গুমের মামলায় শেখ হাসিনার হয়ে লড়বেন জেডআই খান পান্না
কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ২৩ নভেম্বর ২০২৫, ০১:২৬ পিএম
জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেডআই খান পান্না। ছবি : সংগৃহীত
টিএফআই-জেআইসি সেলে গুম ও নির্যাতনের অভিযোগে মানবতাবিরোধী অপরাধের দুই মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেডআই খান পান্না। একই সঙ্গে পলাতক অন্যান্য আসামির পক্ষেও স্টেট ডিফেন্স নিয়োগ দিয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
রোববার (২৩ নভেম্বর) ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদার এবং সদস্য অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মোহিতুল হক এনাম চৌধুরীর সমন্বয়ে গঠিত দুই সদস্যের বিচারিক প্যানেল এই নিয়োগ দেন।
বেলা সাড়ে ১১টার দিকে গুমের দুই মামলার শুনানি শুরু হয়। প্রসিকিউশনের পক্ষে শুনানি করেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। শুনানি শেষে টিএফআই সেলে গুমের মামলায় ১৭ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের শুনানির তারিখ ৩ ডিসেম্বর নির্ধারণ করা হয়। অপর মামলার ১৩ আসামির বিষয়ে শুনানির তারিখ ঠিক হয় ৭ নভেম্বর।
এর আগে শেখ হাসিনার হয়ে স্টেট ডিফেন্সে লড়তে আবেদন করেন জেডআই খান পান্না। পরে ট্রাইব্যুনাল আবেদন মঞ্জুর করে তাকে নিয়োগ দেয়। একই মামলায় এম হাসান ইমামকেও স্টেট ডিফেন্স হিসেবে নিয়োগ করা হয়।
আরো পড়ুন : গুমের মামলায় সেনা কর্মকর্তাদের ভার্চুয়াল হাজিরার আবেদন
দুই মামলায় বর্তমানে গ্রেপ্তার রয়েছেন ১৩ সেনা কর্মকর্তা। তাদের মধ্যে আছেন র্যাবের সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল তোফায়েল মোস্তফা সারোয়ার, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. কামরুল হাসান, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাহাবুব আলম, ব্রিগেডিয়ার কেএম আজাদ, কর্নেল আবদুল্লাহ আল মোমেন, কর্নেল আনোয়ার লতিফ খান (অবসরকালীন ছুটিতে), লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মশিউর রহমান, লেফটেন্যান্ট কর্নেল সাইফুল ইসলাম সুমন, লেফটেন্যান্ট কর্নেল সারওয়ার বিন কাশেম, ডিজিএফআইয়ের সাবেক পরিচালক মেজর জেনারেল শেখ মো. সরওয়ার হোসেন, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাহবুবুর রহমান সিদ্দিকী ও ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আহমেদ তানভির মাজাহার সিদ্দিকী।
রোববার সকাল ১০টার দিকে কড়া নিরাপত্তায় বিশেষ প্রিজনভ্যানে করে তাদের ট্রাইব্যুনালে আনা হয়। সেনা কর্মকর্তাদের উপস্থিতিকে কেন্দ্র করে ট্রাইব্যুনাল ও সুপ্রিম কোর্ট এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়। পুলিশ, র্যাব ও বিজিবি সদস্যরা মোতায়েন থাকেন, এবং তারা জানান, যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় তারা প্রস্তুত।
গত ২০ নভেম্বর এই দুই মামলার শুনানির দিন ধার্য ছিল, তবে প্রসিকিউশনের আবেদনের পর আজকের দিন ঠিক করা হয়। ২৬ অক্টোবর বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদের নেতৃত্বাধীন প্যানেল এই আদেশ দেন।
এর আগে ২২ অক্টোবর সেনা হেফাজতে থাকা ১৩ কর্মকর্তাকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়। শুনানি শেষে তাদের গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানো হয় এবং পলাতক আসামিদের হাজিরের জন্য সাত দিনের মধ্যে জাতীয় পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের নির্দেশ দেওয়া হয়।
৮ অক্টোবর পৃথক দুই মামলায় ৩০ জনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করে প্রসিকিউশন। টিএফআই সেলে গুমের ঘটনায় শেখ হাসিনাসহ ১৭ জনকে এবং জেআইসি সেলে গুমের ঘটনায় আরো ১৩ জনকে আসামি করা হয়। প্রথম মামলায় গ্রেপ্তার রয়েছেন ১০ সেনা কর্মকর্তা, আর দ্বিতীয় মামলার তিনজন কারাগারে থাকলেও বাকিরা পলাতক।
