টানা বৃষ্টিতে পাকিস্তানে ভয়াবহ বন্যা, মৃত্যু ২০০ ছাড়িয়েছে

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ২০ জুলাই ২০২৫, ১২:০৫ পিএম

পাকিস্তানে আকস্মিক বন্যা ও ভূমিধসে এখন পর্যন্ত অন্তত ২০২ জনের মৃত্যু হয়েছে। ছবি : সংগৃহীত
পাকিস্তানে চলতি বর্ষা মৌসুম ভয়াবহ দুর্যোগে রূপ নিয়েছে। জুনের শেষ দিক থেকে শুরু হওয়া টানা অঝোর বৃষ্টি, আকস্মিক বন্যা ও ভূমিধসে এখন পর্যন্ত অন্তত ২০২ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে দেশটির জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ (এনডিএমএ)। নিহতদের মধ্যে ৯৬ জনই শিশু।
সরকারি হিসাবে সবচেয়ে বিপর্যস্ত প্রদেশ পাঞ্জাব, যেখানে মৃত্যু হয়েছে ১২৩ জনের। খাইবার পাখতুনখাওয়ায় মারা গেছেন ৪০ জন, সিন্ধু প্রদেশে ২১ জন, বেলুচিস্তানে ১৬ জন এবং রাজধানী ইসলামাবাদ ও আজাদ কাশ্মীরে একজন করে নিহত হয়েছেন।
মৃতদের বেশিরভাগই ঘরবাড়ি ধসে, ভূমিধস বা হঠাৎ বন্যার কবলে পড়েই মারা গেছেন। এনডিএমএর হিসাবে, ১১৮ জন মারা গেছেন ঘরবাড়ি ধসে, ৩০ জন আকস্মিক বন্যায় এবং বাকিরা ডুবে যাওয়া, বজ্রপাত বা বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে প্রাণ হারিয়েছেন। এ পর্যন্ত ৫৬০ জন আহত, যাদের মধ্যে ১৮২ জন শিশু।
আরো পড়ুন : পাকিস্তানে খাইবার পাখতুনখোয়ার মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা
রাওয়ালপিন্ডি শহরের ধামিয়াল, হাতি চক, মর্গাহ, টেঞ্চ ভাটা ও ফৌজি কলোনির মতো ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় আকস্মিক বন্যায় ছাদ পর্যন্ত পানি উঠে গেছে। অনেক বাসিন্দা প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র ফেলে রেখে ঘর ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়েছেন। ফয়সালাবাদ শহরেও পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। গত দুই দিনেই ৩৩টি দুর্ঘটনায় ১১ জন মারা গেছেন এবং আহত হয়েছেন ৬০ জনের বেশি। দুর্বল ঘরবাড়ি ও অবকাঠামো ধসে প্রাণহানির সংখ্যা বেড়েই চলেছে। স্থানীয় অনেক পরিবার জানায়, বর্ষার আগে ঘর মেরামতের মতো অর্থই ছিল না।
পাঞ্জাবের চাকওয়াল জেলায় ৪৫০ মিলিমিটারের বেশি বৃষ্টিপাতে ৩২টিরও বেশি রাস্তা ডুবে গেছে। খেওয়াল গ্রামের মতো পাহাড়ি এলাকায় ভূমিধসে পিতা-পুত্রসহ একাধিক প্রাণহানি ঘটেছে। অনেক এলাকা এখনো বিদ্যুৎবিহীন ও যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন অবস্থায় রয়েছে।
পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে ক্ষতিগ্রস্ত অঞ্চলগুলোতে রাস্তাঘাট সচল রাখতে ঝিলাম, পিন্ড দাদন খান ও কাল্লার কাহার এলাকায় ভারী যন্ত্রপাতি মোতায়েন করা হয়েছে। রাওয়ালপিন্ডির কারোলি ধোক ব্রিজ এলাকায় সড়ক ধস মেরামত শেষে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে।
প্রবল বর্ষণ আর দুর্বল অবকাঠামো মিলে ভয়াবহ বিপর্যয়কে আরো জটিল করে তুলেছে। এনডিএমএ এবং স্থানীয় প্রশাসন উদ্ধার ও পুনর্বাসন তৎপরতা চালিয়ে গেলেও ক্ষয়ক্ষতির আসল চিত্র আরো বিস্তৃত হচ্ছে দিন দিন।