×

শেষের পাতা

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ড. ইউনূস আমাদের গর্ব

Icon

কাগজ ডেস্ক

প্রকাশ: ০৯ আগস্ট ২০২৪, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ড. ইউনূস আমাদের গর্ব

ছবি: সংগৃহীত

আমাদের শ্রদ্ধেয় স্যার প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস আজ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন। তিনি আমাদের গ্রামীণ ব্যাংকের অহংকার এবং বাঙালি জাতিরও অহংকার। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর একমাত্র নোবেল বিজয়ী প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস এবং তার প্রতিষ্ঠিত গ্রামীণ ব্যাংক। গ্রামীণ ব্যাংক নিয়ে বিদায়ী সরকার অনেক তীর্যক মন্তব্য করেছেন। আমরা ব্যাংকে থেকেও প্রতিবাদ করতে পারিনি আমাদের লেখনীতে অনেক বাধা ছিল। তার প্রশংসা করলেই শাস্তিমূলক বদলি আশঙ্কা ছিল। এ ভয়ে বিগত ১৫ বছর গ্রামীণ ব্যাংকের এই মহান ব্যক্তিটি নিয়ে লিখতে গিয়ে অনেক সমস্যাও হয়েছে। অথচ এ মহান ব্যক্তিটির অক্লান্ত পরিশ্রমের ফসল কিন্তু প্রাণের গ্রামীণ ব্যাংক। এটা এমনি এমনি প্রতিষ্ঠিত হয়নি, তার পেছনে স্যারের অক্লান্ত পরিশ্রম ছিল। সদস্যদের সাক্ষরতা শিখিয়ে তাকে ঋণ দেয়া, শিক্ষকের মতো ভূমিকা নিয়ে ঋণের মাধ্যমে কীভাবে স্বাবলম্বী করা যায় এবং তাকে কাজে লাগানো যায় সেটা কীভাবে করতে হয় পরম মমতা দিয়ে আমাদের শিখিয়েছেন।

শুরুর ইতিহাস থেকে জানা যায়, দারিদ্র্য বিমোচনের যুদ্ধে তার সঙ্গে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু ছাত্র যোগ দেয়। তিনি তখন অর্থনীতির প্রফেসর ছিলেন। সে সময় ইউনিভার্সিটির পাসের দারিদ্র্যপীড়িত জোবরা গ্রামে গবেষণা প্রকল্প হিসেবে গ্রামীণ ব্যাংক প্রকল্পটি হাতে নেয়া হয়। ছাত্রদের সঙ্গে নিয়ে সারাক্ষণ পড়ে থাকতেন ওই গ্রামে। সাহায্য নয় সহযোগিতা করার এই কর্মযজ্ঞের মন্ত্রে অনুপ্রাণিত করেছিলেন গ্রামবাসীকে। স্বল্প পুঁজিতে হরেক রকমের ব্যবসায় নামালেন গ্রামের ভূমিহীন ও ভিত্তহীনদের। জোবরা গ্রামের অনাবাদি জমিগুলো তেভাগা কর্মসূচির মাধ্যমে চাষাবাদের জন্য আনা হলো। সবাই মন্ত্রমুগ্ধের মতো তার কথা শুনলো এবং সফলতা পেল। প্রত্যেকের পারিবারিক অবস্থারও পরিবর্তন হলো। স্যানেটারি ল্যাট্রিন, গৃহনির্মাণ ঋণ, টিউবওয়েল বসানো, রাস্তাঘাট তৈরির মাধ্যমে সবকিছুর আমুল পরিবর্তন হলো। প্রফেসর ইউনূস তাদের কাছে মহান ব্যক্তি হিসেবে বিবেচিত হলেন।

জোবরা গ্রামের প্রকল্পটি সফলতা পাওয়ার পর টাঙ্গাইলের অজপাড়া গাঁয়ে এ কর্মসূচি স্থানান্তরিত হয়। সেখানেও প্রকল্পটি জনপ্রিয়তা পায়। সাফল্যের সঙ্গে এ প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে ১৯৮৩ সালের অক্টোবর মাসে প্রকল্পের অবয়ব থেকে একটি পৃথক ব্যাংক প্রতিষ্ঠা লাভ করে। তখন ব্যাংকের মালিকানা ৬০ শতাংশ সরকারের হাতে ছিল। আর ৪০ শতাংশ মালিকানা ছিল গ্রামীণ ব্যাংকের সদস্যদের হাতে। তখন অবশ্য এটা সরকারি ব্যাংক ছিল। পরবর্তী সময়ে মালিকানা পরিবর্তন হয়- ২৫ শতাংশ সরকারের আর ৭৫ শতাংশ সদস্যদের। গ্রামীণ ব্যাংক সাধারণত ভূমিহীন ও বিত্তহীনদের ঋণ দেয়। যারা ঋণ নেয় তারাই ১০০ টাকার শেয়ার কিনে মালিকানা পায়। ফলে, এটাকে সদস্যদের

