নিষিদ্ধ সংগঠন তেহরিক-ই-তালিবান পাকিস্তানের (টিটিপি) জঙ্গিদের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর কর্মকর্তা মেজর সৈয়দ মোইজ আব্বাস শাহ নিহত হয়েছেন।

এ সময় গুলিবিদ্ধ আরেক সেনা সদস্য ল্যান্সনায়েক জিবরানউল্লাহও নিহত হয়েছেন। প্রসঙ্গত, মেজর আব্বাসই ২০১৯ সালে ভারতীয় বিমানবাহিনীর উইং কমান্ডার অভিনন্দন বর্তমানকে বন্দি করেছিলেন। খবর দ্য ডনের।

২০১৯ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তানের খাইবার-পাখতুনখোয়া প্রদেশের বালাকোট শহরের অদূরে হামলা চালিয়েছিল ভারতীয় বিমানবাহিনীর মিরাজ-২০০০ যুদ্ধবিমান।

জবাবে ২৭ ফেব্রুয়ারি ভারতের আকাশসীমায় ঢুকে পাল্টা হামলা চালায় পাকিস্তানের বিমানবাহিনী। সে সময় পাকিস্তানের হামলাকারী এফ-১৬ বিমানের পিছু ধাওয়া করেন উইং কমান্ডার অভিনন্দন বর্তমান। 

নিজের মিগ-২১ বাইসন যুদ্ধবিমান নিয়ে আকাশসীমা পেরিয়ে ঢুকে পড়েন পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীরে। এর পরে আহত অবস্থায় পাকিস্তান সেনাবাহিনীর হাতে বন্দি হন তিনি।

রক্তাক্ত অভিনন্দনের বিভিন্ন ছবি ও ভিডিও সংবাদমাধ্যম ও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে। প্রায় ৬০ ঘণ্টার টানাপড়েনের পর ১ মার্চ অভিনন্দনকে মুক্তি দেয় পাকিস্তান।

ওয়াঘা সীমান্তে তাকে ভারতীয় কর্তৃপক্ষের হাতে তুলে দেওয়া হয়। পাক সেনাবাহিনীর পক্ষে অভিনন্দনকে বন্দি করার কাজটি করেছিলেন নিহত ওই সেনা কর্মকর্তা আব্বাসই। 

‘ডন’ জানিয়েছে, পাকিস্তান সেনাবাহিনীর কাছে গোপন সূত্রে খবর ছিল যে খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের দক্ষিণ ওয়াজিরিস্তান জেলায় টিটিপির জঙ্গিরা লুকিয়ে রয়েছে। 

সেই খবরে মঙ্গলবার সেখানকার সারারোঘা এলাকায় অভিযান চালায় পাক সেনারা। টিটিপির জঙ্গিদের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হন আব্বাসসহ দু’জন। পাক সেনার গুলিতে ১১ জন টিটিপি জঙ্গিরও মৃত্যু হয়েছে বলে জানানো হয়েছে। 

উল্লেখ্য, খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশে টিটিপির প্রভাব বৃদ্ধি দীর্ঘ দিন ধরেই ইসলামাবাদের মাথাব্যথার কারণ। ২০২২ সালের নভেম্বরে পাকিস্তান সরকারের সঙ্গে শান্তি আলোচনা ভেস্তে যাওয়ার পরে ‘যুদ্ধ’ ঘোষণা করেছিল টিটিপি।

বিদ্রোহী ওই পাশতুন গোষ্ঠীর অভিযোগ ছিল, যুদ্ধবিরতি ভেঙে পাক সেনা এবং সন্ত্রাসদমন দফতরের যৌথবাহিনী অভিযান শুরু করার ফলেই অশান্তি ছড়িয়েছে খাইবার-পাখতুনখোয়ায়।

গত বছরের ২৫ ডিসেম্বর খাইবার-পাখতুনখোয়া প্রদেশ লাগোয়া আফগানিস্তানের পাকতিকা প্রদেশে হামলা চালিয়েছিল পাক যুদ্ধবিমান। 

ইসলামাবাদের দাবি, টিটিপি বিদ্রোহীদের ঘাঁটি লক্ষ্য করে ওই হামলা চালানো হয়েছে। তার পরেও অবশ্য ওই প্রদেশে টিটিপির প্রভাব কমেনি। পাকিস্তানের দাবি, নিষিদ্ধ এই গোষ্ঠীকে মদত দিচ্ছে ভারত। যদিও নয়াদিল্লি এই অভিযোগ খারিজ করে দিয়েছে।