নির্বাচনে মাঠ প্রশাসনকে নিরপেক্ষ থাকার নির্দেশ

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ১২ অক্টোবর ২০২৫, ০৩:২৩ পিএম

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। ছবি : সংগৃহীত
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী জানিয়েছেন, ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে মাঠ প্রশাসনের কর্মকর্তাদের নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালনের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। জেলা প্রশাসক (ডিসি), পুলিশ সুপার (এসপি), উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও অফিসার ইনচার্জদের (ওসি) নিরপেক্ষভাবে কাজ করার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।
রোববার (১২ অক্টোবর) সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত আইনশৃঙ্খলাসংক্রান্ত কোর কমিটির সভা শেষে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণ করার লক্ষ্যে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের করণীয় বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, নির্বাচন সামনে রেখে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখতে এবং যে কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারী ব্যক্তি বা গোষ্ঠীকে আইনের আওতায় এনে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়েও আলোচনা হয়েছে। নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর সমন্বয়ে একটি স্পষ্ট কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন করা হচ্ছে।
আরো পড়ুন : বৃহত্তর রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্মের উদ্যোগে বৈঠক, আলোচনায় ৯ দল
জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা যেন কোনোভাবেই আইন বহির্ভূত কাজে জড়িত না হন, সে বিষয়ে কঠোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ ভোটকেন্দ্রগুলোতে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন, কার্যকর মনিটরিং ব্যবস্থা এবং পর্যাপ্তসংখ্যক বডি ওর্ন ক্যামেরা ব্যবহারের নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দায়িত্ব পালনকারীদের আসন্ন নির্বাচনে দায়িত্ব না দেওয়ার বিষয়েও আলোচনা হয়েছে। একই সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি রোধে টহল ও গোয়েন্দা নজরদারি জোরদার করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, আসন্ন নির্বাচনে প্রায় দেড় লাখ পুলিশ সদস্যকে নির্বাচনী প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। মোট ২৮টি ব্যাচে তিনদিন মেয়াদি প্রশিক্ষণ সারা দেশের ১৩০টি ভেন্যুতে চলবে। এর মধ্যে একটি ব্যাচের (৬,৫০০ জন) প্রশিক্ষণ শেষ হয়েছে এবং দ্বিতীয় ব্যাচের প্রশিক্ষণ চলছে। সব প্রশিক্ষণ আগামী ১৫ জানুয়ারি ২০২৬ সালের মধ্যে শেষ হবে।
আনসার ও ভিডিপি সদস্যদেরও প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে বলে জানান উপদেষ্টা। তিনি বলেন, দেশজুড়ে আনুমানিক ৪৫ হাজার ভোটকেন্দ্রে প্রতি কেন্দ্রে ১৩ জন করে মোট ৫ লাখ ৮৫ হাজার আনসার-ভিডিপি সদস্য প্রশিক্ষণ পাবেন। এর মধ্যে ১ লাখ ৩৫ হাজার সদস্য অস্ত্রসহ এবং ৪ লাখ ৫০ হাজার সদস্য নিরস্ত্র প্রশিক্ষণ নেবেন।
এছাড়া এবারের নির্বাচনে বিজিবির ১১০০ প্লাটুনে ৩৩ হাজার সদস্য মোতায়েন থাকবে, যাদের ৬০ শতাংশের প্রশিক্ষণ ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। প্রশিক্ষণ ৩১ ডিসেম্বর শেষ হবে। পাশাপাশি প্রায় ৮০ হাজার সশস্ত্র বাহিনীর সদস্য নির্বাচনী নিরাপত্তায় অংশ নেবেন বলেও জানান তিনি।
তিনি বলেন বলেন, ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিল আগের তুলনায় অনেক কমে এসেছে। পার্বত্য চট্টগ্রামের পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। দুর্গাপূজার সময় ফ্যাসিস্টদের নাশকতার প্রচেষ্টা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতায় নস্যাৎ করা সম্ভব হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, মাদকবিরোধী অভিযানে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি গ্রহণ করা হয়েছে। কেবল বাহকদের নয়, মাদকের গডফাদারদেরও চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।