মালিকানা ব্যাংকও বলা হয়। সবচেয়ে মজার ব্যাপার হলো, ব্যাংক পরিচালনা বোর্ডের ১২ সদস্যের মধ্যে ৯ জন গ্রামীণের সদস্যদের মাঝ থেকে এবং বাকি ৩ জন সরকার পক্ষ থেকে নিয়োগ পায়। ব্যাংকের চেয়ারম্যান সাধারণত সরকার নিয়োগ দিয়ে থাকেন। গ্রামীণ ব্যাংক কিন্তু কোনো এনজিও না- এটা একটি বিশেষায়িত ব্যাংক।

বর্তমানে দেশে সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে ৫১টি ব্যাংক আছে। এরা শহর থেকে গ্রামে যেতে চায় না। শহরের চাকচিক্য থেকে ব্যাংকিং কার্যক্রম চালায়। তাছাড়া সরকারি ব্যাংকে দুর্নীতি স্বজনপ্রীতি রাজনৈতিক পেশিশক্তির প্রভাবে সুশাসনের যথেষ্ট অভাব। দালিলিক কাগজপত্রের জটিলতার কারণে কাক্সিক্ষত ঋণ থেকে বঞ্চিত হয়। সেজন্য গ্রামের জনগণ এদের কাছে যেতে পারে না। অন্যদিকে, প্রত্যন্ত গ্রাম অঞ্চলে ভূমিহীন দারিদ্র্য জনগোষ্ঠীকে ব্যাংকিং সুবিধা পৌঁছে দেয়া এবং আর্থসামাজিকতার সঙ্গে সঙ্গে তার যাতে গ্রামীণ অর্থনীতিতে ইতিবাচক ভূমিকা রাখতে পারে নিজেরা যাতে দারিদ্র্যের অভিশাপ থেকে মুক্তি পেতে পারে সেটাই গ্রামীণ ব্যাংকের মূল লক্ষ্য। প্রফেসর ইউনূস স্যারের দর্শন হলো ব্যাংক যাবে ঋণ গ্রহীতার বাড়িতে। অর্থাৎ কর্মীরা ব্যাংকিং সুবিধা তার ঘরে পৌঁছে দেবে। এ কাজগুলো প্রফেসর ইউনূসের সৈনিকরা সততার সঙ্গে করে থাকে বিধায় গ্রামের মানুষের কাছে গ্রামীণ ব্যাংক খুবই জনপ্রিয় এবং আস্থার জায়গা। বর্তমানে সারা দেশব্যাপী এর কার্যক্রম আছে। শাখার সংখ্যা ২৫৬৮টি। আমানতে ব্যালেন্স ২৫ হাজার কোটি টাকা, আদায়যোগ্য ঋণের ব্যালন্স ১৭ হাজার কোটি টাকা। আদায় হার ৯৭%। আাদায়যোগ্য ঋণের তুলনায় আমানতের শতাংশ ১৫৩। গ্রামীণ ব্যাংকের আদলে বিশ্বের ৯৭টি দেশে এর কার্যক্রম চলছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে হয়েছে গ্রামীণ আমেরিকা।

বিশ্বের বহুদেশের গুণীজন সাংবাদিক ছাত্র/ছাত্রী আসে এই গ্রামীণ ব্যাংকের ওপর গবেষণা করতে কিছু শিখতে এবং জানতে। এ গবেষণা কাজের জন্য গ্রামীণ ব্যাংককে নির্ধারিত ফি দিতে হয়। বর্তমানে দেশে গ্রামীণ ব্যাংকের কাজের সফলতা দেখে অনেক সরকারি ও বেসরকারি ব্যাংক ক্ষুদ্র ঋণের কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন, এরাও ভালো সফলতা পাচ্ছেন। বর্তমানে গ্রামীণ ব্যাংকের সদস্য সংখ্যা এক কোটি পাঁচ লাখ। অর্থাৎ ৪ কোটি ২০ লাখ জনগোষ্ঠী গ্রামীণ ব্যাংকের সঙ্গে জড়িত।

