সাকিবের কুকীর্তি ফাঁস, গুনবেন অর্ধকোটি টাকার জরিমানা

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ১০:২১ এএম
সাকিব আল হাসান ক্রিকেট ক্যারিয়ারের পাশাপাশি নানা সময় বিভিন্ন ব্যবসায় জড়িয়েছেন। রেস্টুরেট, চিংড়ি-কাঁকড়ার ঘের, স্বর্ণ এমনকি শেয়ার বাজারেও নিজের অবস্থান তৈরি করেছেন জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক এই অধিনায়ক। তবে শেয়ার ব্যবসায় বড় রকমের কারসাজির অভিযোগ রয়েছে সাকিবের বিরুদ্ধে।
শেয়ার ব্যবসায় কারসাজির মাধ্যমে ৯০ লাখ টাকা মুনাফা করেছেন সাকিব। তবে এর মাঝে ৫০ লাখ টাকা জরিমানা গুনতে হচ্ছে তাকে ও তার মা শিরিন আকতারকে। বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) গত ২৪ সেপ্টেম্বর এই জরিমানা করে। সম্প্রতি সাকিবের কারসাজির বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করেছে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি। জাতীয় দলের সাবেক এই অধিনায়ক ও তার মায়ের নামে পরিচালিত একটি যৌথ বিও হিসাবে একটি বিমা কোম্পানির শেয়ার কেনাবেচায় কারসাজি করা হয়। পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত এই কোম্পানির নাম প্যারামাউন্ট ইনস্যুরেন্স।
প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, গত বছরের সেপ্টেম্বরে প্যারামাউন্ট ইনস্যুরেন্সের শেয়ার নিয়ে সংঘটিত কারসাজিতে যুক্ত ছিলেন সাকিব আল হাসান। শেয়ারবাজারে যে বিও হিসাব মানে বেনিফিশিয়ারি ওনার্স হিসাব ব্যবহার করে প্যারামাউন্ট ইনস্যুরেন্সের শেয়ার নিয়ে কারসাজি করা হয়, সেটি সাকি ও তার মা শিরিন আকতারের নামে একটি বেসরকারি ব্যাংকের সহযোগী ব্রোকারেজ হাউসে খোলা হয়েছিল।
বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) এক তদন্ত প্রতিবেদনের ভিত্তিতে সাকিব আল হাসান, শেয়ারবাজারের বহুল আলোচিত কারসাজিকারক আবুল খায়ের হিরুসহ কয়েকজন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা করে। মূলত গত বছরের ১৭ আগস্ট থেকে ১৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এক মাসে কোম্পানিটির শেয়ারের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির ঘটনা তদন্ত করে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ। এতে প্যারামাউন্ট ইনস্যুরেন্সের শেয়ার নিয়ে কারসাজির ঘটনায় বেরিয়ে আসে। প্যারামাউন্ট ইনস্যুরেন্সের শেয়ার নিয়ে কারসাজির দায়ে সাকিব ও তার মা শিরিন আকতারসহ সাত ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে ১ কোটি ৬৩ লাখ টাকা জরিমানা করে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ এর তদন্ত ও বিএসইসির প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, সাকিব ও তার মায়ের বেনিফিশিয়ারি ওনার্স হিসাবে মাত্র তিন দিনে প্যারামাউন্ট ইনস্যুরেন্সের ১০ লাখ ৬০ হাজার শেয়ার কেনা হয়। এসব শেয়ারের গড়ে ক্রয়মূল্য ছিল ৬৫ টাকা ২৪ পয়সা। এ জন্য প্রায় ৭ কোটি টাকা বিনিয়োগ করা হয়।
গত বছরের ১২, ১৪ এ ১৭ সেপ্টেম্বর ভিন্ন ভিন্ন দামে এসব শেয়ার কেনা হয়। এর মধ্যে প্রায় ১০ লাখ ২১ হাজার শেয়ার কেনা হয় ১২ ও ১৪ সেপ্টেম্বর। এই দুই দিনে কেনা সব শেয়ারই পাঁচ দিনের ব্যবধানে বিক্রি করে দেন সাকিব। তাতে প্রতি শেয়ারে প্রায় ৯ টাকা করে মুনাফা হয়। সব মিলিয়ে মুনাফা দাঁড়ায় ৯০ লাখ টাকা। এ ছাড়া কোম্পানিটির আরো ৪০ হাজার শেয়ার অবিক্রীত ছিল সাকিবের বিও হিসাবে। তাতে ওই শেয়ারে আনরিয়ালাইজড বা অনর্জিত মুনাফার পরিমাণ ছিল ৪ লাখ টাকা।