সরকার উৎখাতের নীল নকশাকারীদের বিচারের আওতায় আনার দাবি

কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০১ আগস্ট ২০২৪, ১০:৩১ পিএম

শোকাবহ আগস্ট উপলক্ষে খাবার বিতরণ অনুষ্ঠানে যুবলীগ চেয়ারম্যান। ছবি : ভোরের কাগজ
কোমলমতি সন্তানদের কাঁধে ভর করে যারা সরকার উৎখাতের নীল নকশা ও চক্রান্ত করেছিল তাদের বিচারের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন আওয়ামী যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস্ পরশ।
বৃহস্পতিবার (১ আগস্ট) দুপুরে ২৩, বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের উদ্যোগে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিবসহ ১৫ আগস্ট হত্যাকাণ্ডে নিহত সকল শহীদ-স্মরণে কোরআন খতম, দোয়া ও রান্না করা খাবার বিতরণ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
শেখ ফজলে শামস্ পরশ বলেন, হতাহতের ঘটনায় জড়িতদের বিচারের আওতায় আনার জোড় দাবি জানাচ্ছি। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে একটি নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে এই প্রক্রিয়ার সফল সমাধান হবে। আজকে শোকাবহ আগস্ট মাসের প্রথম দিন। এই শোকের সাথে যুক্ত হয়েছে সম্প্রতি হতাহতের বেদনা। এই ধ্বংসলীলা। বাংলাদেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করার অতিগর্হিত অপচেষ্টা; সেই নীল নকশা। এই হত্যাকাণ্ডের সাথে যেই স্বাধীনতাবিরোধী পরাজিত শত্রুরা জড়িত ছিল। সেই শত্রুদের উত্তরসূরীরা আজকের এই আগ্রাসন এবং ধ্বংসলীলা চালাচ্ছে। তাদের ধ্বংসলীলার ধরণ দেখেই বোঝা যায় তারা অতি পরিচিত। যেভাবে রগ কেটে, যেভাবে অগ্নিসংযোগ করে ধ্বংসলীলা চালনো হয়েছিল একাত্তরে, ২০১৩ সালে এবং বিভিন্ন সময় সেই একই ধরণ, একই প্রক্রিয়া এখানেও উপস্থিত।
আরো পড়ুন : সহিংসতায় শিক্ষার্থীদের ঢাল হিসেবে ব্যবহার করেছে জামায়াত-শিবির
তিনি বলেন, অবশেষে আজকে জামাতকে নিষিদ্ধ করার একটি নির্বাহী ঘোষণা আসতে যাচ্ছে। বিভিন্ন সময় বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগসহ বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক এবং রাজনৈতিক সংগঠন এই দাবি করে আসছিল। আপনারা জানেন এই জামাত-শিবিরকে রাজনীতি করার সুযোগ দিয়েছিল ৭৫-এর খুনি জিয়াউর রহমান। খুনি জিয়াউর রহমানের পৃষ্ঠপোষকতা এবং মদদেই এই জামাত-শিবির বাংলাদেশে রাজনীতি করার সুযোগ পায়। আজকে এই ঘোষণা আসার পরে ওরা আবারো মরণ কামর দিতে পারে। আপনাদের এ ব্যাপারে সর্বোচ্চ সর্তকতা অবলম্বন করতে হবে এবং নিঃশর্তভাবে আপনাদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।
আরো পড়ুন : আইনের প্রয়োগ ঘটবে সন্ত্রাসীদের ওপরে, নিরপরাধ শিক্ষার্থীদের ওপর নয় : তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী
সঞ্চালকের বক্তব্যে যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব মো. মাইনুল হোসেন খান নিখিল এমপি বলেন, আপনারা (নেতাকর্মী) দেখেছেন তারা কিভাবে সারাদেশে ধ্বংসলীলা চালিয়েছে। বিশেষ করে ঢাকায় বিভিন্ন সরকারি স্থাপনা তারা ধ্বংস করেছে। তারা সাধারণ শিক্ষার্থী, সাধারণ মানুষ, আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য, সাংবাদিকদের কি নির্মমভাবে হত্যা করেছে। হাজার হাজার নেতা-কর্মী তাদের হামলায় আহত। এ রকম নৃশংস-নির্মম হামলা কোনো সাধারণ শিক্ষার্থীর পক্ষে সম্ভব না। জামাত-শিবিরের ক্যাডাররা সারা বাংলাদেশে এই হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে। ৭১-এর পরাজিত শক্তি, ৭৫-এর পরাজিত শক্তি, সবশক্তি এক সাথে মিলে তারেক জিয়ার নেতৃত্বে এই ধ্বংসলীলা চালানো হয়েছে। বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ প্রাণপণ চেষ্টা করেছে মানুষের জানমালের নিরাপত্তার জন্য। কিন্তু জঙ্গিরা চোরাগুপ্তা হামলা চালিয়ে জনগণের সেবামূলক সকল প্রতিষ্ঠানে হামলা চালিয়েছে। এতে বোঝা যায় তারা একাত্তরের পরাজয়ে শোধ নিয়েছে ২০২৪ সালে এসে।
তিনি আরো বলেন, আসুন আমরা সবাই এক্যবদ্ধ হই। বঙ্গবন্ধুকন্যার নেতৃত্বে যে বাংলাদেশ এগিয়ে চলেছে দুর্বার গতিতে সেই বাংলাদেশকে রুখে দেয়ার জন্য এই অপচেষ্টা। বাংলার মানুষ আজকে সজাগ হয়েছে, তারা বুঝতে পেরেছে এটা কোনো কোটা আন্দোলনকারীর আন্দোলন নয়। কোটা তো সরকার মেনে নিয়েছে। তাহলে এটা কিসের আন্দোলন? এটা হলো দেশধ্বংস করার আন্দোলন। আর এদেরকে প্রতিহত করার জন্য আমরা যুবলীগ রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার নেতৃত্বে রাজপথে আছি, রাজপথে থাকবো, রাজপথে থেকেই সাধারণ মানুষের জানমালের নিরাপত্তা দিয়ে যাবে যুবলীগ।
এসময় উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মো. রফিকুল ইসলাম, মো. হাবিবুর রহমান পবন, ইঞ্জিনিয়ার মৃনাল কান্তি জোদ্দার, তাজউদ্দিন আহমেদ, মো. জসিম মাতুব্বর, মো. আনোয়ার হোসেন, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক সুব্রত পাল, মো. রফিকুল আলম জোয়ার্দার সৈকত, সাংগঠনিক সম্পাদক কাজী মাজহারুল ইসলাম, আবু মনির মো. শহিদুল ইসলাম চৌধুরী রাসেল, মশিউর রহমান চপল, অ্যাড. ড. শামীম আল সাইফুল সোহাগ, প্রচার সম্পাদক জয়দেব নন্দী প্রমুখ।
এরপর সম্প্রতি বিএনপি-জামাত-শিবিরের হামলায় আহত নেতা-কর্মীদের চিকিৎসার খোঁজ-খবর নিতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে যান যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ।