গাজায় আরো ৫১ জন নিহত, ত্রাণ নিতে গিয়ে প্রাণ গেল ২৪ জনের

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ২৫ আগস্ট ২০২৫, ০৮:২৫ এএম

ছবি : সংগৃহীত
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বাহিনীর অব্যাহত হামলায় একদিনেই আরো ৫১ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে ত্রাণের অপেক্ষায় থাকা অবস্থায় প্রাণ হারিয়েছেন ২৪ জন। একই দিনে অনাহার ও অপুষ্টিতে মারা গেছেন আরো আটজন।
সোমবার (২৫ আগস্ট) আল জাজিরার প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।
সংবাদমাধ্যমটির তথ্য অনুযায়ী, ইসরায়েলি সেনারা গত ৬ আগস্ট থেকে গাজা শহরে সামরিক অভিযান শুরু করে। এর পর থেকে জেতুন ও সাবরা মহল্লায় এক হাজারেরও বেশি ভবন ধ্বংস করেছে বলে জানিয়েছে ফিলিস্তিনি সিভিল ডিফেন্স। তাদের দাবি, এসব ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনও শত শত মানুষ চাপা পড়ে আছেন।
রোববার দেওয়া এক বিবৃতিতে সংস্থাটি জানায়, টানা গোলাবর্ষণ এবং অবরুদ্ধ সড়কের কারণে উদ্ধারকাজ চালানো বা ত্রাণ সহায়তা পৌঁছানো প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছে। অসংখ্য মানুষ নিখোঁজ থাকলেও জরুরি কর্মীরা সহায়তা দিতে পারছেন না। অন্যদিকে হাসপাতালগুলোতে প্রচণ্ড চাপ তৈরি হয়েছে, আহতদের চিকিৎসায় হিমশিম খাচ্ছেন চিকিৎসকরা।
আরো পড়ুন : অর্থ থাকলেই মিলবে ওমানের গোল্ডেন ভিসা!
সিভিল ডিফেন্স সতর্ক করে জানায়, গাজার কোথাও এখন নিরাপদ নয়। উত্তর থেকে দক্ষিণ সবখানেই বেসামরিক মানুষকে লক্ষ্য করে হামলা চালানো হচ্ছে। ঘরবাড়ি, আশ্রয়কেন্দ্র এমনকি ত্রাণ শিবিরও রক্ষা পাচ্ছে না।
গাজা শহরের নিয়ন্ত্রণ নিতে ইসরায়েলি সেনারা ট্যাংক নিয়ে সাবরা এলাকায় প্রবেশ করেছে। এতে প্রায় ১০ লাখ ফিলিস্তিনি দক্ষিণ দিকে সরে যেতে বাধ্য হয়েছেন। সংস্থাটির আশঙ্কা, রাফাহ শহরের মতো পুরো গাজা শহর ধ্বংস করে ফিলিস্তিনিদের উৎখাত করার চেষ্টা চলছে।
শহরের আল-জালাআ সড়কের একটি অ্যাপার্টমেন্টে হামলায় অন্তত তিনজন নিহত হয়েছেন, এর মধ্যে একজন শিশু রয়েছে বলে জরুরি বিভাগ সূত্র জানিয়েছে। একইসঙ্গে উত্তরাঞ্চলের জাবালিয়া শরণার্থী শিবিরে একাধিক ভবন ধ্বংস করা হয়েছে। স্থানীয়রা জানাচ্ছেন, চারপাশে অবিরাম বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যাচ্ছে।
চিকিৎসা সূত্র বলছে, রোববার একদিনেই নিহত ৫১ জনের মধ্যে ২৭ জন গাজা শহরে এবং আরো ২৪ জন মানবিক সহায়তা নিতে গিয়ে প্রাণ হারান।
এদিকে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, খাদ্যাভাব ও অপুষ্টিতে নতুন করে আটজন মারা গেছেন। এ নিয়ে যুদ্ধ শুরুর পর থেকে এ ধরনের মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৮৯ জনে। এর মধ্যে ১১৫ জন শিশু।
প্রতিদিন ক্ষুধার্ত মানুষের দিকে গুলি চালাচ্ছে ইসরায়েলি সেনারা। অভিযোগ রয়েছে, ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্র-সমর্থিত বিতর্কিত জিএইচএফ কেন্দ্রগুলো থেকে সামান্য সহায়তা নেওয়ার চেষ্টা করার সময়ও হামলার মুখে পড়ছেন সাধারণ ফিলিস্তিনিরা।