এ্যাবের আলোচনা সভায় রিজভী
‘জিয়াউর রহমান বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদ প্রতিষ্ঠা করেছেন’
কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ০৯ নভেম্বর ২০২৫, ০৭:৪০ পিএম
এ্যাবের আলোচনা সভায় রিজভী
‘ঐতিহাসিক ৭ নভেম্বর জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস-২০২৫’ উপলক্ষে এসোসিয়েশন অব ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশ (এ্যাব) এক আলোচনা সভার আয়োজন করেছে। বৃহস্পতিবার (০৬ নভেম্বর ২০২৫) সন্ধ্যায় আইইবির সেমিনার হলে অনুষ্ঠিত এই আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)-এর সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী। আলোচনা সভায় বক্তারা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের অবদান এবং ৭ নভেম্বরের ঐতিহাসিক গুরুত্ব তুলে ধরেন।
অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী তার বক্তব্যে বলেন, ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা লাভ করলেও জাতি প্রকৃত স্বাধীনতা লাভ করতে পারেনি। মানুষের আত্মপরিচয় কলুষিত করে বাকশাল প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল। ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর জাতীয় সংহতির মাধ্যমেই এদেশের প্রকৃত স্বাধীনতা অর্জিত হয়েছিল। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান এদেশের মানুষের গণতন্ত্রের নিশ্চয়তা, সার্বভৌমত্ব ও আত্মপরিচয়ের সংকট থেকে মুক্ত করেছিলেন। তিনি বাংলাদেশকে খাদ্য স্বয়ংসম্পূর্ণতা ও কৃষি যান্ত্রিকীকরণ করেছিলেন। রিজভী আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার বক্তব্যে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানকে হেয় করার চেষ্টা করলেও, জিয়াউর রহমানের যে অবদান 'বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ', তা মুছে ফেলতে পারেননি।
এ্যাব-এর ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এবং প্রধান উপদেষ্টা প্রকৌশলী এ. এন. এইচ আখতার হোসেন বলেন, ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা লাভ করলেও আওয়ামী লীগ সেই স্বাধীনতার স্বাদ গ্রহণ করতে দেয়নি। ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বরই এদেশে প্রকৃত স্বাধীনতা এসেছিল। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান দেশকে একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ রাষ্ট্রে রূপান্তরিত করতে চেয়েছিলেন। তিস্তা ব্যারেজ নির্মাণে বিদেশ থেকে প্রকৌশলী আনার প্রস্তাব এলেও তিনি নিজস্ব প্রকৌশলীদের দিয়েই কাজ করার নির্দেশ দিয়েছিলেন। তিনি এদেশের মেধাবী প্রকৌশলীদের সম্মান করেছেন এবং যথাযথ কাজে লাগিয়েছেন।
বিএনপি মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক অধ্যাপক ডা. মওদুদ হোসেন আলমগীর পাভেল বলেন, বিএনপি শুধুমাত্র একটি রাজনৈতিক দল নয়, বরং এটি একটি মানবিক দল। বাংলাদেশ যতবার ক্রান্তিকালে পড়েছে, ততবার শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের পরিবার এগিয়ে এসেছে। ৭ নভেম্বর জাতীয় সংহতি দিবস এদেশের মানুষের প্রকৃত স্বাধীনতা এনে দিয়েছিল। তিনি আরও উল্লেখ করেন, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বাংলাদেশের সংবিধানে প্রথম 'বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম' কথাটি লিপিবন্ধ করেছিলেন। ২০২৬ সালের নির্বাচনে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার আহ্বান জানান তিনি।
বিএনপির বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক প্রকৌশলী আশরাফ উদ্দিন বকুল এবং 'আমরা বিএনপি পরিবার'-এর আহ্বায়ক আতিকুর রহমান রুমনও সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন এ্যাব-এর আহ্বায়ক ও সাবেক সংসদ সদস্য প্রকৌশলী শাহরিন ইসলাম তুহিন। তিনি তার বক্তব্যে বলেন, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের জন্ম না হলে এদেশে স্বাধীনতা আসতো কি না সন্দেহ রয়েছে। তিনি তার পরিবারকে অরক্ষিত রেখে যুদ্ধ করেছেন। বাংলাদেশে বিএনপি না আসলে এদেশ ভুটান বা কম্বোডিয়ার মতো হতে পারতো। তিনি অভিযোগ করেন, শেখ মুজিব স্বাধীনতার পর ক্ষমতায় এসে এদেশের মানুষকে তাদের আত্মপরিচয়ের বাধা সৃষ্টি করেছিলেন এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতায় এসে তার প্রতিফলন ঘটিয়েছেন।
সভায় স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন এ্যাব-এর আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক প্রকৌশলী কাজী আবুল কাশেম। সঞ্চালনায় ছিলেন প্রকৌশলী শামিম রাব্বি সঞ্চয় ও প্রকৌশলী শফিউল আজম ফাহিম।
এছাড়াও আলোচনা সভায় এ্যাব-এর উপদেষ্টা মণ্ডলী ও আহ্বায়ক কমিটির সম্মানিত সদস্যবৃন্দ, দেশের জাতীয় নেতৃবৃন্দ, বিশিষ্ট প্রকৌশলীবৃন্দ এবং সারা দেশ থেকে আগত মহান জাতীয়তাবাদী আদর্শের প্রকৌশলীবৃন্দ উপস্থিত থেকে আলোচনা সভাকে সাফল্যমণ্ডিত করেন।
