ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী
ভারতে শেখ হাসিনার অবস্থান ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত
কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ০৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৫:০৫ পিএম
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি : সংগৃহীত
ছাত্র–জনতার তুমুল আন্দোলনের মুখে বাংলাদেশ থেকে ভারতে আশ্রয় নেওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নয়াদিল্লিতে অবস্থান নিয়ে মুখ খুলেছেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর।
শনিবার (৬ ডিসেম্বর) এনডিটিভির এডিটর-ইন-চিফের সঙ্গে এক অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে তিনি বলেন, শেখ হাসিনার ভারতে থাকা সম্পূর্ণ তার ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত। যেসব পরিস্থিতি তাকে ভারতে নিয়ে এসেছে, সেগুলোই এখন তার সিদ্ধান্তকে প্রভাবিত করছে।
গত বছরের আগস্টে ছাত্র–জনতার গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে শেখ হাসিনার ১৫ বছরের শাসনের অবসান ঘটে। ওই সময় ব্যাপক সহিংসতায় শতাধিক মানুষের প্রাণহানি ঘটে এবং হাজারো মানুষ আহত হন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ায় তিনি দেশত্যাগ করে ভারতে যেতে বাধ্য হন।
গত মাসে ঢাকার বিশেষ আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত শিক্ষার্থী–জনতার আন্দোলনে সরকারি দমন–পীড়নের অভিযোগে ৭৮ বছর বয়সী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ডের রায় ঘোষণা করে। তার অনুপস্থিতিতেই এ রায় দেওয়া হয়।
শনিবার নয়াদিল্লিতে এইচটি লিডারশিপ সামিটে এনডিটিভির সিইও ও এডিটর-ইন-চিফ রাহুল কানওয়ালের সঙ্গে আলাপকালে শেখ হাসিনার বর্তমান অবস্থান ও ভবিষ্যৎ সিদ্ধান্ত নিয়ে কথা বলেন জয়শঙ্কর।
আরো পড়ুন : শেখ হাসিনাকে প্রত্যর্পণের অনুরোধ পর্যালোচনা করছে ভারত
শেখ হাসিনা কি ‘যতদিন খুশি’ ভারতে থাকতে পারবেন—এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এটা ভিন্ন বিষয়। তিনি একটি নির্দিষ্ট পরিস্থিতিতে এখানে এসেছেন এবং সেই পরিস্থিতিই এখন তার ভবিষ্যৎ সিদ্ধান্তকে প্রভাবিত করছে। তবে শেষ পর্যন্ত সিদ্ধান্তটা তাকেই নিতে হবে।’
আলোচনার একপর্যায়ে নয়াদিল্লি–ঢাকার সম্পর্ক নিয়েও কথা বলেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি প্রতিবেশী বাংলাদেশে একটি বিশ্বাসযোগ্য গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া নিশ্চিত করার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন।
বাংলাদেশের চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি ইঙ্গিত করে জয়শঙ্কর বলেন, ‘আমরা যা শুনেছি তা হলো—বাংলাদেশে, বিশেষ করে যারা এখন ক্ষমতায়, তাদের আগের নির্বাচনগুলো কীভাবে হয়েছে সে বিষয়ে আপত্তি ছিল। এখন সমস্যাটি যদি নির্বাচন নিয়ে হয়, তবে প্রথম কাজ হওয়া উচিত একটি সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজন করা।
তিনি বলেন, ভারত তার প্রতিবেশীর জন্য গণতান্ত্রিক পথই কামনা করে। ‘আমাদের দৃষ্টিতে আমরা বাংলাদেশের মঙ্গলই চাই। আমরা চাই বাংলাদেশের জনগণের ইচ্ছা যেন গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে নির্ধারিত হয়।
দুই দেশের ভবিষ্যৎ সম্পর্ক নিয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করে তিনি বলেন, আমি বেশ আশাবাদী—গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া থেকে যে সরকারই আসুক না কেন, দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের বিষয়ে তাদের একটি ভারসাম্যপূর্ণ ও পরিপক্ক দৃষ্টিভঙ্গি থাকবে এবং আশা করি পরিস্থিতির উন্নতি হবে।
