গাজায় গণহত্যা চালাচ্ছে ইসরায়েল, বলছেন বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় বিশেষজ্ঞরা

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৯:২৩ এএম

ইসরায়েল সুপরিকল্পিতভাবে স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও ত্রাণ অবকাঠামো ধ্বংস করেছে। ছবি : সংগৃহীত
অবরুদ্ধ গাজায় ইসরায়েলের সামরিক কর্মকাণ্ডকে গণহত্যা হিসেবে ঘোষণা করেছে বিশ্বের শীর্ষ গণহত্যাবিষয়ক বিশেষজ্ঞদের সংগঠন ইন্টারন্যাশনাল অ্যাসোসিয়েশন অব জেনোসাইড স্কলার্স (আইএজিএস)। জাতিসংঘের গণহত্যা সনদের সঙ্গে ইসরায়েলের পদক্ষেপ মিলে যায় বলে এক প্রস্তাবে জানানো হয়েছে।
সংগঠনটির তিন পাতার প্রস্তাবে ইসরায়েলের ২২ মাসের যুদ্ধকালীন কর্মকাণ্ডকে গণহত্যা, যুদ্ধাপরাধ এবং মানবতাবিরোধী অপরাধ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
সোমবার (১ সেপ্টেম্বর) ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এক প্রতিবেদনে এ তথ্য প্রকাশ করে।
বিবিসি জানায়, আইএজিএস হলো বিশ্বের সবচেয়ে বড় গণহত্যা গবেষক ও বিশেষজ্ঞদের পেশাজীবী সংগঠন। এখানে প্রায় ৫০০ সদস্য রয়েছেন, যাদের মধ্যে হলোকাস্ট বিশেষজ্ঞও আছেন। ভোটাভুটিতে ২৮ শতাংশ সদস্য অংশ নেন এবং তাঁদের মধ্যে ৮৬ শতাংশ প্রস্তাবের পক্ষে মত দেন।
আরো পড়ুন : ইসরায়েলের হামলায় প্রধানমন্ত্রীর নিহতের খবর নিশ্চিত করল হুতি
প্রস্তাবে বলা হয়, ইসরায়েল সুপরিকল্পিতভাবে স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও ত্রাণ অবকাঠামো ধ্বংস করেছে। ইউনিসেফের তথ্য অনুযায়ী, হামলায় অন্তত ৫০ হাজার শিশু নিহত বা আহত হয়েছে, যা গাজার মানুষের বেঁচে থাকা ও পুনর্গঠনের সক্ষমতাকে হুমকির মুখে ফেলেছে। এছাড়া গাজার সব ফিলিস্তিনিকে উচ্ছেদ ও বাড়িঘর ধ্বংসের ঘটনাও প্রস্তাবে উল্লেখ করা হয়।
বিশেষজ্ঞরা আরো তুলে ধরেছেন, ইসরায়েলি নেতাদের প্রকাশ্য বক্তব্যে গাজার মানুষকে শত্রু হিসেবে আখ্যা দেওয়া হয়েছে, অঞ্চলটিকে চাপা দেওয়া বা নরকে পরিণত করার হুমকি দেওয়া হয়েছে।
তবে ইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ অভিযোগকে হামাসের প্রচারণা বলে প্রত্যাখ্যান করেছে। তাদের দাবি, গবেষণাটি দুর্বল এবং এটি আইন পেশার জন্য লজ্জাজনক। ইসরায়েল বরাবরই গাজায় গণহত্যার অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে এবং বলছে, সব পদক্ষেপ আত্মরক্ষার অংশ।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলায় ১ হাজার ২০০ জন নিহত ও ২৫১ জন আটক হওয়ার ঘটনাটি অবশ্যই অপরাধ। তবে ইসরায়েলের পাল্টা হামলা শুধু হামাসকে নয়, বরং পুরো গাজার জনগোষ্ঠীকে লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করছে।
উল্লেখ্য, ১৯৪৮ সালে হলোকাস্ট-পরবর্তী সময়ে গৃহীত জাতিসংঘের সনদে বলা হয়েছে, কোনো জাতীয়, নৃতাত্ত্বিক, বর্ণ বা ধর্মীয় গোষ্ঠীকে সম্পূর্ণ বা আংশিক ধ্বংস করার উদ্দেশ্যে সংঘটিত অপরাধকেই গণহত্যা বলা হয়।