×

অপরাধ

ড্রামে খণ্ডিত মরদেহ, হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যে যেকারণ

Icon

কাগজ ডেস্ক

প্রকাশ: ১৫ নভেম্বর ২০২৫, ০১:৫৪ পিএম

ড্রামে খণ্ডিত মরদেহ, হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যে যেকারণ

ছবি : সংগৃহীত

রংপুরের ব্যবসায়ী আশরাফুল হককে প্রেমের ফাঁদে ফেলে ১০ লাখ টাকা আদায় করতে চেয়েছিল তার বন্ধু জরেজুল ইসলাম ও তার প্রেমিকা শামীমা আক্তার ওরফে কোহিনুর (৩৩)। পরিকল্পনা অনুযায়ী এক মাস আগে শামীমা আশরাফুলের সঙ্গে মিথ্যা প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলে। পরে তাকে ঢাকায় নিয়ে গিয়ে হত্যার পর লাশ ২৬ টুকরো করা হয়।

শনিবার (১৫ নভেম্বর) কারওয়ান বাজারে র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে এক ব্রিফিংয়ে র‍্যাব-৩ অধিনায়ক লে. কর্নেল ফায়েজুল আরেফীন এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, ১৪ নভেম্বর কুমিল্লার লাকসামের বড় বিজরা এলাকায় অভিযান চালিয়ে শামীমাকে তার বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।

র‌্যাব জানায়, ১১ নভেম্বর রাত ৮টায় আশরাফুল ব্যবসা সংক্রান্ত পাওনা আদায়ের জন্য বন্ধু জরেজুল ইসলামের সঙ্গে রংপুর থেকে ঢাকায় রওনা হন। পরদিন থেকে তার মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। ১৩ নভেম্বর হাইকোর্টে পানির পাম্প সংলগ্ন দুইটি নীল রঙের ড্রামের ভিতর ২৬ খণ্ডের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। আঙ্গুলের ছাপ বিশ্লেষণ করে সিআইডি নিশ্চিত হয় লাশটি আশরাফুল হকের।

আরো পড়ুন : বাড্ডায় বাসায় ঢুকে যুবককে গুলি করে হত্যা

র‌্যাব জানিয়েছে, শামীমার সঙ্গে জরেজুলের এক বছরের সম্পর্ক ছিল। জরেজুল শামীমাকে জানান, আশরাফুলকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে ব্ল্যাকমেইল করে ১০ লাখ টাকা আদায় করা যাবে। এই পরিকল্পনা অনুযায়ী শামীমা আশরাফুলের সঙ্গে একমাস আগে থেকে ফোনে যোগাযোগ শুরু করে। ঢাকায় আসার পর তিনজন একটি ভাড়া বাসায় ওঠেন।

ফায়েজুল আরেফীন বলেন, রংপুর থেকে ঢাকায় আসার আগে জরেজ তার প্রেমিকা শামীমা আক্তারকে ফোনে জানান, আশরাফুলের সাথে সে যেন অন্তরঙ্গ ভিডিও ধারণ করে এবং সেই ভিডিও দেখিয়ে যাতে ১০ লাখ টাকা আদায় করা যায়। পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী ভুক্তভোগী আশরাফুলকে মালটার শরবতের সাথে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে হালকা অচেতন করেন শামীমা। যাতে বাইরে থেকে জরেজ অন্তরঙ্গ মুহুর্তের ভিডিও ধারণ করলে আশরাফুল তা বুঝতে না পারে। পরবর্তীতে যখন তারা একান্ত সময় কাটায় তখন জরেজ বাইরে থেকে ভিডিও ধারণ করেন। ওই ভিডিও শামীমার মোবাইলে ধারণ করা হয়, যা বর্তমানে উদ্ধারকৃত মোবাইলে রয়েছে।

