মানিলন্ডারিং
বিএনপির প্রয়াত নেতা সাকা চৌধুরীর বিরুদ্ধে সাক্ষ্য প্রমাণ পায়নি সিআইডি

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২২ আগস্ট ২০২৫, ০৬:১৭ পিএম

মানবতাবিরোধী অপরাধে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হওয়া বিএনপির প্রয়াত নেতা সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী। ফাইল ছবি
মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে বিএনপির প্রয়াত নেতা সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর (সাকা চৌধুরী) বিরুদ্ধে সাক্ষ্য প্রমাণ পায়নি বাংলাদেশ পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ বা ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্ট (সিআইডি)। ২০১০ সাল মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে তার বিরুদ্ধে ধানমন্ডি ধানায় মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক)। মামলার ১৫ বছর পর সাক্ষ্য প্রমাণ না পেয়ে চলতি বছরের ২৮ এপ্রিল তাকে অব্যাহতির সুপারিশ করে আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন সিআইডির এসআই খালিদ সাইফুল্লাহ।
গত মাসে মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদনে স্বাক্ষর করেন ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত। ডিএমপির প্রসিকিউশন বিভাগের এডিসি (প্রশাসন) মাঈন উদ্দিন চৌধুরী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
চূড়ান্ত প্রতিবেদনে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা খালিদ সাইফুল্লাহ উল্লেখ করেন, মামলাটি তদন্তকালে প্রাপ্ত তথ্য, সাক্ষ্য-প্রমাণ, জব্দকৃত আলামত, সংশ্লিষ্ট কাগজপত্র পর্যালোচনা, গোপন মাধ্যম থেকে পাওয়া সংবাদ ও ঘটনার পারিপার্শ্বিকতায় মামলা সংক্রান্ত সাক্ষীদের জবানবন্দী পর্যালোচনায় প্রতীয়মান হয় ঘটনা সংশ্লিষ্ট ব্যাংক হিসাব এবং শেয়ার ক্রয়-বিক্রয় সংক্রান্ত তথ্য চেয়ে আগের তদন্তকারী কর্মকর্তা ২০১০ সালে হংকং, সিঙ্গাপুর ও যুক্তরাজ্যে এমএলএআর প্রেরণ করেন। হংকংয়ে প্রেরিত এমএলএআরের জবাব এলেও সিঙ্গাপুর ও যুক্তরাজ্যে পাঠানো এমএলএআরের জবাব এখন পর্যন্ত পাওয়া যায়নি।
তিনি জানান, উল্লিখিত এমএলএআরের জবাব পাওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে একাধিকবার তাগিদ দেয়া হলেও জবাব আসেনি। ফলে অভিযুক্ত ব্যক্তির বর্ণিত ব্যাংক হিসাব থেকে ইউএস ডলার ও হংকং ডলার স্থানান্তর হয়েছে কিনা এবং জিডিআর ক্রয় করেছে কিনা সেসব বিষয়ে সঠিক সাক্ষ্য প্রমাণ পাওয়া যায়নি। জব্দকৃত আলামত অভিযুক্ত ব্যক্তির আয়কর নথি পর্যালোচনা করেও মামলার ঘটনা সংশ্লিষ্ট কোনো সঠিক তথ্য উপাত্ত বা সাক্ষ্য প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
তদন্তকারী কর্মকর্তা চূড়ান্ত প্রতিবেদনে আরো উল্লেখ করেন, মামলাটি তদন্তের দীর্ঘদিন অতিবাহিত হয়ে যাওয়ায় অভিযুক্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে বাদীর এজাহারে বর্ণিত মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০০৯-এর ৪(২) ধারার অপরাধের অভিযোগ তদন্তকালে সঠিক সাক্ষ্য প্রমাণ না পাওয়ায় এবং মামলার তদন্তে নতুন কোনো সাক্ষ্য প্রমাণ পাওয়ার সম্ভাবনা না থাকায় বিষয়টি প্রাথমিকভাবে তথ্যগত ভুল মর্মে প্রতীয়মান হয়। এমতাবস্থায় এজাহারনামীয় অভিযুক্ত সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর বিরুদ্ধে মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০০৯ এর ৪(২) ধারার অপরাধ সংক্রান্তে সঠিক তথ্য-উপাত্ত ও সাক্ষ্য প্রমাণ না পাওয়ায় এবং অভিযুক্ত ব্যক্তি জীবিত না থাকায় তাকে ওই মামলার দায় হতে অব্যহতি প্রদানের সুপারিশ করা হলো।
মুক্তিযুদ্ধের সময় সংগঠিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় বিএনপির তৎকালীন স্থায়ী কমিটির সদস্য ও নির্বাচিত সংসদ সদস্য সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীকে ২০১৩ সালের ১ অক্টোবর মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। ২০১৫ সালের ২২ নভেম্বর রাতে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে তার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়।