ইতিহাসের পাতা থেকে আমরা এটাও জানি, এই উপমহাদেশের আরেক নোবেল বিজয়ী রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ১৯০৫ সালে কালীগ্রাম পরগনায় দরিদ্র গ্রামীণ মানুষকে মহাজনের পীড়ন থেকে রক্ষা করতে সমবায়ী কৃষি ব্যাংক (কালীগ্রাম কৃষি ব্যাংক) স্থাপন করেন। সেখানে সুদের হার ছিল ১২ শতাংশ। তিনি ৮ শতাংশে সুদে টাকা ধার করে ব্যাংকের প্রাথমিক পুঁজি সরবরাহ করতেন। ব্যাংক ভালোই চললো গরিব মানুষ উপকৃত হলো। এর প্রভাবে মহাজনরা ব্যবসা গুটিয়ে নিতে বাধ্য হলো। রবি ঠাকুরের কালীগ্রাম কৃষি ব্যাংক পরবর্তী সময়ে রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক হিসেবে প্রতিষ্ঠা পায়। রবি ঠাকুর কৃষি ব্যাংক করে প্রচুর সমালোচনার মুখোমুখি হয়েছিলেন। কিন্তু তিনি দমে যাননি। রবীন্দ্রনাথের কৃষি ব্যাংক ছিল বাংলাদেশের মধ্যে সীমাবদ্ধ। গ্রামীণের পরিধি বিশ্বব্যাপী। দুই মহান ব্যক্তির মহান সৃষ্টিধারায় বাঙালি জাতি উপকৃত হলেন। ১৯১৩ সালে সাহিত্যের জন্য রবী ঠাকুর নোবেল পেলেন।

অন্যদিকে, একেবারে নি¤œস্তর থেকে অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়ন সাধনে এবং পৃথিবী থেকে ক্ষুধা ও দারিদ্র্য দূরীকরণের জন্য গ্রামীণ ব্যাংকের সাফল্যের স্বীকৃতি স্বরূপ ২০০৬ সালে নরওয়েজিয়ান নোবেল কমিটি অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ও গ্রামীণ ব্যাংককে যৌথভাবে পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ সম্মান নোবেল শান্তি পুরস্কারে ভূষিত করে। নোবেল প্রাপ্তিতে হঠাৎ করে দেশ যেন জেগে উঠল। সারা বাংলাদেশের মিডিয়াতে খবরের শিরোনাম ছিল গ্রামীণ ব্যাংক। কোনো কোনো প্রিন্ট মিডিয়ায় হেড লাইন করতে দেখা গেছে ‘বাংলাদেশ নোবেল পুরস্কার পেয়েছে’। সারাদেশে অসংখ্য ব্যানার পোস্টার ছেয়ে গেল- প্রফেসর ইউনূস স্যারকে অভিনন্দন জানানোর প্রতিযোগিতায়। সবচেয়ে আকর্ষণীয় ব্যাপার ছিল স্কুল-কলেজ থেকে ছাত্র/ছাত্রীরা এসেছিল স্যারকে অভিনন্দন জানাতে। সরকার দলীয় ও বিরোধীদলীয় মন্ত্রী-এমপিরাও এসেছিলেন শুভেচ্ছা জানাতে। আন্তর্জাতিক মিডিয়াগুলো ছিল খবর সংগ্রহে সরব। ধন্য বাংলাদেশ, ধন্য প্রফেসর ইউনূস, ধন্য গ্রামীণ ব্যাংক- সবার মুখে তাই ছিল।

