বিশ্বজিৎ হত্যা মামলায় আসামি খালাসের রায় স্থগিত চেয়ে আবেদন

কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৬ নভেম্বর ২০১৭, ১১:৫৪ এএম
পুরান ঢাকার বহুল আলোচিত দর্জি বিশ্বজিৎ হত্যা মামলায় হাইকোর্টে খালাসপ্রাপ্ত চার আসামির রায় স্থগিত চেয়ে আবেদন করেছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা। এই মামলায় বিচারিক আদালতের রায়ে মৃত্যুদণ্ড পাওয়া সাইফুল ইসলাম সাইফুল ও কাইয়ূম মিয়া টিপুকে খালাস দেন হাইকোর্ট। আর একই মামলায় যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত গোলাম মোস্তফা ও এ এইচ এম কিবরিয়াকেও খালাস দেওয়া হয়।
এই চারজনের দণ্ড বহাল চেয়ে সোমবার আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতির আদালতে আবেদন করা হয়েছে বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল নজিবুর রহমান।
এর আগে গত ৬ আগস্ট দেওয়া রায়ে বিচারপতি মো. রুহুল কুদ্দুস ও বিচারপতি ভীষ্মদেব চক্রবর্তীর হাইকোর্ট বেঞ্চ দু’জনের মৃত্যুদণ্ডাদেশ বহাল রাখেন।
আদালত ২১ আসামির মধ্যে চারজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও চারজনকে খালাস দেন। পলাতক বাকি ১১ আসামি সম্পর্কে কোনো মন্তব্য করেননি হাইকোর্ট।
এরপর গত ১ নভেম্বর ৮০ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ রায়টি প্রকাশিত হয়। রায় হাতে পাওয়ার পর তা পর্যালোচনা করে এই আবেদন করা হলো বলে জানান নজিবুর রহমান।
উল্লেখ্য, ২০১২ সালের ৯ ডিসেম্বর বিএনপি জোটের অবরোধ কর্মসূচি চলাকালে রাজধানীর পুরান ঢাকার ভিক্টোরিয়া পার্কের সামনে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা প্রকাশ্যে নির্মমভাবে খুন করেন বিশ্বজিৎ দাসকে।
শাখারীবাজারে বিশ্বজিতের টেইলার্স ছিল। তিনি থাকতেন লক্ষ্মীবাজার। তার গ্রামের বাড়ি শরীয়তপুরে।
এ ঘটনায় দায়ের মামলায় ২০১৩ সালের ১৮ ডিসেম্বর আটজনকে মৃত্যুদণ্ড ও ১৩ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন ঢাকার চার নম্বর দ্রুতবিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক এ বি এম নিজামুল হক।
রায়ের এক সপ্তাহের মধ্যে বিশ্বজিৎ হত্যা মামলার ডেথ রেফারেন্স হাইকোর্টে আসে। পাশাপাশি নিম্ন আদালতের দেওয়া মৃত্যুদণ্ডের বিরুদ্ধে আপিল করেন আসামিরা।
ঢাকার চার নম্বর দ্রুতবিচার ট্রাইব্যুনালে যাদের মৃতুদণ্ড দেওয়া হয়েছে তারা হলেন- রফিকুল ইসলাম শাকিল, মাহফুজুর রহমান নাহিদ, এমদাদুল হক এমদাদ, জি এম রাশেদুজ্জামান শাওন, সাইফুল ইসলাম, কাইয়ুম মিঞা টিপু, রাজন তালুকদার এবং মীর মো. নূরে আলম লিমন।
যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- এ এইচ এম কিবরিয়া, ইউনুস আলী, তারিক বিন জোহর তমাল, গোলাম মোস্তফা, আলাউদ্দিন, ওবায়দুর কাদের তাহসিন, ইমরান হোসেন, আজিজুর রহমান, আল-আমিন, রফিকুল ইসলাম, মনিরুল হক পাভেল, মোশাররফ হোসেন ও কামরুল হাসান।
এছাড়া তাদের প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড করা হয়।
বিশ্বজিৎ দাস হত্যা মামলায় ২০১৩ সালের ৫ মার্চ ছাত্রলীগের ২১ কর্মীর বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেন মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। এই ২১ আসামির মধ্যে আটজন কারাগারে এবং বাকিরা পলাতক রয়েছেন।