২০৫০ সালের মধ্যে ২ কোটি ৬০ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হওয়ার শঙ্কা

কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২৬ জুন ২০২৫, ০৪:১৩ এএম

উন্নয়ন সংস্থা ‘কারিতাস বাংলাদেশ’-এর অনুষ্ঠানে অতিথিরা
জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব ২০৫০ সালের মধ্যে দেশের ২ কোটি ৬০ লাখ মানুষ অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে উন্নয়ন সংস্থা ‘কারিতাস বাংলাদেশ’। জিআইজেড-এর ২০২৩ সালের গবেষণার তথ্য তুলে ধরে বলা হয়েছে, জলবায়ু পরিবর্তনে প্রাকৃতিক দুর্যোগ বেড়েছে। ২০০৮-১৪ সাল পর্যন্ত প্রাকৃতিক দুর্যোগে দেশে ৪৭ লাখের বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। শহরে আশ্রয় নেওয়া জলবায়ু পরিবর্তনজনিত অভিবাসীদের মধ্যে ৫৭ শতাংশই উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরার।
বুধবার (২৫ জুন) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ) মিলনায়তনে ‘জলবায়ু পরিবর্তনজনিত অভিবাসন ও নগর জীবনের বাস্তবতা: নীতিমালা বাস্তবায়নের বর্তমান অবস্থা ও ভবিষ্যৎ পন্থা’ শীর্ষক পরামর্শ সভায় এসব তথ্য জানানো হয়। দেশের জাতীয় পর্যায়ের বিভিন্ন প্রিন্ট, ইলেকট্রনিক এবং অনলাইন মাধ্যমের মিডিয়ার ৮০ জন সংবাদ মাধ্যম কর্মী মতবিনিময় সভাটিতে অংশ নেন। সভার শুরুতে অংশগ্রহণকারীদের স্বাগত জানান কারিতাস বাংলাদেশের পরিচালক (কর্মসূচি) দাউদ জীবন দাশ। তিনি জলবায়ু পরিবর্তন জনিত দীর্ঘমেয়াদী সংকট ও দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর ঝুঁকি নিরসন, অভিযোজন ও জীবনমান উন্নয়নমূলক সংক্রান্ত কারিতাস বাংলাদেশ বাস্তবায়িত ও চলমান কার্যক্রমের সংক্ষিপ্ত চিত্র তুলে ধরেন। অভ্যন্তরীণ অভিবাসন সংকট মোকাবেলায় বেসরকারি সংস্থাগুলো কিভাবে আরও কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে সে বিষয়েও তিনি সংবাদ মাধ্যম কর্মীদের পরামর্শ ও সহযোগিতা কামনা করেন।
পরামর্শমূলক সভায় সংবাদ মাধ্যম কর্মীদের কাছে জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে অভিবাসন সংকট বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য-উপাত্ত তুলে ধরেন কারিতাস বাংলাদেশের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগের প্রধান জনাব অ্যালেক্সান্ডার ত্রিপুরা। তিনি বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চল বিশেষত খুলনায় ঘূর্ণিঝড় আইলাতে নূরবানু বেগমের গল্পের মাধ্যমে অভিবাসনের গভীর সংকটের কথা উল্লেখ করেন। তার বক্তব্যে রাজধানীসহ অন্যান্য শহরে যথাযথ নগর পরিকল্পনার অভাবের কথা উঠে আসে যার ফলে ক্রমবর্ধমান হারে বাস্তুচ্যুত মানুষদের সঠিক আবাসন ও জীবিকার ব্যবস্থা করা অনেক বড় একটি চ্যালেঞ্জ হয়ে পড়েছে।
সভায় উপস্থাপিত তথ্য-উপাত্ত এবং সংকট মোচনে করণীয় বিষয়ে আলোচনা করেন প্রথম আলোর যুগ্ম সম্পাদক সোহরাব হাসান এবং ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাধারণ সম্পাদক জনাব মাইনুল হাসান সোহেল। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাবেক সভাপতি রফিকুল ইসলাম আজাদ। সভাটি সঞ্চালনা করেন কারিতাস-এর এ্যাডভোকেসি বিষয়ক পরামর্শক ড. জামিল আহমেদ।
সাংবাদিকদের নিয়ে জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক একটি ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠনের পরামর্শ দেন আলোচক সোহরাব হাসান। এর ফলে জলবায়ু পরিবর্তন বিষয় নিয়ে কাজ করেন যেসব সংবাদ মাধ্যম কর্মী তারা আরও ফলপ্রসূ ভূমিকা রাখতে পারবেন। তিনি আরও বলেন, বিষয়টি এখন দেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ সংকট। দেশে প্রতি বছর ২০-২৫ লক্ষ মানুষ প্রতি বছর অভ্যন্তরীনভাবে বাস্তুচ্যুত হচ্ছে। এসব মানুষ শহরে বাধ্য হয়ে বসতি স্থাপন করছে। দেশব্যাপী প্রকৃতি ধ্বংস হচ্ছে, দুর্যোগ বাড়ছে, অস্থিতিশীল পরিস্থিতি বাড়ছে। সুতরাং, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সার্বিক সংকট বাড়ছে। তিনি উল্লেখ করেন, শহরে জনসংখ্যা বাড়ে। কিন্তু, ব্যতিক্রম হচ্ছে খুলনা সেখানে জনসংখ্যা কমে গেছে। কারণ সেখানে জীবিকার পথ সংকোচিত হয়েছে। তিনি আরও বলেন, উপকূলীয় অঞ্চলে প্রতি বছর দুর্যোগ হয়। এর ফলে প্রতি বছর মানুষ উদ্বাস্তু হচ্ছে। কিন্তু, তারা পুনরায় তাদের জন্মভূমিতে ফিরে যেতে পারছে না। তারা চলে আসছে শহরে। এটি একদিনে হয়নি, হয়েই চলছে। ফলে শহরগুলো মাত্রাতিরিক্ত চাপে বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়েছে।
উদ্বাস্ত মানুষের সংখ্যা কমানোর জন্য তিন ধরনের উদ্যোগ নেয়া যেতে পারে বলে মনে করেন সাংবাদিক সোহরাব হাসান। তিনি দুর্যোগ আক্রান্ত এলাকাতেই দুর্যোগ সহনশীল পরিবেশ তৈরিতে সরকারি বিনিয়োগের যথাযথ বরাদ্দ ও বাস্তবায়নের গুণগতমান নিশ্চিত করার উপর গুরুত্ব দেন। জীবিকার ব্যবস্থা ও বসবাসের যোগ্য পরিস্থিতি তৈরি করতে পারলে শহরে মাত্রাতিরিক্ত অভিবাসন কমতে পারে। তিনি আরও বলেন, বাস্তুচ্যুত শিশুদের শিক্ষা নিশ্চিত করা দরকার যারা এখনো ঝুঁকি নিয়ে এলাকায় রয়েছে এবং যারা ইতোমধ্যে শহরে চলে এসেছে।
সভার অতিথি আলোচক সাংবাদিক জনাব মাইনুল হাসান সোহেল বলেন, খুলনা ও বরিশাল বিভাগের ব্যাপক সংখ্যক মানুষ এলাকা ছেড়ে চলে আসতে বাধ্য হচ্ছে। সরকারি অনেক উদ্যোগের সুফল যথাযথভাবে কার্যকর হচ্ছে না। নিজ এলাকাতেই সংকটাপন্ন জনগণের জীবন-জীবিকা নিশ্চিত করার উপর জোরারোপ করেন তিনি।