শামীমার বরাত দিয়ে এই র‌্যাব কর্মকর্তা জানান, গত ১২ নভেম্বর দুপুরে আশরাফুল পুরোপুরি অচেতন হয়ে পড়লে জরেজ আশরাফুলের হাত দড়ি দিয়ে বেঁধে ফেলেন এবং মুখ স্কচটেপ দিয়ে আটকে দেন। জরেজ অতিরিক্ত ইয়াবা সেবন করে উত্তেজিত হয়ে অচেতন থাকা ভিকটিম আশরাফকে হাতুড়ি দিয়ে এলোপাতাড়ি আঘাত করতে থাকেন। অতিরিক্ত আঘাত এবং মুখ স্কচটেপ দিয়ে আটকানো থাকায় শ্বাস না নিতে পেরে ঘটনাস্থলেই আশরাফুল মারা যায়।  

তিনি আরো জানান, আশরাফুলের মৃতদেহ গুম করার উদ্দেশ্য গত ১৩ নভেম্বর সকালে জরেজ নিকটস্থ বাজার থেকে চাপাতি ও ড্রাম কিনে আনে। জরেজ চাপাতি দিয়ে লাশ ২৬ টুকরা করে দুইটি নীল রংয়ের ড্রামে ভরে রাখে। পরবর্তীতে দুপুর ২টা ৪৩ মিনিটে একটি সিএনজি ভাড়া করে ড্রাম দুটি সিএনজিতে নিয়ে দুপুর ২টা ৫২ মিনিটে বাসা থেকে রওনা করে। পথিমধ্যে তারা ধরা পড়ে যাওয়ার সম্ভবনা চিন্তা করে সিএনজি পরিবর্তন করে অন্য একটি সিএনজিতে রওনা হন।

দুপুর ৩টা ১৩ মিনিটে হাইর্কোট মাজার গেইটের নিকট এলে রাস্তায় আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতা দেখে লাশভর্তি ড্রামদুটি হাইকোর্টের পানির পাম্প সংলগ্ন প্রধান সড়কের পাশে একটি বড় গাছের নিচে ফেলে তারা অতিদ্রুত হাইকোর্ট এলাকা থেকে একটি অটো যোগে সায়েদাবাদ চলে যান। সায়েদাবাদ যাওয়ার পর জরেজ শামীমাকে কুমিল্লায় তার নিজ বাড়িতে চলে যেতে বলেন এবং তিনি রংপুরে তার নিজের বাড়িতে চলে যাবে বলে শামীমাকে জানায়। সে অনুযায়ী শামীমা কুমিল্লায় তার নিজ বাড়িতে যান এবং জরেজের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন।

র‍্যাব জানায়, ব্ল্যাকমেইল করে টাকা আদায় করাই তাদের মূল উদ্দেশ্য ছিল। তবে হত্যাকাণ্ডের পেছনে পূর্ব শত্রুতা আছে কি না, তা জিজ্ঞাসাবাদে জানা যাবে। ইতোমধ্যে মূল আসামি জরেজুল ইসলামকে ডিবি গ্রেপ্তার করেছে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

বাংলাদেশ সীমান্তের কাছে ভারত কেন সামরিক শক্তি বাড়াচ্ছে?

বাংলাদেশ সীমান্তের কাছে ভারত কেন সামরিক শক্তি বাড়াচ্ছে?

বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করতে রিয়াদের দৌড়ঝাঁপ, আতঙ্কে ব্যবসায়ীরা

বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করতে রিয়াদের দৌড়ঝাঁপ, আতঙ্কে ব্যবসায়ীরা

ড্রামে খণ্ডিত মরদেহ, হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যে যেকারণ

ড্রামে খণ্ডিত মরদেহ, হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যে যেকারণ

ভালুকায় ফখরুদ্দিন আহমেদের মনোনয়ন বাতিলের দাবিতে মশাল মিছিল

ভালুকায় ফখরুদ্দিন আহমেদের মনোনয়ন বাতিলের দাবিতে মশাল মিছিল

সব খবর

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App