সারা বিশ্ব থেকে প্রশংসা আসতে শুরু করল। ২০১০ সালের ডিসেম্বরে নরওয়ের একটি টেলিভিশন চ্যানেলে গ্রামীণ ব্যাংকের ওপর প্রামাণ্যচিত্র প্রচারের পর থেকে প্রফেসর ইউনূস স্যারকে দেশে না বুঝে হেনস্তা করা শুরু হলো। তখন অনেকেরই সন্দেহ হয় এ কাজটি স্বার্থান্বেষী মহল উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে করিয়েছে। পরবর্তী সময়ে সংবাদ সম্মেলন করে সরকারি পর্যায়ে লোকজন প্রফেসর ইউনূস সম্পর্কে অশালীন ভাষায় আক্রমণ করা শুরু করে। সরকারের উচ্চ পর্যায় থেকে এরকম বক্তব্যে পরিস্থিতি কেমন হয়? তখন আমাদের সদস্য পরিবারের হৃদয়ে যেন মারাত্মক রক্তক্ষরণ হয়েছিল। তখনকার অ্যাটর্নি জেনারেল বলেই ফেললেন, নোবেল পুরস্কার পাওয়ার কথা ছিল শেখ হাসিনা ও সন্তুু লারমার। প্রফেসর ইউনূস পাওয়ার যোগ্য নয়। এদের কেউ কেউ নোবেল পুরস্কার ফিরিয়ে দেয়ার জন্য দাবিও তুললেন। পরবর্তী সময়ে মামলা মোকদ্দমা হলো। প্রফেসর ইউনূসকে নির্দোষ প্রমাণের জন্য আইনের আশ্রয় নিতে হলো। তাকে জোরপূর্বক ব্যাংক থেকে তাড়িয়ে দেয়া হলো।

নোবেল পুরস্কার কোনো ব্যক্তির কৃপায় হয় না। যদি তাই হতো বিশ্বে কি ধনাঢ্য ব্যক্তির অভাব ছিল? যদি সে সুযোগ থাকতো আমাদের দেশে কমপক্ষে ৫০টি নোবেল পুরস্কার আসতো। কিন্তু বাস্তবতা স্বীকার করতে সমস্যা কোথায়? যোগ্য ব্যক্তি হিসেবে প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস ও গ্রামীণ ব্যাংক নোবেল পুরস্কার পেয়েছে। দেশকে নতুন করে সম্মান এনে দিয়েছে। হাসিনা সরকার তা মানতে নারাজ ছিল। আমরা যে পুরস্কার প্রাপ্তির কারণে এক লাফে অনেক ওপরে উঠে গেছি সেটাও তারা বুঝতে পারেনি, দুর্ভাগ্য আমাদের।

প্রফেসর ইউনূস ও গ্রামীণ ব্যাংক নোবেল পুরস্কার পাবে আমরা তা শুনে আসছিলাম ১৯৯৪ সাল থেকে। এটা হঠাৎ করে হয়নি। প্রতি বছরই বিবেচনায় তার নাম আসতো। এরই মধ্যে অনেক আন্তর্জাতিক পুরস্কারও তিনি পেয়েছেন। পাশের দেশ ভারত থেকে প্রফেসর ইউনূস তিনটি সেরা পুরস্কার পেয়েছে। যেমন ইন্দিরা গান্ধী পুরস্কার, মহাত্মা গান্ধী পুরস্কার, বিশ্বভারতী রবীন্দ্রনাথ পুরস্কার। সেটা কি অর্থের বিনিময়ে হয়েছে? আমেরিকার সেরা দুটি পুরস্কারও তিনি পেয়েছেন- প্রেসিডেন্সিয়াল মেডাল অব ফ্রিডম এবং কনগ্রেস গোল্ড মেডাল পুরস্কার। তাছাড়া জাপান, মালয়েশিয়া, সৌদি আরব, ফ্রান্স, ব্রিটেন, জার্মানি, সুইডেন ইতালি, ফিলিপিনস দক্ষিণ কোরিয়াসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে তিনি পুরস্কার পেয়েছেন। বাংলাদেশে তিনি পেয়েছেন স্বাধীনতা পুরস্কার। রাষ্ট্রপতি পুরস্কারও পেয়েছেন। গ্রামীণ ব্যাংকও স্বাধীনতা দিবস পুরস্কার পেয়েছে।

বিশ্বের অনেক দেশেই স্যারের মূল্যবান বক্তব্য শোনার জন্য তাকে নিমন্ত্রণ করা হয়। যারা নিমন্ত্রণ করে তারা বিমানভাড়া থেকে শুরু করে যাবতীয় খরচ বহন করে। তিনি বাংলা ও ইংরেজির সুবক্তাও বটে। কিন্তু আওয়ামী সরকার তা মূল্যায়ন করেনি।

