তারেক রহমান
নারীর কর্মসংস্থান বাড়াতে বিশেষ উদ্যোগ নেবে বিএনপি
কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ৩০ অক্টোবর ২০২৫, ০১:৪৯ পিএম
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। ছবি : সংগৃহীত
নারীর কর্মসংস্থান বৃদ্ধি, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ত্বরান্বিত করা এবং কর্মজীবী মায়েদের জন্য সহায়ক পরিবেশ নিশ্চিত করতে সারাদেশে ডে-কেয়ার সেন্টার স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়ার কথা বিবেচনা করছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)। বুধবার (৩০ অক্টোবর) দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানান।
বিবৃতিটি গণমাধ্যমে পাঠিয়েছেন দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী।
তারেক রহমান বলেন, যখন কোনো তরুণী মা পর্যাপ্ত শিশু পরিচর্যার সুযোগ না পেয়ে চাকরি ছেড়ে দেন, অথবা কোনো ছাত্রী পড়াশোনা বন্ধ করে দেন, তখন বাংলাদেশ হারায় সম্ভাবনা, উৎপাদনশীলতা ও অগ্রগতি।
তিনি বলেন, বিএনপির লক্ষ্য একটি আধুনিক ও গণমুখী বাংলাদেশ গড়া, যেখানে কোনো নারীকে তার পরিবার ও ভবিষ্যতের মধ্যে বেছে নিতে হবে না।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর ২০২৪ সালের শ্রমশক্তি জরিপের তথ্য উল্লেখ করে তারেক রহমান জানান, দেশে পুরুষদের ৮০ শতাংশ কর্মজীবী হলেও নারীদের অংশগ্রহণ মাত্র ৪৩ শতাংশ। এই বৈষম্য প্রমাণ করে, আমরা এখনো আমাদের জাতির অর্ধেক মেধা ও দক্ষতাকে পিছনে ফেলে যাচ্ছি।
আরো পড়ুন : নভেম্বরেই গণভোটের দাবিতে ইসিতে আট দল
বিএনপি যে উদ্যোগগুলো বিবেচনা করছে, তার মধ্যে রয়েছে—
- সব সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ডে-কেয়ার সেন্টার স্থাপন,
- সরকারি অফিসগুলোতে ধাপে ধাপে ডে-কেয়ার সেন্টার স্থাপনের জাতীয় পরিকল্পনা,
- বড় বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও শিল্পকারখানায় বাধ্যতামূলক শিশু পরিচর্যা ব্যবস্থা,
- শিশু পরিচর্যার সুযোগ দেওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য কর সুবিধা ও সিএসআর ক্রেডিট, এবং
- নারী ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মান অনুযায়ী কেয়ারগিভারদের প্রশিক্ষণ ও সার্টিফিকেশন।
তারেক রহমান বলেন, এই সংস্কার নারীর কর্মসংস্থান বাড়াতে, পারিবারিক আয় বৃদ্ধি করতে এবং জিডিপিতে ১ শতাংশ পর্যন্ত অবদান রাখতে সক্ষম।তৈরি পোশাক শিল্পে কর্মরতদের প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ নারী। ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্স কর্পোরেশন ও আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা-এর গবেষণার উদ্ধৃতি দিয়ে তিনি বলেন, যেসব কারখানায় শিশু পরিচর্যার সুবিধা রয়েছে, সেখানে কর্মী ধরে রাখার হার বেশি, অনুপস্থিতি কম এবং প্রতিষ্ঠানগুলো এক বছরের মধ্যেই খরচ তুলে আনতে পারে।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, শিশু পরিচর্যা কোনো দয়া নয়, এটি অর্থনৈতিক অবকাঠামোর অপরিহার্য অংশ। যেমন সড়ক বাজারকে সংযুক্ত করে, তেমনি ডে-কেয়ার সেন্টার নারীদের কর্মজীবনে সাফল্যের সঙ্গে সংযুক্ত করে।
তারকে বলেন, বিএনপির দৃষ্টিভঙ্গি ২০৩৪ সালের মধ্যে একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক ট্রিলিয়ন-ডলারের অর্থনীতি গড়ে তোলা, যেখানে প্রতিটি নাগরিক, বিশেষ করে নারী, দেশের প্রবৃদ্ধিতে গর্বের সঙ্গে অবদান রাখবে।
তারেক রহমান বলেন, আমরা এমন যে কোনো পশ্চাৎমুখী ধারণা প্রত্যাখ্যান করি যা নারীর সম্ভাবনাকে সীমাবদ্ধ করে। শিশু পরিচর্যা, সমান মজুরি ও কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তার মাধ্যমে নারীর ক্ষমতায়ন শুধু ন্যায়সংগত নয়; এটিই বুদ্ধিবৃত্তিক অর্থনীতি।
বিবৃতির শেষে তিনি আহ্বান জানান, আসুন, আমরা এমন একটি বাংলাদেশ গড়ি—যেখানে প্রতিটি কর্মজীবী মা ও ছাত্রী নিজের সাফল্যের স্বাধীনতা পায়, এবং সমাজের যত্ন ও সহযোগিতা অগ্রগতির ভিত্তি হয়ে দাঁড়ায়।
