সকালে খালি পেটে টমেটো খাওয়ার উপকারিতা

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৯:১১ এএম

ছবি: সংগৃহীত
টমেটো শুধুমাত্র রান্নার একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান নয়, এটি পুষ্টিগুণে ভরপুর একটি সুপারফুড। বিশেষ করে, সকালে খালি পেটে টমেটো খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারী। এতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ভিটামিন এবং খনিজ উপাদান শরীরের বিভিন্ন কার্যক্রমকে উন্নত করতে সহায়তা করে। চলুন জেনে নেয়া যাক সকালে খালি পেটে টমেটো খাওয়ার কিছু গুরুত্বপূর্ণ উপকারিতা।
১. হজমশক্তি বাড়ায়
সকালে খালি পেটে টমেটো খাওয়া হজমশক্তি উন্নত করতে সাহায্য করে। এতে থাকা ফাইবার অন্ত্রের কার্যকারিতা বৃদ্ধি করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধ করে। এছাড়া, টমেটোর প্রাকৃতিক অ্যাসিড পাকস্থলীতে হজমকারক এনজাইম উৎপাদনে সহায়তা করে।
২. ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করে
টমেটোতে প্রচুর পরিমাণে লাইকোপিন নামক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে, যা ত্বককে সুরক্ষিত রাখে এবং উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করে। এটি সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মি থেকে ত্বককে রক্ষা করে এবং ব্রণ ও অন্যান্য ত্বকের সমস্যার সমাধান করতে সাহায্য করে।
৩. ওজন কমাতে সহায়ক
ওজন কমানোর জন্য যারা স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস অনুসরণ করেন, তাদের জন্য টমেটো একটি চমৎকার খাদ্য উপাদান। টমেটোতে ক্যালোরির পরিমাণ কম থাকলেও এটি দীর্ঘ সময় ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারে, ফলে অতিরিক্ত খাবার গ্রহণের প্রবণতা কমে যায়।
৪. হার্টের স্বাস্থ্য রক্ষা করে
টমেটোতে পটাসিয়াম এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে, যা হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে। এটি রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে এবং কোলেস্টেরলের মাত্রা কমিয়ে হার্টের স্বাস্থ্য ভালো রাখে।
৫. ডিটক্সিফিকেশন প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করে
টমেটো শরীরের ক্ষতিকর টক্সিন দূর করতে সহায়তা করে। সকালে খালি পেটে টমেটো খেলে এটি লিভারের কার্যকারিতা বৃদ্ধি করে এবং শরীরকে ভেতর থেকে পরিষ্কার রাখে।
৬. ক্যান্সার প্রতিরোধে সহায়ক
টমেটোতে উপস্থিত লাইকোপিন এবং অন্যান্য অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বিভিন্ন ধরনের ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে। বিশেষ করে, প্রোস্টেট, ফুসফুস এবং পাকস্থলীর ক্যান্সার প্রতিরোধে টমেটো কার্যকর ভূমিকা পালন করে।
৭. মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটায়
টমেটোতে থাকা গুরুত্বপূর্ণ খনিজ এবং ভিটামিন যেমন পটাসিয়াম ও ফোলেট মস্তিষ্কের কার্যকারিতা উন্নত করে। এটি উদ্বেগ ও মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করে এবং মস্তিষ্ককে সুস্থ রাখে।
টমেটো খাওয়ার অপকারিতা
অবশ্যই পরিমিত টমেটো খেতে হবে। কারণ টমেটোতে থাকা বিভিন্ন উপাদান হজমের সমস্যা থেকে শুরু করে কিডনির রোগ পর্যন্ত হতে পারে। যাদের গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা রয়েছে, তারা চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে টমেটো খাওয়া উচিত। বেশি টমেটো খাওয়ার কয়েকটি পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে জেনেনিন-
১. টমেটোতে রয়েছে ম্যালিক ও সাইট্রিক অ্যাসিড আছে। যা পাকস্থলীতে অতিরিক্ত অ্যাসিড বা অম্লের প্রবাহ সৃষ্টি করে। এ কারণে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা বেড়ে যায়।
২. যারা পেটের পীড়ায় ভোগেন; তাদের অতিরিক্ত টমেটো খাওয়া থেকে দূরে থাকা উচিত।
৩. টমেটোতে হিস্টামিন নামের এক ধরনের উপাদান আছে। যা থেকে ত্বকে অ্যালার্জির সৃষ্টি করে। টমেটো অতিরিক্ত খেলে মুখ, জিহ্বা ও মুখের ফোলাভাব, হাঁচি, গলার জ্বালা ইত্যাদি মারাত্মক লক্ষণ দেখা দিতে পারে।
৪. অতিরিক্ত টমেটো খেলে কিডনিতে পাথর হতে পারে। কারণ টমেটোতে আছে ক্যালসিয়াম ও অক্সালেট। যা সহজেই শরীর থেকে বের হয় না। এগুলো শরীরে জমা হতে শুরু করলেই কিডনিতে পাথর জমে।
৫.বেশি মাত্রায় টমেটো খেলে গেঁটে বাত দেখা দিতে পারে। কারণ এতে সোলানিন নামক বিশেষ অ্যালকালয়েড থাকে। এ যৌগ কোষে ক্যালসিয়াম তৈরির জন্য দায়ী। এ যৌগের পরিমাণ বেড়ে গেলে তা প্রদাহ তৈরি শুরু করে।
৬. টমেটোতে থাকা লাইকোপেন অতিরিক্ত মাত্রায় শরীরে জমা হলে লাইকোপিনোডার্মিয়া নামের একধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে। রক্তে লাইকোপেন বেড়ে গেলে ত্বকের রং বদলাতে শুরু করে। প্রতিদিন ৭৫ মিলিগ্রামের বেশি লাইকোপেন গ্রহণ করা উচিত নয়।
৭. টমেটোতে সালমোনেলা নামের একধরনের ব্যাকটেরিয়া থাকতে পারে। এটি ডায়রিয়ার জন্য দায়ী।