সাংবাদিক ইমাম গাজ্জালী বলেন, যুদ্ধে বাস্তুচ্যুত মানুষদের দুর্দশা নিয়ে মিডিয়া অনেক খবর প্রচার করে। কিন্তু জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বাস্তুচ্যুত মানুষদের নিয়ে মিডিয়া সেভাবে সরব নয়। সরকারি প্রশাসন ও বিভিন্ন দপ্তরের মত মিডিয়ারও অনেক সীমাবদ্ধতা রয়েছে। ফলে প্রকৃত চিত্র উঠে আসছে না। তবে মানবিক বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে সংবাদকর্মীদের কাজ অব্যাহত রাখা জরুরি বলে মনে করেন তিনি।
টেলিভিশন সাংবাদিক জেসমিন জাহান সভায় নিজের অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন। তিনি তথ্যভিত্তিক গবেষণা ব্যবহারের উপর গুরুত্ব আরোপ করেন। তিনি বলেন, দুর্যোগে বাস্তুচ্যুত মানুষদের পুনর্বাসন করার জন্য সমন্বিত উদ্যোগ দরকার সাংবাদিক আমিনুল হক দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে মানুষের অবর্ণনীয় দুর্দশার কথা তুলে ধরেন। এই পরিস্থিতি মোকাবেলায় যথাযথ উদ্যোগের গুরুতর ঘাটতি রয়েছে বলে তিনি তার পর্যবেক্ষণ তুলে ধরেন। সাংবাদিক তারেক মামুন বলেন ব্যক্তি, সমাজ ও রাষ্ট্রের উপর ব্যাপক প্রভাব ফেলছে জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাব। অভ্যন্তরীণ অভিবাসীদের জন্য রাষ্ট্রীয় নীতিমালা থাকা দরকার। প্রথাগত ব্যবস্থায় এ সংকট মোচন করা সম্ভব নয় বলে তিনি মনে করেন। সাংবাদিক ইকবাল হোসেন সরকার দেশের মোট ৬টি মন্ত্রণালয় ও বিভিন্ন দপ্তরের জলবায়ু বিষয়ক কার্যক্রমের সাথে বেসরকারি উদ্যোগের সমন্বয়ের কথা বলেন।
নারী সাংবাদিক সমিতির সভাপতি নাসিমা সোমা বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের সবচেয়ে ক্ষতিকর প্রভাব পড়ছে কৃষিতে। ফলে ফসল উৎপাদন কমেছে। কৃষকরা কৃষিকাজ ছেড়ে শহরে চলে আসতে বাধ্য হচ্ছে। কৃষি নিয়ে কাজ করার উপর গুরুত্বরোপ করেন তিনি। অভিবাসনের আরও একটি নেতিবাচক দিক হল নারীসমাজ মারাত্মকভাবে হুমকির মধ্যে পড়েছে। অসাধু ব্যবসায়ীদের খপ্পরে পড়ে অনেকের জীবন এখন নিরাপত্তাহীন। ইমরান আহমেদ সরকারি নীতিমালা ও উদ্যোগের উপর গুরুত্বআরোপ করেন। জাহিদ আলামিন বলেন, এনজিওগুলোর নিজেদের মধ্যে এবং সরকারি ও বেসরকারি সংশ্লিষ্ট সংস্থার মধ্যে আরও সমন্বয় দরকার। মিডিয়াতে জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ে গুরুত্ব সহকারে প্রতিদিন কিছু ‘স্পেস’/স্থান দরকার। আমিরুল হক পারভেজ জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বিপন্ন বন্যপ্রাণী ও প্রকৃতি রক্ষাতেও কাজ করা দরকার। উপকূল দিবস রাষ্ট্রীয়ভাবে পালনের দাবি জানান তিনি।
দৈনিক কালের কণ্ঠ পত্রিকার সিনিয়র সাংবাদিক জনাব নিখিল চন্দ্র ভদ্র শৈশব হতে বর্তমান সময় পর্যন্ত তার নিজের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে বলেন, দুর্যোগ এখন ঘনঘন ঘটছে। আগের চাইতে বেশি ঘটছে। আগে বুঝতাম না এটা জলবায়ু পরিবর্তনের ফল। এখন বুঝি। এই নতুন সংকট যুক্ত হয়েছে এলাকা ছেড়ে যখন দলে দলে মানুষজন শহরে চলে আসা শুরু করেছে। লবণাক্ততা বৃদ্ধির ফলে জীবন হয়ে উঠেছে দুর্বিষহ। এ বিষয়ে কার্যকর সমাধান হলে অভিবাসন সংকট কমতে পারে বলে মনে করেন তিনি। সাংবাদিকদের নিয়ে জলবায়ু বিষয়ক কর্মশালা ও প্রশিক্ষণ আয়োজন করা প্রস্তাবনা দেন তিনি। তরুণ সাংবাদিক রাইয়ান হোসেন বলেন, রাজধানীর রমনার পাশ দিয়ে হেঁটে যাওয়ার মত প্রশান্তি শহরে সৃষ্টি করতে হলে শুধু বড় বড় প্রকল্প নয়, বৃক্ষরোপণের মত সহজ কাজ ব্যক্তি ও সামাজিকভাবে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাব কমাতে। সভায় আরও কথা বলেন, মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান আসলাম মোল্লা, সাংবাদিক জাহিদা পারভেজ ছন্দা প্রমুখ।
সভা সূত্র জানায়, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে অগণিত মানুষ জীবিকা হারাচ্ছে ও বাস্তুচ্যুত হচ্ছে। বাধ্য হয়ে শহরের বস্তিতে অমানবিক পরিবেশে বসবাস করছে যেখানে নাগরিক সেবার অভাব যেমন আছে, তেমনি জীবন-জীবিকারও কোন নিরাপত্তা নেই। সভায় এ সংকট সমাধানের জন্য সরকারি নীতিমালাও অপর্যাপ্ত হিসেবে উল্লেখ করা হয়। এছাড়া, বাস্তুচ্যুত মানুষদের সেবা পাবার ক্ষেত্রে সরকারি বিভিন্ন বিভাগের মধ্যে আরও সমন্বয় বৃদ্ধির প্রয়োজন রয়েছে। জাতীয়ভাবে অন্তর্ভুক্তিমূলক নগর পরিকল্পনার অনুপস্থিতির মতো নীতিগত ও প্রশাসনিক শূণ্যতাগুলো নিয়ে সংবাদ মাধ্যমগুলো আরও পর্যালোচনা ও অনুসন্ধানী প্রতিবেদন তৈরি করলে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে এ সংকট সহনীয় হতে পারে বলে সভায় আলোচনা করা হয়। সভায় মিডিয়া পেশাজীবীদের সক্রিয় সমর্থন আহ্বান করা হয় জাতীয় ও স্থানীয় নীতিনির্ধারকদের প্রভাবিত করার উদ্দেশ্যে, যেন অন্তর্ভুক্তিমূলক নীতি, উন্নত সেবাপ্রদান এবং জলবায়ু পরিবর্তন জনিত অভিবাসীদের নগর জীবনে ন্যায্য ও মর্যাদাপূর্ণ একত্রীকরণ নিশ্চিত করা যায়।
সভায় জানানো হয়, বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলে ঘূর্ণিঝড়, অস্বাভাবিক জোয়ারের প্লাবন, লবণাক্ততা ও নদীভাঙনের ফলে জলবায়ু পরিবর্তন জনিত অভ্যন্তরীণ অভিবাসনের হার ক্রমবর্ধমান। এসব পরিবার রাজধানী ঢাকা ছাড়াও খুলনা ও চট্টগ্রামের মতো শহরে আশ্রয় নিচ্ছে। কিন্তু এসব শহরে এসেও তারা নতুন ধরনের সংকটের মুখোমুখি হয় যেমন অনিরাপদ আবাসন, পানি-স্বাস্থ্য-শিক্ষা সেবার অভাব এবং সামাজিক বঞ্চনা।
