ভাষাসংগ্রামী আহমদ রফিককে শহীদ মিনারে শেষ শ্রদ্ধা

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ০৪ অক্টোবর ২০২৫, ১২:৫৬ পিএম

ভাষা সৈনিক ও কবি আহমদ রফিকের মরদেহে শেষ শ্রদ্ধা জানিয়েছেন সর্বস্তরের মানুষ। ছবি : সংগৃহীত
ভাষাসংগ্রামী, প্রাবন্ধিক ও রবীন্দ্রতত্ত্বাচার্য আহমদ রফিককে শহীদ মিনারে শেষ শ্রদ্ধা জানিয়েছেন সর্বস্তরের মানুষ। শনিবার (৪ অক্টোবর) বেলা ১১টার দিকে তার মরদেহ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে নেওয়া হলে ভাষা, সাহিত্য ও সংস্কৃতিপ্রেমীরা সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে তাকে শ্রদ্ধা জানান।
মরদেহবাহী অ্যাম্বুলেন্সটি শহীদ মিনারে পৌঁছালে মুহূর্তেই সেটি ঘিরে ধরেন উপস্থিত জনতা। শ্রদ্ধা নিবেদনের পর ‘আহমদ রফিক ফাউন্ডেশন’ জানায়, তার শেষ ইচ্ছা অনুযায়ী মরদেহ বারডেম (ইব্রাহিম মেডিকেল কলেজ) হাসপাতালে দান করা হবে। মেডিকেল শিক্ষার্থীদের প্রশিক্ষণ ও গবেষণার কাজে তার মরণোত্তর দেহ ব্যবহৃত হবে।
গত বৃহস্পতিবার রাত ১০টা ১২ মিনিটে বারডেম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আহমদ রফিক শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৯৬ বছর। দীর্ঘদিন তিনি ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, ক্রনিক কিডনি ফেইলিওর, আলঝেইমার্স, পারকিনসন্স, ইলেকট্রোলাইটস ইমব্যালেন্স, বেডশোর ও ফুসফুস সংক্রমণে ভুগছিলেন।
আরো পড়ুন : গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা আটকের নিন্দায় বাংলাদেশ
১৯২৯ সালের ১২ সেপ্টেম্বর ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় জন্মগ্রহণ করেন আহমদ রফিক। স্ত্রীকে হারানোর পর রাজধানীর নিউ ইস্কাটনের গাউসনগরে একাই বসবাস করতেন তিনি। নিঃসন্তান এই ভাষাসংগ্রামীর জীবনের সবচেয়ে বড় সম্পদ ছিল তার বিপুল বইয়ের সংগ্রহ।
ভাষা আন্দোলনের ইতিহাসবিদ, গবেষক ও লেখক হিসেবে তিনি শতাধিক গ্রন্থ রচনা ও সম্পাদনা করেছেন। একুশে পদক, বাংলা একাডেমি পুরস্কারসহ অসংখ্য সম্মাননায় ভূষিত হন। রবীন্দ্রচর্চায় অনন্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ কলকাতার টেগর রিসার্চ ইনস্টিটিউট তাকে ‘রবীন্দ্রতত্ত্বাচার্য’ উপাধিতে সম্মানিত করে।
২০১৯ সাল থেকে তার দৃষ্টিশক্তি ক্ষীণ হতে থাকে, পরবর্তী সময়ে প্রায় অন্ধ হয়ে পড়েন। ২০২১ সালে পড়ে গিয়ে পা ভাঙার পর থেকেই তার শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটে। জীবদ্দশায় তার চিকিৎসা ও রাষ্ট্রীয় সহায়তার জন্য একাধিকবার দাবি জানিয়েছিল দেশের বুদ্ধিজীবী সমাজ।