×

ঢাকা

গোপালগঞ্জে তিন মামলায় আসামি ২,৬০০, গ্রেপ্তার ১৬৭

Icon

কাগজ ডেস্ক

প্রকাশ: ১৯ জুলাই ২০২৫, ০৯:০৮ এএম

গোপালগঞ্জে তিন মামলায় আসামি ২,৬০০, গ্রেপ্তার ১৬৭

এ পর্যন্ত অন্তত ১৬৭ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ছবি : সংগৃহীত

গোপালগঞ্জে এনসিপির কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে সহিংসতার ঘটনায় গত দুই দিনে করা তিন মামলায় আসামির সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৬০০ জনে। এ পর্যন্ত অন্তত ১৬৭ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

পুলিশের দাবি, যাচাই-বাছাইয়ের পরই তাদের গ্রেপ্তার দেখানো হচ্ছে। তবে আটক ব্যক্তিদের স্বজনদের অভিযোগ, অনেক নির্দোষ, শিশু-কিশোর, দিনমজুর, রিকশাচালক, এমনকি স্কুলছাত্রদেরও ধরে নিয়ে গেছে পুলিশ।

শুক্রবার আটককৃতদের পরিবারের সদস্যরা সদর থানার সামনে জড়ো হন। প্রতিবেদকের সঙ্গে কথা বলা ১৬ পরিবারের মধ্যে ছয়টি পরিবার জানিয়েছে, তাদের শিশু সন্তানদের আটক করা হয়েছে। ১৬ বছরের কিশোর আবীর হোসেন শুভ মায়ের থাইরয়েডের ওষুধ আনতে গিয়ে ধরা পড়ে—এমনই দাবি করেছেন শুভর মা আফরোজা আক্তার। তার সঙ্গে আটক হয় তার ১৫ বছরের ফুফাতো ভাই শিপনও।

একইভাবে নবম শ্রেণির ছাত্র হাম্মাদুল ইসলাম রিপন (১৪) আর অষ্টম শ্রেণির কাজী মোকাররম হোসেন (১৩)-এর পরিবারের দাবি, ঝালমুড়ি খেতে বাসার বাইরে গিয়েই রিপন ধরা পড়ে, আর মোকাররমকে কোনো কারণ ছাড়াই আটক করেছে পুলিশ।

আরো পড়ুন : গোপালগঞ্জে কারফিউ, গ্রেপ্তার ১৬৪ 

এদের মধ্যে কারও বাবা নেই, কেউ পরিবার চালাতে লেখাপড়ার পাশাপাশি বিশুদ্ধ পানি সরবরাহের কাজ করেন। তাদের মধ্যে একজনের নাম দীপু বল্লভ (১৬)। দীপুর সঙ্গে আটক হয়েছেন নয়ন দাস (২০), সেও পড়ালেখা ছেড়ে পানি সরবরাহের কাজ করছে।

বিস্কুট কারখানার শ্রমিক শামীম শেখ (২২) কাজ শেষে ফিরতে গিয়ে আটক হন। তার স্ত্রী স্বপ্না বেগম স্বামীর জন্য থানার সামনে ব্যাগে কাপড় নিয়ে অপেক্ষা করছিলেন। পাঁচ বছরের মেয়ে সামিয়া বাবাকে খুঁজতে মায়ের হাত ধরে থানার গেট অবধি গেছে।

এমনিভাবে রিকশাচালক ইশা খন্দকার, অটোরিকশাচালক ওসমান গনি, ওয়ার্কশপ মিস্ত্রি ইয়াছিন শেখ, মাছ ব্যবসায়ী দেলোয়ার হোসেন, কৃষক মোদক হালদার, ইজিবাইক চালক আরমান হোসেনসহ অনেকের পরিবার দাবি করছে—তাদের স্বজনরা কোনো রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন না।

গোপালগঞ্জ সদর থানার পুলিশের ওপর হামলা ও গাড়ি পোড়ানোর ঘটনায় নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের জেলা সভাপতি-সম্পাদকসহ ৭৫ জনের নাম উল্লেখ করে আরো ৪৫০-৫০০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে। কোটালীপাড়ায় সড়ক অবরোধের ঘটনায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে এক হাজার ৬৫৫ জন আসামি করা হয়েছে। কাশিয়ানীতে সন্ত্রাস দমন আইনে আরেক মামলায় ৭০ জনের নাম উল্লেখ করে ২৫০-৩৫০ জনকে অজ্ঞাত রাখা হয়েছে।

এ সহিংসতার পর বুধবার রাত ৮টা থেকে গোপালগঞ্জ শহরে কারফিউ চলছে। শুক্রবার জুমার নামাজের সময় কিছুটা শিথিল হলেও পরে ফের শহর ফাঁকা হয়ে যায়। মূল সড়কগুলো যানবাহনশূন্য, দোকানপাট বন্ধ, মানুষের চোখে-মুখে উদ্বেগ।

গোপালগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ড. রুহুল আমিন সরকার বলেন, সন্দেহভাজন হিসেবে আটক করে যাচাই-বাছাই চলছে। অপরাধের প্রমাণ পেলে তবেই গ্রেপ্তার দেখানো হচ্ছে।

তবে আটককৃতদের পরিবারগুলো বলছে, ‘নির্দোষদের’ বিপুল সংখ্যককে ধরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। শিশুদের পড়াশোনা অনিশ্চিত, কেউ কেউ আহত অবস্থায়ও পুলিশের হাতে আটক।

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সমাবেশ ঘিরে সংঘর্ষে এখন পর্যন্ত পাঁচ তরুণ নিহত হয়েছেন, গুলিতে আহত হয়েছেন আরো অনেকে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কড়া অবস্থান, কারফিউ—তবু আতঙ্ক কমছে না স্বজনদের। 

টাইমলাইন: অন্তর্বর্তীকালীন সরকার

আরো পড়ুন

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

মঞ্চে পড়ে গেলেন জামায়াত আমির, বসেই দিলেন বক্তৃতা

মঞ্চে পড়ে গেলেন জামায়াত আমির, বসেই দিলেন বক্তৃতা

গোপালগঞ্জে এনসিপির কর্মসূচিতে হামলার ঘটনায় যা বললেন বিএনপি নেতা

গোপালগঞ্জে এনসিপির কর্মসূচিতে হামলার ঘটনায় যা বললেন বিএনপি নেতা

পিআর পদ্ধতি নিয়ে যা বললেন জামায়াতে ইসলামীর নেতারা

পিআর পদ্ধতি নিয়ে যা বললেন জামায়াতে ইসলামীর নেতারা

সমাবেশ শেষের আগেই বাড়ি ফিরতে শুরু করে জামায়াতের অনেক নেতাকর্মী

সমাবেশ শেষের আগেই বাড়ি ফিরতে শুরু করে জামায়াতের অনেক নেতাকর্মী

সব খবর

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App