×

মধ্যপ্রাচ্য

গাজায় ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয়: একদিনেই অনাহারে প্রাণ হারাল ১৫ জন

Icon

কাগজ ডেস্ক

প্রকাশ: ২৩ জুলাই ২০২৫, ১০:২৯ এএম

গাজায় ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয়: একদিনেই অনাহারে প্রাণ হারাল ১৫ জন

গাজা উপত্যকায় অনাহারে মৃত্যুর মিছিল দীর্ঘ হচ্ছে। ছবি : সংগৃহীত

ইসরায়েলের অব্যাহত হামলা ও সহায়তা সরবরাহ বন্ধের কারণে ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় অনাহারে মৃত্যুর মিছিল দীর্ঘ হচ্ছে। মাত্র ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে আরো ১৫ জন মারা গেছেন, যাদের মধ্যে ছয় সপ্তাহ বয়সী এক নবজাতকও রয়েছে।

বুধবার (২৩ জুলাই) আল জাজিরা এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, খাদ্য ও ওষুধের তীব্র সংকটে গাজায় অনাহারে মৃত্যুর সংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে।

অনাহারে মারা যাওয়া ছয় সপ্তাহ বয়সী শিশুটির নাম ইউসুফ আবু জাহির। শিশুটির চাচা আদহাম আল-সাফাদি বার্তাসংস্থা রয়টার্সকে জানান, বাজারে কোথাও দুধ নেই, আর যদি পাওয়া যায়, এক টিনের দাম ১০০ ডলার পর্যন্ত ওঠে, যা সাধারণ মানুষের ক্রয়সীমার বাইরে।

মঙ্গলবার অনাহারে প্রাণ হারানোদের মধ্যে আরো তিন শিশু রয়েছে। এর মধ্যে ১৩ বছর বয়সী আব্দুলহামিদ আল-ঘালবান গাজার দক্ষিণাঞ্চল খান ইউনিস শহরের হাসপাতালে মারা যায়।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে এখন পর্যন্ত অপুষ্টি ও অনাহারে ১০১ জনের মৃত্যু হয়েছে, যার মধ্যে ৮০ জনই শিশু। আর এই মৃত্যুর বড় অংশ ঘটেছে সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে।

আরো পড়ুন : খাদ্যে বিষক্রিয়ায় অসুস্থ নেতানিয়াহু

ইসরায়েল মার্চ মাসে গাজায় সব ধরনের পণ্য প্রবেশ বন্ধ করে দিলে খাদ্যের মজুত ফুরিয়ে যায়। পরে মে মাসে গাজা হিউম্যানিটেরিয়ান ফাউন্ডেশন (জিএইচএফ) নামের একটি মার্কিন-ইসরায়েল সমর্থিত সংস্থার মাধ্যমে সীমিত সহায়তা প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয়, যেখানে জাতিসংঘের কোনো ভূমিকা রাখা হয়নি।

কিন্তু সহায়তা নেওয়ার জন্য বিতরণকেন্দ্রের কাছে জড়ো হওয়া ফিলিস্তিনিদের ওপর নির্বিচারে গুলি চালানো হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। জাতিসংঘ মানবাধিকার দপ্তরের তথ্যে বলা হচ্ছে, সহায়তা নিতে গিয়ে এক হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছেন।

ইউএনআরডব্লিউএ প্রধান ফিলিপ লাজারিনি বলেন, জিএইচএফ-এর সহায়তা বিতরণ এক ধরনের ‘নৃশংস মৃত্যুফাঁদ’ হয়ে গেছে। সহায়তার অপেক্ষায় থাকা মানুষদের গুলি করে হত্যা করা হচ্ছে, যা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।

ইসরায়েল দাবি করছে, সহায়তা হামাস ছিনিয়ে নিচ্ছে, তবে এই দাবির পক্ষে কোনো প্রমাণ দেখাতে পারেনি। বিপরীতে জিএইচএফ বলছে, জাতিসংঘের এই তথ্য ‘অতিরঞ্জিত ও ভুল’।

জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস পরিস্থিতিকে “সমসাময়িক ইতিহাসে নজিরবিহীন” আখ্যা দিয়ে বলেছেন, ২৩ লাখ ফিলিস্তিনি একসঙ্গে বোমাবর্ষণ, অপুষ্টি ও অনাহারে দিন পার করছেন। মানবিক সহায়তা ব্যবস্থা ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গেছে।

আল-শিফা হাসপাতালের পরিচালক মোহাম্মদ আবু সালমিয়া বলেন, প্রতিমুহূর্তে ক্ষুধার্ত ও অপুষ্ট রোগীরা হাসপাতালে আসছে। চিকিৎসা দেওয়ার মতো উপকরণ আমাদের হাতে নেই।

আল আকসা শহীদ হাসপাতালের মুখপাত্র খলিল আল-দাকরান জানিয়েছেন, গাজায় প্রায় ৬ লাখ মানুষ অপুষ্টিতে ভুগছেন, যার মধ্যে ৬০ হাজার গর্ভবতী নারী। তিনি বলেন, ডিহাইড্রেশন ও রক্তস্বল্পতার কারণে এদের অবস্থা আরো জটিল হয়ে যাচ্ছে।


সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

‘সরকার বললে চলে যাব’, পদত্যাগ ইস্যুতে শিক্ষা উপদেষ্টা

‘সরকার বললে চলে যাব’, পদত্যাগ ইস্যুতে শিক্ষা উপদেষ্টা

স‌চিবালয়ে শিক্ষার্থী পেটানোর প্রতিবাদে সংলাপ থেকে ওয়াকআউট করলো ৩ দল

স‌চিবালয়ে শিক্ষার্থী পেটানোর প্রতিবাদে সংলাপ থেকে ওয়াকআউট করলো ৩ দল

‘গ্রোক’ চালাতে ১২ বিলিয়ন ডলার ঋণ নিচ্ছেন ইলন মাস্ক

‘গ্রোক’ চালাতে ১২ বিলিয়ন ডলার ঋণ নিচ্ছেন ইলন মাস্ক

মাইলস্টোনে ৯ ঘণ্টা ‘অবরুদ্ধ’, যা জানালেন প্রেস সচিব

মাইলস্টোনে ৯ ঘণ্টা ‘অবরুদ্ধ’, যা জানালেন প্রেস সচিব

সব খবর

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App