৬ লাশ পোড়ানোর মামলার ১১তম সাক্ষ্যগ্রহণ আজ

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ১৫ অক্টোবর ২০২৫, ০৮:২২ এএম

ছবি : সংগৃহীত
জুলাই-আগস্ট আন্দোলনের সময় আশুলিয়ায় ছয়জনের লাশ পোড়ানোসহ সাতজনকে হত্যার অভিযোগে দায়ের হওয়া মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ১১তম দিনের সাক্ষ্যগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।
বুধবার (১৫ অক্টোবর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২–এর চেয়ারম্যান বিচারপতি নজরুল ইসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বে তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেলে এ সাক্ষ্যগ্রহণ হবে। এদিন দুজন সাক্ষী আদালতে তাঁদের জবানবন্দি দেবেন।
গত ৯ অক্টোবর মামলার দশম দিনে সাক্ষ্য দেন শহীদ ওমর ফারুকের বাবা চান মিয়া। তিনি ১৪তম সাক্ষী হিসেবে গত বছরের ৫ আগস্টের ভয়াবহ ঘটনার বিবরণ তুলে ধরেন। পরে তাঁকে জেরা করেন পলাতক আট আসামির পক্ষে স্টেট ডিফেন্স ও আসামিপক্ষের আইনজীবীরা। এরপর প্রসিকিউশনের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আজকের দিন নির্ধারণ করে ট্রাইব্যুনাল।
সেদিন প্রসিকিউশনের পক্ষে শুনানি পরিচালনা করেন প্রসিকিউটর সাইমুম রেজা তালুকদার, তাঁর সঙ্গে ছিলেন প্রসিকিউটর আবদুস সোবহান তরফদার।
এর আগে ৮ অক্টোবর নবম দিনে সাক্ষ্য দেন এএসআই মনিরুল ইসলাম। তিনি জব্দ তালিকার সাক্ষী হিসেবে জবানবন্দি দেন। ৭ অক্টোবর সাক্ষ্য দেন কনস্টেবল রাশেদুল ইসলাম। ২৮ সেপ্টেম্বর সপ্তম দিনের শুনানিতে নবম সাক্ষী হিসেবে একাত্তর টিভির স্থানীয় সাংবাদিক জাহিদুল ইসলাম অনিকের জেরা সম্পন্ন হয়। পলাতক আট আসামির পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত ও আসামিপক্ষের আইনজীবীরা তাঁকে জেরা করেন।
আরো পড়ুন : বাংলাদেশের রাজনীতিতে সেফ এক্সিট কারা নিয়েছিলেন?
২৫ সেপ্টেম্বর ষষ্ঠ দিনে সাক্ষ্য দেন জাহিদুল ইসলাম অনিকসহ দুজন সাক্ষী। এর আগে ২৪ সেপ্টেম্বর প্রত্যক্ষদর্শী শফিকুল ইসলামের জেরা শেষে নেওয়া হয় অষ্টম সাক্ষীর জবানবন্দি। ২৩ সেপ্টেম্বর সাক্ষ্য দেন সাত নম্বর সাক্ষী শফিকুল ইসলাম ও প্রত্যক্ষদর্শী মতিবর রহমান। ১৮ সেপ্টেম্বর তৃতীয় দিনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়। প্রথম দিনের (১৫ সেপ্টেম্বর) সাক্ষ্য দেন শহীদ আস সাবুরের ভাই রেজওয়ানুল ইসলাম ও শহীদ সাজ্জাদ হোসেন সজলের বাবা খলিলুর রহমান।
মামলার সূচনা বক্তব্য উপস্থাপন করেন ১৪ সেপ্টেম্বর চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। তিনি গত বছরের ৫ আগস্ট আশুলিয়ায় সংঘটিত ভয়াবহ হত্যাকাণ্ডের বিস্তারিত তুলে ধরেন। এর আগে ২১ আগস্ট ট্রাইব্যুনাল ১৬ আসামির বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেয়। ওই সময় উপস্থিত আট আসামির সাতজন নিজেদের নির্দোষ দাবি করলেও এসআই শেখ আবজালুল হক দোষ স্বীকার করেন এবং রাজসাক্ষী হতে আবেদন জানান। পরবর্তীতে লিখিত আবেদনের ভিত্তিতে তিনি রাজসাক্ষী হন।
মামলায় গ্রেপ্তার আসামিরা হলেন, ঢাকা জেলার সাবেক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) মো. আব্দুল্লাহিল কাফী, সাবেক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সাভার সার্কেল) মো. শাহিদুল ইসলাম, পরিদর্শক আরাফাত হোসেন, এসআই মালেক, এসআই আরাফাত উদ্দিন, এএসআই কামরুল হাসান, এসআই আবজাল ও কনস্টেবল মুকুল। তবে সাবেক এমপি সাইফুলসহ আটজন আসামি এখনও পলাতক।
প্রসিকিউশন গত ২ জুলাই মামলার আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করে। অভিযোগপত্রের সঙ্গে ৩১৩ পৃষ্ঠার তথ্য, ৬২ জন সাক্ষীর তালিকা, ১৬৮ পৃষ্ঠা দালিলিক প্রমাণ ও দুটি পেনড্রাইভ সংযুক্ত করা হয়। ট্রাইব্যুনাল পরবর্তীতে অভিযোগগুলো আমলে নেয় এবং বিচার প্রক্রিয়া শুরু করে।
উল্লেখ্য, গত বছরের ৫ আগস্ট সাভারের আশুলিয়ায় পুলিশের গুলিতে ছয় তরুণ নিহত হন। এরপর তাঁদের লাশ পুলিশ ভ্যানে তুলে আগুনে পুড়িয়ে ফেলা হয়। প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, তখনও একজন জীবিত ছিলেন। তাঁকেও পেট্রোল ঢেলে জীবন্ত পুড়িয়ে মারা হয়। এ ঘটনায় গত বছরের ১১ সেপ্টেম্বর মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মামলা দায়ের করা হয়।