রাজনীতির আঁতুড়ঘর ডাকসু, অভিষেক হয় যেসব জাতীয় নেতার

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৯:৩৯ এএম

বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে নানাভাবে ভূমিকা রেখেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ নির্বাচন (ডাকসু)। ছবি : সংগৃহীত
কেবল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েই (ঢাবি) নয়, বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে নানাভাবে ভূমিকা রেখেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ নির্বাচন (ডাকসু)। এ মঞ্চ থেকেই জাতীয় রাজনীতিতে অভিষেক হয়েছে বহু জাতীয় নেতার।
ইতিহাসের বাঁকে বাঁকে ছাত্র সমাজের কণ্ঠস্বর, মুক্তিযুদ্ধ আর গণতান্ত্রিক লড়াই-সংগ্রামের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে ওঠায় ডাকসুকে ‘দ্বিতীয় সংসদ’ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ শুধু শতবর্ষী বিদ্যাপীঠের সীমায় আটকে থাকেনি, বরং নেতৃত্ব দিয়েছে পুরো দেশকে।
১৯২১ সালে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর ১৯২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদের প্রথম সাধারণ সম্পাদক মনোনীত হন যোগেন্দ্রনাথ সেনগুপ্ত। পরের বছর সহ-সভাপতি (ভিপি) হন মমতাজউদ্দিন আহমেদ এবং সাধারণ সম্পাদক (জিএস) হন এ কে মুখার্জী। প্রায় তিন দশক পর ১৯৫৩-৫৪ শিক্ষাবর্ষে গঠনতন্ত্র পরিবর্তন করে নামকরণ হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ বা ডাকসু।
আরো পড়ুন : ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনে ভোটগ্রহণ শুরু
ষাটের দশকের উত্তাল সময়ে স্বাধিকার-স্বাধীনতা আন্দোলনে ডাকসু জাতিকে পথ দেখায়। ১৯৬২-৬৩ শিক্ষাবর্ষে ভিপি ছিলেন শ্যামাপ্রসাদ ঘোষ, জিএস কে এম ওবায়দুর রহমান। এরপর রাশেদ খান মেনন, মতিয়া চৌধুরী, তোফায়েল আহমেদ, আ স ম আবদুর রবসহ অনেকেই ডাকসুর নেতৃত্বে উঠে আসেন।
স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালে মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম ও মাহবুব জামান নেতৃত্বে আসেন। তবে ১৯৭৩ সালের নির্বাচন ঘিরে বিতর্কের পর দীর্ঘ সময় আর ভোট হয়নি। পরবর্তী সময়ে মাহমুদুর রহমান মান্না, আখতারুজ্জামান, জিয়াউদ্দিন বাবলু, সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমদ, আমানউল্লাহ আমান প্রমুখ ডাকসুর ইতিহাসে জায়গা করে নেন।
এরশাদ পতনের পর দেশে গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা ফিরলেও দীর্ঘ বিরতিতে ডুবে যায় ডাকসু। অবশেষে প্রায় তিন দশক পর ২০১৯ সালে হয় সর্বশেষ নির্বাচন। সেবার ভিপি হন কোটা আন্দোলনের নেতা নুরুল হক নুর।
ছয় বছর পর আবারো ডাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এবার অংশ নিচ্ছে প্রায় সব সংগঠন, তবে সরকার পতনের পর নিষিদ্ধ হওয়া ছাত্রলীগ নেই ভোটের লড়াইয়ে।
আজ মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের আটটি কেন্দ্রের ৮১০টি বুথে চলছে ভোটগ্রহণ। এবার মোট ভোটার সংখ্যা ৩৯ হাজার ৮৭৪ জন। পাঁচ ছাত্রী হলে ১৮ হাজার ৯৫৯ ভোটার এবং ১৩ ছাত্র হলে ভোটার ২০ হাজার ৯১৫ জন।
ডাকসুর ২৮টি পদের জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ৪৭১ জন প্রার্থী। ১৮টি হল সংসদে ২৩৪টি পদের জন্য লড়ছেন ১ হাজার ৩৫ জন প্রার্থী। অর্থাৎ প্রতিটি ভোটারকে মোট ৪১টি ভোট দিতে হচ্ছে। এবারের নির্বাচনে আংশিক ও পূর্ণাঙ্গ মিলিয়ে অন্তত ১০টি প্যানেল অংশ নিয়েছে, এর বাইরে রয়েছেন বহু স্বতন্ত্র প্রার্থীও।