এমপি মহিউদ্দিন বাচ্চুর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা

চট্টগ্রাম অফিস
প্রকাশ: ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১০:১২ পিএম

আচরণবিধি ভঙ্গের অভিযোগে নির্বাচন কমিশনের মামলায় আদালতে হাজির না হওয়ায় চট্টগ্রাম-১০ আসনের সংসদ সদস্য মহিউদ্দিন বাচ্চুর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) চট্টগ্রামের চতুর্থ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. সালাউদ্দিনের আদালত এ আদেশ দেন। বিচারক এ মামলায় পরবর্তী শুনানির জন্য ১২ মে সময় নির্ধারণ করেছেন।
নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করে মসজিদে অনুদানের চেক বিতরণের অভিযোগে মহিউদ্দিন বাচ্চুর বিরুদ্ধে গত ১৬ জানুয়ারি নগরের ডবলমুরিং থানা নির্বাচন কর্মকর্তা মুহাম্মদ মোস্তফা কামাল বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেছিলেন। বৃহস্পতিবার এ মামলায় শুনানির দিন ধার্য থাকলেও তিনি আদালতে হাজির হয়নি। এদিন তার পক্ষে সময়ের আবেদন করা হলেও সেটি নিষ্পত্তি করা হয়নি। এর আগে মামলার দিন আদালত মহিউদ্দিন বাচ্চুকে হাজির হতে সমন জারি করেছিল।
আরো পড়ুন: অতি মুনাফার কারণে ভোক্তারা যেন নাভিশ্বাসে না পড়ে
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী শেখ ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী বলেন, তিনি (মহিউদ্দিন বাচ্চু) বৃহস্পতিবার অনুপস্থিত ছিলেন। বাদী পক্ষও আজ হাজির হয়নি। যেহেতু সমন ফেরত এসেছে, তাই গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আদেশ দিয়েছেন আদালত।”
মহিউদ্দিন বাচ্চুর আইনজীবী আবু সাঈদ রবি বলেন, সংসদ অধিবেশন চলছে। তাই তিনি ঢাকায় আছেন। আজ ধার্য দিনে আদালতে হাজির হতে পারেননি। আমরা সময়ের আবেদন করেছিলাম। উনার সাথে আলোচনা করে পরবর্তী করণীয় ঠিক করব। আশা করি, রবিবার তিনি আদালতে হাজির হতে পারবেন।
চট্টগ্রাম-১০ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী মনজুর আলমের অভিযোগের প্রেক্ষিতে আচরণ বিধি ভঙ্গের বিষয়ে নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটি তদন্ত করেছিল। মনজুর আলম অভিযোগ করেছিলেন, “নির্বাচনে সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী মহিউদ্দিন বাচ্চু ২২ ডিসেম্বর জুমার নামাজের আগে চট্টগ্রাম-১০ আসনের সকল মসজিদের ইমাম ও মুয়াজ্জিনকে এক হাজার টাকা করে এবং মাদানী মসজিদে এক লাখ টাকার অনুদানের চেক প্রদান করেছেন, যা খুতবার আগে ইমাম সাহেব মুসল্লিদের অবহিত করেন। একইভাবে ২৪ ডিসেম্বর লালখান বাজারে তার নির্বাচনী কার্যালয়ে চট্টগ্রাম-১০ আসনের মসজিদের ইমাম-মুয়াজ্জিনদের ৬০ হাজার টাকা করে অনুদানের চেক প্রদান করেন।”
আরো পড়ুন: মিরসরাইয়ে অসচ্ছল কলেজ শিক্ষার্থীদের মাঝে বই বিতরণ
এ বিষয়ে ইসির দায়ের করা মামলার এজাহারে বলা হয়, “এই ঘটনার প্রেক্ষিতে নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটির অনুসন্ধানে ২২ ডিসেম্বর মাদানি মসজিদে মহিউদ্দিন বাচ্চু উপস্থিত থেকে ২০-২৫টি মসজিদের অনুকূলে এক লাখ টাকা করে অনুদানের চেক বিতরণ করেছে বলে জানতে পারে। এবং ২৩ ডিসেম্বর মধ্যম রামপুরায় নতুন বাজার জামে মসজিদে বাচ্চুর পক্ষে দেলোয়ার হোসেন খোকা ৫২ হাজার টাকা করে মসজিদ, মন্দির ও প্যাগোডার প্রতিনিধিদের অনুদানের চেক বিতরণ করেছে বলে জানতে পারে।” মহিউদ্দিন বাচ্চু নিজে ও তার পক্ষে অন্য ব্যক্তির চেক বিতরণের ঘটনার আংশিক সত্যতা পাওয়া গেছে বলে এজাহারে অভিযোগ করা হয়। পরে নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটি ২১টি মসজিদ, মন্দির ও প্যাগোডায় অনুদানের চেক বিতরণের সত্যতা পায়। এ নিয়ে ৪ জানুয়ারি নির্বাচন কমিশন মামলা করার নির্দেশ দেয়।
এদিকে নির্বাচনী আচরণ বিধিমালা ২০০৮ এর ৩ ধারা অনুসারে, কোনো প্রার্থী বা তার পক্ষ থেকে অন্য কোনো ব্যক্তি নির্বাচন পূর্ব সময়ে কোনো ব্যক্তি, গোষ্ঠী বা কোনো প্রতিষ্ঠানে প্রকাশ্যে বা গোপনে চাঁদা বা অনুদান দিতে বা দেয়ার অঙ্গীকার করতে পারবেন না।
প্রসঙ্গত, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রাম-১০ আসনে মহিউদ্দিন বাচ্চু ৫৯ হাজার ২৪ ভোট পেয়ে জয়ী হন। তার নিটকতম প্রতিদ্বন্দ্বী ফুলকপি প্রতীকের প্রার্থী মনজুর আলম পেয়েছিলেন ৩৯ হাজার ৫৩৫ ভোট।