বাংলাদেশের বিভিন্ন জাতীয় পরিকল্পনায় জলবায়ু পরিবর্তন জনিত অভিবাসীদের বিষয়ে উল্লেখ রয়েছে যেখানে অভিবাসন মোকাবিলায় ব্যবস্থা গ্রহণের বিষয়ে বলা হয়েছে। তবে এর জন্য কোন নির্দিষ্ট আইনি কাঠামো না থাকায় তাদের অন্তর্ভুক্তি বা সেবা নিশ্চিত করা দুরূহ বিষয়।
এক পরিসংখ্যানে জানা গেছে, ২০০৮-২০১৪ সাল পর্যন্ত প্রাকৃতিক দুর্যোগে বাংলাদেশে ৪৭ লাখের বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। গবেষণা সংস্থা রামরু ও এসসিএমআরের মতে, ২০১১ থেকে ২০৫০ সালের মধ্যে ১.৬ থেকে ২.৬ কোটি মানুষ জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত হতে পারে। জিআইজেড-এর ২০২৩ সালের গবেষণায় দেখা গেছে, শহরে আশ্রয় নেয়া জলবায়ু পরিবর্তন জনিত অভিবাসীদের মধ্যে ৫৭ শতাংশই উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরার।
সভা সূত্র আরও জানায়, বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা কারিতাস বাংলাদেশ দুর্যোগ সাড়াদান, প্রশমন ও জলবায়ু পরিবর্তন জনিত ক্ষতিকর প্রভাব কমাতে এ পর্যন্ত দশ লক্ষের বেশি গৃহ নির্মাণ, পয়নিঃষ্কাশ ব্যবস্থা উন্নয়ন এবং কমিউনিটি অবকাঠামো নির্মাণের মাধ্যমে ৪ কোটি ৭০ লাখের বেশি মানুষের কাছে ভালবাসাপূর্ণ সেবা পৌঁছে দিয়েছে। এছাড়াও কারিতাস ৩,০০০ দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটি এবং ১৪,০০০ কমিউনিটি স্বেচ্ছাসেবককে প্রশিক্ষণ ও প্রয়োজনীয় উপকরণ দিয়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় সক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করেছে। শুধুমাত্র উপকূলীয় এবং বন্যাপ্রবণ এলাকার দুর্যোগ ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর ঝুঁকি প্রশমনে বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় ৩২৯টি ঘূর্ণিঝড় ও বন্যা আশ্রয় কেন্দ্র তৈরি করেছে। বর্তমানে বাংলাদেশের খুলনা ও সাতক্ষীরা জেলায় জার্মান সরকারের বিএমজেড এবং কারিতাস জার্মানির যৌথ অর্থায়নে পরিচালিত প্রকল্পের মাধ্যমে শহরাঞ্চলের জলবায়ু পরিবর্তন জনিত অভিবাসীদের মর্যাদাপূর্ণ অন্তর্ভুক্তির লক্ষ্যে কাজ করছে কারিতাস।
সভার শেষে অংশগ্রহণকারীরা আশা প্রকাশ করে তাদের অভিমতে জানান: গণমাধ্যমের মাধ্যমে জলবায়ু অভিবাসন বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি পাবে এবং নীতিগত দুর্বলতা চিহ্নিত করে প্রাসঙ্গিক পরিবর্তনের ক্ষেত্রে সাংবাদিকদের ভূমিকায় গতি আসবে। কেবল দুর্যোগের সময় নয়, নিয়মিত ও মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে রিপোর্টিং করবেন। নাগরিক সমাজ ও মিডিয়ার মধ্যে সহযোগিতা আরও জোরদার হবে- বিশেষ করে অন্তর্ভুক্তিমূলক নগর নীতির জন্য।