নামেই হাজী, করতেন চুরি
৭২ ঘণ্টায় ক্লুলেস হত্যার রহস্য উদঘাটন

মো. রাজীব চৌধুরী রাজু, নীলফামারী থেকে
প্রকাশ: ১৫ জুলাই ২০২৪, ০৬:৪২ পিএম

ছবি : ভোরের কাগজ
মফিজুল ইসলাম ওরফে হাজী। নামের শেষে হাজী থাকলেও, তিনি এবং তার সহযোগীরা মিলে, যাত্রীবেশে ভ্যানে উঠে ভ্যান চালককে চেতনানাশক ওষুধের মাধ্যমে অচেতন করে চুরি করতো ব্যাটারী চালিত অটোরিক্সা ভ্যান। সম্প্রতি ঘটে যাওয়া ব্যাটারিচালিত ভ্যানচালক আব্দুস সামাদ ওরফে আব্দুল্লাহ (৬০) ক্লুলেস হত্যার মামলার রহস্য উদঘাটনের পর এমন তথ্য দিয়েছে নীলফামারী পুলিশ প্রশাসন।
সোমবার (১৫ জুলাই) দুপুরে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন করে এ তথ্য নিশ্চিত করেন পুলিশ সুপার মোকবুল হোসেন। তিনি জানান, আধুনিক তথ্য ও প্রযুক্তি ব্যবহারসহ পুলিশের নানা কৌশলের মাধ্যমে এ ঘটনায় জড়িত চারজন আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকতদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় একাধিক চুরি ও ছিনতাই মামলাও রয়েছে।
রবিবার (১৪ জুলাই) পুলিশ সুপারের নেতৃত্বে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) আমিরুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মোস্তফা মঞ্জুর, ও নীলফামারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) তানভিরুল ইসলামসহ অন্যান্য পুলিশ সদস্যরা নিরবিচ্ছিন্ন ভাবে এ অভিযান পরিচালনা করে রফিকুল ইসলাম (২৮) ও ফারুক হোসেনকে দিনাজপুর জেলার খানসামা উপজেলার আলোকদিহি গ্রাম থেকে এবং বাবু মিয়া (৩০) ও মফিজুল ইসলাম ওরফে হাজিকে জেলা সদরের কুন্দুপুকুর ইউনিয়নের সুটিপাড়া গ্রাম থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। সেই সঙ্গে হত্যার কাজে ব্যবহৃত চেতনানাশক ঔষুধসহ চুরি যাওয়া অটোচার্জার ভ্যান উদ্ধার করে নীলফামারী থানা পুলিশ।
আরো পড়ুন : পাটক্ষেতে নিয়ে কিশোরীকে ধর্ষণ, যুবক গ্রেফতার
সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার জানান, সদর উপজেলার টুপামারি ইউনিয়নের নিত্যানন্দী বর্মতল গ্রামের পিতা মৃত্যু খট্টু মামুদের ছেলে আব্দু্ল্লাহ ঘটনার দিন গত ৮ জুলাই অজ্ঞাতনামা অজ্ঞানপাটির খপ্পরে পড়েন। গ্রেপ্তার আসামিরা অতিরিক্ত ভাড়া দিয়ে জেলার ডোমার উপজেলার ধরণীগঞ্জ বাজারে নিয়ে যায়। সেখান থেকে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে অভিযুক্ত বাবু মিয়া ও মফিজুল ইসলাম ফ্রুটো জুসের মাধ্যমে চেতনানাশক ঔষুধ খাওয়ায়। এরপর তিনি জ্ঞান হারিয়ে ফেললে অভিযুক্তরা ঘটনাস্থল থেকে ডোমার থানাধীন কলমদার ব্রিজের পশ্চিম পাশে শ্মশান ঘরে অচেতন অবস্থায় ভ্যান চালককে ফেলে তার ভ্যানটি নিয়ে যায়।
সোমবার (৮ জুলাই) দুপুরে পরিবারের লোকজন খবর পেয়ে তাকে উদ্ধার করে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল (রমেক) কে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করায়। একদিন পর (৯ জুলাই) চিকিৎসাধীন অবস্থায় সন্ধ্যার দিকে ভ্যান চালক তার মৃত্যু হয়।
এঘটনায় সদর থানার ওসি বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার পর পুলিশ সুপার, সদর সার্কেল এর নির্দেশে পুলিশের চারটি চৌকস টিম ও জেলা গোয়েন্দা শাখার একটি টিম মাত্র ৭২ ঘণ্টার মধ্যেই ওই ক্লুলেস মামলায় জড়িতদের চিহ্নিত করে গ্রেপ্তার ও চার্জার ভ্যানটি উদ্ধার করতে সক্ষম হয়।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ওসি তানভিরুল ইসলাম বলেন, সোমবার (১৫ জুলাই) বিকেলে আসামিকে আদালতের মাধ্যমে নীলফামারী জেলা কারাগারে পাঠানো হবে এবং রিমান্ড চাওয়ার আবেদন করা হবে।