ব পালন করবেন।