নির্বাচনে ১৫০ পর্যবেক্ষক পাঠাবে ইইউ: ইসি সচিব

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৬:০৫ পিএম

সোমবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে ইসি ভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ। ছবি: সংগৃহীত
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করতে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) একটি বড় দল বাংলাদেশে আসবে। প্রায় ১৫০ সদস্যের এই পর্যবেক্ষক দল নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার পর থেকে ধাপে ধাপে এদেশে আসবে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিবালয়ের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ। সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর) দুপুরে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে ইইউ’র সাত সদস্যের একটি প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ তথ্য জানান। ইইউ প্রতিনিধি দলে নেতৃত্ব দেন সিনিয়র ইলেকশন এক্সপার্ট রিকার্ডো সেলেরি।
আখতার আহমেদ জানান, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, বাংলাদেশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং নির্বাচন কমিশনের মধ্যে একটি ত্রিপক্ষীয় সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের মাধ্যমে পর্যবেক্ষক মিশন বাস্তবায়ন করা হবে। এই সমঝোতার ধারাবাহিকতায় ইইউ পর্যবেক্ষক দল বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশে আসবে এবং পুরো নির্বাচনী প্রক্রিয়া শেষে গেজেট প্রকাশ পর্যন্ত তারা পর্যবেক্ষণ কার্যক্রম চালাবে।
তিনি বলেন, ইইউ প্রতিনিধি দল আমাদের কাছ থেকে কয়েকটি বিষয়ে স্পষ্টীকরণ চেয়েছেন। তারা জানতে চেয়েছেন ভোটকেন্দ্রে প্রবেশাধিকার, ভোটারদের গোপন কক্ষে প্রবেশের ব্যবস্থা, ভোট গণনা প্রক্রিয়ায় উপস্থিত থাকার সুযোগ ইত্যাদি বিষয় সম্পর্কে। ইইউ পর্যবেক্ষক দল একসাথে ১৫০ জন আসবে না, বরং পর্যায়ক্রমে বিভিন্ন দলে বিভক্ত হয়ে তারা বাংলাদেশে আসবেন। এর মধ্যে কারা আসবেন, তাদের বিস্তারিত তথ্য, ভিসা ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা সব কিছু যথাযথভাবে সমন্বয় করা হবে।
ইসি সচিব বলেন, ওনারা নির্বাচন শিডিউল ঘোষণার পর থেকে আসতে চান। একসাথে ১৫০ জন নয়, বিভিন্ন ধাপে তাদের প্রতিনিধিরা আসবেন এবং নির্বাচনের শেষ পর্যন্ত থাকবেন। বিদেশি পর্যবেক্ষকদের আসতে হলে ভিসা, নিরাপত্তা ও লজিস্টিক বিষয়গুলো সঠিকভাবে মেনে চলতে হবে। এই জন্যই ধাপে ধাপে আগমন হবে। প্রতিনিধিদল ইতোমধ্যে রংপুর ও চট্টগ্রামে গিয়েছে এবং সেখানে ইসির কার্যক্রম দেখে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন। বৈঠক শেষে তারা একটি খসড়া প্রস্তাব ইসির কাছে রেখে গেছেন। ইসি সেটি পর্যালোচনা করে সইয়ের জন্য প্রস্তুত করবে। যদি কোনো পর্যবেক্ষণ বা সংশোধন প্রয়োজন হয়, তা জানানো হবে।
আখতার আহমেদ বলেন, তারা আগামীকাল চলে যাবেন। যাওয়ার পরে আমাদের কাছে একটি পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন পাঠাবেন। তাদের দেওয়া ড্রাফট আমরা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করব, এরপর সমঝোতা স্মারক সইয়ের দিকে এগোব।
এর আগে গত ২২ সেপ্টেম্বর ইউরোপীয় ইউনিয়নের আট সদস্যের একটি প্রাক-নির্বাচনী তথ্য-অনুসন্ধানী দল নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করে। ওই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ এবং ইসি সচিবালয়ের যুগ্মসচিব (নির্বাচন ব্যবস্থাপনা-২) মো. মঈন উদ্দীন খানসহ চারজন কর্মকর্তা।
ইসি কর্মকর্তারা জানান, ইইউ’র এই তথ্য-অনুসন্ধানী দল সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন অংশীজনের সঙ্গে আলোচনা করে আসন্ন জাতীয় নির্বাচন সম্পর্কে একটি সুপারিশমালা তৈরি করবে। সেই সুপারিশের ভিত্তিতেই ইউরোপীয় ইউনিয়ন চূড়ান্তভাবে নির্বাচনকালীন পর্যবেক্ষক দল পাঠানোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে।