ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ২০ অঙ্গরাজ্যে মামলা
কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০:৩৭ এএম
ছবি: সংগৃহীত
দক্ষ বিদেশি কর্মীদের যুক্তরাষ্ট্রে আনার এইচ-১বি ভিসা কর্মসূচির ফি অস্বাভাবিকভাবে বাড়ানোর সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে ট্রাম্প প্রশাসনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন ২০টি অঙ্গরাজ্যের প্রধান আইন কর্মকর্তা বা অ্যাটর্নি জেনারেলরা।
মামলার প্রধান বাদি ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যের অ্যাটর্নি জেনারেল রব বনতা এবং ম্যাসাচুসেটস অঙ্গরাজ্যের অ্যাটর্নি জেনারেল জয় ক্যাম্পবেল। তাদের সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন অ্যারিজোনা, কলোরাডো, কানেকটিকাট, ডেলাওয়্যার, হাওয়াই, ইলিনয়েস, মেরিল্যান্ড, মিশিগান, মিনেসোটা, নেভাদা, নর্থ ক্যারোলাইনা, নিউ জার্সি, নিউ ইয়র্ক, ওরিগন, রোড আইল্যান্ড, ভারমন্ট, ওয়াশিংটন ও উইসকনসিন অঙ্গরাজ্যের অ্যাটর্নি জেনারেলরাও। খবর দ্য পলিটিকোর।
মামলার অভিযোগপত্রে প্রধান বাদি রব বনতা বলেন, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নেতৃত্বাধীন প্রশাসন এইচ-১বি ভিসার ফি বাড়িয়ে ১ লাখ ডলার নির্ধারণ করেছে, যা অপ্রয়োজনীয়, অযৌক্তিক ও অবৈধ। এই সিদ্ধান্তের ফলে ভিসার জন্য আবেদন করতে আগ্রহীরা মারাত্মক আর্থিক চাপে পড়ছেন এবং একই সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের শ্রমবাজারে দক্ষ কর্মীর ঘাটতি তৈরি হচ্ছে।
অভিযোগপত্রে আরো বলা হয়, বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম অর্থনৈতিক কেন্দ্র হিসেবে ক্যালিফোর্নিয়া জানে—বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে আসা দক্ষ জনশক্তি যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক অগ্রগতির জন্য কতটা অপরিহার্য।
এইচ-১বি একটি বিশেষ ভিসা কর্মসূচি, যার আওতায় মার্কিন কোম্পানিগুলো অস্থায়ীভাবে দক্ষ বিদেশি কর্মী নিয়োগ দিয়ে থাকে। ২০০৪ সাল থেকে চালু থাকা এই কর্মসূচির মাধ্যমে প্রতিবছর ৮৫ হাজার বিদেশি কর্মী যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ ও কাজের অনুমতি পান।
মূলত বিজ্ঞান, তথ্যপ্রযুক্তি, প্রকৌশল ও ব্যবসায় প্রশাসনে দক্ষ কর্মীদের এই ভিসার আওতায় নিয়োগ দেওয়া হয়। যুক্তরাষ্ট্রের পরিসংখ্যান বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, অ্যামাজন, মাইক্রোসফট, মেটা, অ্যাপল ও গুগলের মতো বড় প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলো এইচ-১বি ভিসা কর্মসূচির সবচেয়ে বড় সুবিধাভোগী। এসব প্রতিষ্ঠানে শত শত বিদেশি কর্মী কাজ করছেন।
এই ভিসার একটি বড় সুবিধা ছিল স্থায়ীভাবে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস ও নাগরিকত্ব পাওয়ার সুযোগ। এইচ-১বি ভিসাধারীরা সহজেই স্থায়ী বসবাসের অনুমতি পেতেন এবং স্থায়ীভাবে বসবাসের অনুমতি পাওয়ার পাঁচ বছর পর নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করার সুযোগও থাকত।
এতদিন এই কর্মসূচির আওতায় নিবন্ধিত কোম্পানিগুলোকে ভিসা ফি বাবদ বছরে ১ হাজার ৫০০ ডলার দিতে হতো। তবে গত সেপ্টেম্বরে ট্রাম্প প্রশাসন হঠাৎ করে এই ফি বাড়িয়ে ১ লাখ ডলার নির্ধারণ করে।
এদিকে বেসরকারি খাতের পাশাপাশি এইচ-১বি ভিসার ফি বৃদ্ধির নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে যুক্তরাষ্ট্রের শিক্ষা ও চিকিৎসা খাতেও। এই দুই খাতে দক্ষ বিদেশি কর্মীদের উল্লেখযোগ্য উপস্থিতি ছিল। কিন্তু ভিসা ফি বেড়ে যাওয়ায় আবেদন উল্লেখযোগ্যভাবে কমে গেছে। সাম্প্রতিক এক জরিপে দেখা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রের ৭৪ শতাংশ স্কুলে স্পেশাল এডুকেশন, ফিজিক্যাল সায়েন্স, বাইলিঙ্গুয়াল এডুকেশন এবং বিদেশি ভাষা শিক্ষার বিভাগে শিক্ষক সংকট দেখা দিয়েছে।
