স্ট্রোক মস্তিষ্কের রোগ, হার্টের নয়

ঢাবি প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৯ অক্টোবর ২০২৪, ১২:৫৫ পিএম

বিশ্ব স্ট্রোক দিবস উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা
‘স্ট্রোক মস্তিষ্কের রোগ, হার্টের রোগ নয়।’ মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর) সকাল ৯টায় বিশ্ব স্ট্রোক দিবস উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিশ্ববিদ্যালয়ের মিলটন হলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা এ তথ্য জানান।
বাংলাদেশ সোসাইটি অব নিউরোসার্জন আয়োজিত জনসচেতনতামূলক সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা বলেন, স্ট্রোক প্রধানত দুই প্রকারের হয়ে থাকে, মস্তিষ্কে হঠাৎ রক্ত সঞ্চালন কমে গেলে বা বন্ধ হয়ে গেলে মস্তিষ্কের এই অংশের কার্যক্ষমতা কিছু সময়ের জন্য অথবা সময়মতো সঠিক চিকিৎসা না পেলে স্থায়ীভাবে নষ্ট হয়ে যেতে পারে এবং রোগী পক্ষাঘাতগ্রস্ত প্যারালাইসিস সমস্যা, কথা বলতে অক্ষম হওয়া, মুখ বাঁকা হয়ে যাওয়া বা খিচুনিতে আক্রান্ত হওয়া, এমনকি অজ্ঞান হয়ে যেতে পারে। একেই ইস্কেমিক স্ট্রোক বলা হয়।
আবার অন্য আরেকরকম স্ট্রোক হয়, যেখানে মস্তিস্কের রক্তনালী ফেটে গিয়ে রক্তক্ষরণ হতে পারে সাধারণভাবে, যা ব্রেন হেমারেজ নামে পরিচিত। এ রকম স্ট্রোকের উপসর্গ সাধারণত আরো ভয়াবহ হয়। এছাড়া মস্তিষ্কের রক্তনালীর অন্যান্য রোগ থাকার ফলে রক্তপাত হয়ে স্ট্রোক হয়। রক্তনালীর বিশেষ অংশ ফুলে গিয়ে ফেটে যাওয়া ধমনী ও শিরার অস্বাভাবিকতা থেকেও স্ট্রোক হতে পারে।’
সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ সোসাইটি অব নিউরোসার্জনসের সদস্য সচিব ডা. নুরুজ্জামান খান বলেন, ‘স্ট্রোক মস্তিষ্কের রোগ, হার্টের রোগ নয়। মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ অথবা মস্তিষ্কে হঠাৎ রক্ত সঞ্চালন কমে গেলে বা বন্ধ হয়ে গেলে স্ট্রোক হয়ে থাকে। বিশ্বজুড়ে পঙ্গুতত্ত্বের প্রধান কারণ স্ট্রোক এবং দ্বিতীয় সর্বোচ্চ মৃত্যুর কারণ হিসেবেও স্ট্রোককে দায়ী করা যায়। অথচ অনেকাংশেই স্ট্রোক প্রতিরোধ করা সম্ভব।’
বিএসএমএমইউ উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যপক ডা. আবুল কালাম আজাদ বলেন, অল্প বয়সী মানুষের স্ট্রোকের অন্যতম কারণ ড্রাগ। সম্প্রতি তরুণ সমাজ একটি সুন্দর বিপ্লব করে নতুন বাংলাদেশের সূচনা করেছে। নতুন এ বাংলাদেশে যারা তরুণদের নেশাজাতীয় দ্রব্য তুলে দিচ্ছে, তাদের কঠোরতম শাস্তির আওতায় আনতে হবে।
বিশ্ব স্ট্রোক দিবস ২০২৪ উপলক্ষে ‘বাংলাদেশ সোসাইটি অব নিউরোসার্জনস’ আয়োজিত এই সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ সোসাইটি অব নিউরোসার্জনসের আহ্বায়ক অধ্যাপক ডা মো. মওদুদুল হক, সদস্য সচিব ডা. মো. নুরুজ্জামান খান, যুগ্ম আহ্বায়ক ডা. মো. জাহিদ রায়হান প্রমুখ। এর আগে সকালে একটি জনসচেতনতামূলক র্যালি অনুষ্ঠিত হয়।
উল্লেখ্য, বিশ্বে প্রতি বছর ২১ অক্টোবর স্ট্রোক দিবস পালন করা হয়। এই দিবসের মূল প্রতিপাদ্য হচ্ছে স্ট্রোক কি তা জানা ও বোবা কিভাবে স্ট্রোক প্রতিরোধ করা যায়, স্ট্রোক আক্রান্ত রোগীর পরিপূর্ণ যত্ন ও উপযুক্ত চিকিৎং সম্পর্কে জনসাধারণকে সচেতন করা। ২০২৪ সালের বিশ্ব স্ট্রোক দিবসের থিম হচ্ছে "Greater than Stroke Active Challenge" অর্থাৎ শারীরিক পরিশ্রম খেলাধুলার মাধ্যমে স্ট্রোকের তীব্রতা, ভয়াবহতা ও সংখ্যা হ্রাসের এবং স্ট্রোক-পরবর্তী পুনর্বাসনের প্রক্রিয়াগুলো এক সচেতনতা।