ইসরায়েলকে রক্ষায় যুক্তরাষ্ট্রের ‘থাড’ ইন্টারসেপ্টরের ২০ শতাংশ শেষ

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ২৯ জুন ২০২৫, ১০:১৯ এএম

ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধ যুক্তরাষ্ট্রের উচ্চ-প্রযুক্তির ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার ওপর প্রচণ্ড চাপ তৈরি করেছে। ছবি : সংগৃহীত
মধ্যপ্রাচ্যে ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধ যুক্তরাষ্ট্রের উচ্চ-প্রযুক্তির ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার ওপর প্রচণ্ড চাপ তৈরি করেছে। এই যুদ্ধে ইসরায়েলকে রক্ষায় যুক্তরাষ্ট্র তার ‘টার্মিনাল হাই অল্টিটিউড এরিয়া ডিফেন্স’ (থাড) ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার অন্তত ১৫-২০ শতাংশ ইন্টারসেপ্টর ব্যবহার করেছে।
দক্ষিণ কোরিয়াভিত্তিক সামরিক পর্যবেক্ষণ সংস্থা মিলিটারি ওয়াচ ম্যাগাজিন এবং মার্কিন দৈনিক ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল এ তথ্য জানিয়েছে।
সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ১২ দিনের যুদ্ধ চলাকালে ৬০ থেকে ৮০টি থাড ইন্টারসেপ্টর ব্যবহার করা হয়। প্রতিটি ইন্টারসেপ্টরের উৎক্ষেপণ ব্যয় প্রায় ১২-১৫ মিলিয়ন ডলার। ফলে মোট ব্যয় দাঁড়িয়েছে ৮১০ মিলিয়ন থেকে ১.২১৫ বিলিয়ন ডলার।
এই পরিমাণ ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার যুক্তরাষ্ট্রের থাড মজুদের ২০ শতাংশের কাছাকাছি। উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, থাড ইন্টারসেপ্টরের বাৎসরিক উৎপাদন সক্ষমতা মাত্র ৫০-৬০ ইউনিট, ফলে ইসরায়েলে ব্যবহৃত ইন্টারসেপ্টর পুনরায় উৎপাদন করতে বহু বছর সময় লাগবে।
আরো পড়ুন : খামেনিকে সম্মান দিয়ে কথা বলুন: ট্রাম্পকে ইরান
ইরান এই যুদ্ধে ইসরায়েলের সামরিক ও বেসামরিক স্থাপনায় একযোগে হামলা চালায়। এসব হামলা গাদার, এমাদ, খাইবার শেকান, ফাত্তাহ-১ ও হাইপারসনিক মডেলের ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহৃত হয় ।
ম্যাক ১৫ গতিসীমায় উৎক্ষেপণযোগ্য ফাত্তাহ-১ এর মতো হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্রগুলো প্রতিহত করা অত্যন্ত কঠিন, এমনকি উন্নত প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার জন্যও।
ইসরায়েলে মোতায়েন থাড ব্যবস্থাটি মূলত উত্তর কোরিয়া ও ইরানের মতো ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র-ক্ষমতাসম্পন্ন দেশগুলোর হুমকি মোকাবেলায় পরিকল্পিত। কিন্তু সাম্প্রতিক যুদ্ধে অতিরিক্ত ব্যবহার এবং সীমিত উৎপাদন ক্ষমতার কারণে যুক্তরাষ্ট্রের রিজার্ভ মজুদ সংকটে পড়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যুদ্ধ যত বেশি দীর্ঘায়িত হবে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা সক্ষমতা তত বেশি ক্ষয়ে যেতে পারে। দীর্ঘমেয়াদে শুধু প্রতিরক্ষার ওপর নির্ভর করলে বিপরীতে থাকা পক্ষের উৎপাদন সক্ষমতা তুলনায় বেশি কার্যকর প্রমাণিত হতে পারে। যুক্তরাষ্ট্র যে পরিমাণ অর্থ একটি ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিহত করতে ব্যয় করছে, তা ইরানের মতো দেশের ক্ষেপণাস্ত্র উৎপাদনের খরচের তুলনায় অনেক বেশি।
এছাড়া ইসরায়েলের মাটিতে থাডের মোতায়েন ২০২৪ সাল থেকেই শুরু হয়েছিল। যুক্তরাষ্ট্র-ইসরায়েল প্রতিরক্ষা সহযোগিতার অংশ হিসেবে এসব ব্যবস্থা পূর্ব থেকেই সক্রিয় ছিল।