তিনি ভারতের লোকসভার যৌথ অধিবেশনে বক্তব্য রেখেছেন। বছর দুই আগেও আসামের রাজ্যসভায় বক্তব্য রেখেছেন। বার্লিন দেয়াল ধ্বংসের ২০তম বার্ষিকীর অনুষ্ঠানে জার্মানিতে যখন বক্তব্য রাখেন তখন ইউরোপের সব সরকার প্রধান মাথা নিছু করে দাঁড়িয়ে তার বক্তব্য টিকেট কেটে শুনছিলেন। তিনি সারা বিশ্বের সামাজিক ব্যবসারও উদ্যোক্তা। সামাজিক ব্যবসা নিয়ে বিভিন্ন দেশে সম্মেলনও করে যাচ্ছেন।

তিনি অত্যন্ত সাদামাটা জীবনযাপন পছন্দ করেন। যেহেতু গ্রামীণ ব্যাংক গরিবের ব্যাংক; অযথা আমাদের খরচ করতে অনুমতি দেয়নি। তিনি যখন এমডি ছিলেন কাঠের চেয়ারে বসতেন। এ ধারা ম্যানেজার থেকে শুরু করে সবার ক্ষেত্রে অদ্যাবদি চালু আছে।

কিন্তু আওয়ামী লীগের লোকরা তাকে অর্থ পাচারকারী সুদখোর, ঘুষখোর আরো কত কি উপাধি দিতেন। সাবেক অর্থমন্ত্রীও যাচ্ছেতাই মন্তব্য করলেন। এর প্রতিবাদে ফিল্ড পর্যায়ে আমরা মানববন্ধনও করি। সরকার কিছুই তোয়াক্কা না করে অনবরত মিথ্যাচার করে যাচ্ছিল। এমন কি পদ্মা সেতুর ব্যাপারে যাচ্ছেতাই মন্তব্য করেছে।

যে দেশে গুণীজনের সম্মান নেই সে দেশে গুণীজন জন্মায় না। সেটা আমাদের বুঝতে সময় লাগল- সেটাই সবচেয়ে বড় আফসোস। বিগত ১৫ বছর আমরা স্যারকে দেশের কাজে লাগাতে পারিনি। স্যার বলেছিলেন সরকারকে সহযোগিতা করতে চাই; কিন্তু সহযোগিতা না নিয়ে মামলা দিয়ে ব্যস্ত রাখলেন। এতে ক্ষতি কার হলো, অবশ্যই বাংলাদেশের।

গ্রামীণের প্রতিটি কর্মীর হৃদয়ে প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের নাম গেঁথে আছে এবং তা থাকবে আজীবন। কেউ তার সম্মান কেড়ে নিতে পারবে না। স্যার আমাদের শিখিয়েছেন ‘ঋণ আমাদের মৌলিক অধিকার’। প্রযুক্তির পিঠে সওয়ার হয়ে দেশ এগিয়ে যাবে- আমরা এখনো প্রত্যাশা নিয়ে আছি এবং থাকব। আজ দেশের এ ক্রান্তিলগ্নে প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান হওয়ায় আমরা গর্বিত। তার হাতেই আমাদের দেশ সুরক্ষিত থাকবে- গতি হারাবে না প্রিয় মাতৃভূমি। আশা করি, দেশবাসী সবাই মিলে স্যারকে সহযোগিতা করবে। আমরা স্যারের সহকর্মী হিসেবে তার সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করছি।

লেখক : মিজানুর রহমান, প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি, মিডিয়া সেল, গ্রামীণ ব্যাংক।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

এবার নাসির উদ্দিন পাটোয়ারীর নামে মামলা যুবদল নেতা নয়নের

এবার নাসির উদ্দিন পাটোয়ারীর নামে মামলা যুবদল নেতা নয়নের

পিএসসির সামনে অ্যাকশনে সেনাবাহিনী

পিএসসির সামনে অ্যাকশনে সেনাবাহিনী

বিএনপির প্রার্থী তালিকায় নেই যেসব প্রভাবশালী নেতার নাম

বিএনপির প্রার্থী তালিকায় নেই যেসব প্রভাবশালী নেতার নাম

তিন আসনে লড়বেন খালেদা জিয়া, তারেক রহমান একটিতে

তিন আসনে লড়বেন খালেদা জিয়া, তারেক রহমান একটিতে

সব খবর

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App